হাদীস নং ১৪৪২
ইবরাহীম ইবনে মুনযির রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (হজ্জের সফরে) শাজারা নামক পথ দিয়ে গমন করতেন এবং মুআররাস নামক পথ দিয়ে (মদীনায়) প্রবেশ করতেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার দিকে সফর করতেন, মসজিদুশ-শাজারায় সালাত আদায় করতেন ও ফিরার পথে যুল-হুলাইফার বাতনুল-ওয়াদীতে সালাত আদায় করতেন এবং সেখানে সকাল পর্যন্ত রাত যাপন করতেন।
হাদীস নং ১৪৪৩
হুমায়দী রহ……….উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আকীক উপত্যকায় অবস্থানকালে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি : আজ রাতে আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে একজন আগন্তুক আমার নিকট এসে বললেন, আপনি এই বরকতময় উপত্যকায় সালাত আদায় করুন এবং বলুন, (আমার এ ইহরাম) হজ্জের সাথে উমরারও।
হাদীস নং ১৪৪৪
মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, যুল-হুলাইফার (আকীক) উপত্যকায় রাত যাপনকালে তাকে স্বপ্নযোগে বলা হয়, আপনি বরকতময় উপত্যকায় অবস্থান করছেন। (রাবী মূসা ইবনে উকরা রা. বলেন) সালিম রহ. আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে উট বসিয়ে ঐ উট বসাবার স্থানটির সন্ধান চালান, যেখানে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. উট বসিয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর রাত যাপনের স্থানটি সন্ধান করতেন। সে স্থানটি উপত্যকায় মসজিদের নীচু জায়গায় অবতরণকারীদের ও রাস্তার একেবারে মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
হাদীস নং ১৪৪৫
মুহাম্মদ ……..সাফওয়ান ইবনে ইয়ালা রহ. থেকে বর্ণিত যে, ইয়ালা রা. উমর রা. -কে বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর ওহী অবতরণ মুহূর্তটি আমাকে দেখাবেন। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “জি’রানা” নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন, তাঁর সংগে কিছু সংখ্যক সাহাবী ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! কোন ব্যক্তি সুগন্ধিযুক্ত পোশাক পরে উমরার ইহরাম বাঁধলে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি ? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ নীরব রইলেন। এরপর তাঁর নিকট ওহী আসল। উমর রা. ইয়ালা রা.-কে ইঙ্গিত করায় তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। তখন একখণ্ড কাপড় দিয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপর ছায়া করা হয়েছিল, ইয়ালা রা. মাথা পবেশ করিয়ে দেখতে পেলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখমণ্ডল লাল বর্ণ, তিনি সজোরে শ্বাস গ্রহণ করছেন। এরপর সে অবস্থা দূর হল। তিনি বললেন : উমরা সম্পর্কে প্রশ্নকারী কোথায় ? প্রশ্নকারীকে উপস্থিত করা হলে তিনি বললেন : তোমার শরীরের সুগন্ধি তিনবার ধুয়ে ফেল ও জুব্বাটি খুলে ফেল এবং হজ্জে যা করে থাক উমরাতেও তাই কর। (রাবী ইবনে জুরাইজ বলেন) আমি আতা রহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনবার ধোয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি কি উত্তমরূপে পরিষ্কার করা বুঝিয়েছেন ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাই।
হাদীস নং ১৪৪৬
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ……….সাঈদ ইবনে জুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনে উমর রা .(ইহরাম বাঁধা অবস্থায়) যায়তুন তেল ব্যবহার করতেন। (রাবী মানসুর বলেন) এ বিষয় আমি ইবরাহীম রহ.-এর কাছে করলে তিনি বললেন, তাঁর কথায় তোমার কি দরকার ! আমাকে তো আসওয়াদ রহ. আয়িশা রা. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, ইহরাম বাঁধা অবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সিথিতে যে সুগন্ধি তেল চকচক করছিল তা যেন আজও আমি দেখতে পাচ্ছি।
হাদীস নং ১৪৪৭
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………নবী সহধর্মিনী আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইহরাম বাঁধঅর সময় আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গায়ে সুগন্ধি মেখে দিতাম এবং বায়তুল্লাহ তাওয়াফের পূর্বে ইহরাম খোলার সময়ও।
হাদীস নং ১৪৪৮
আসবাগ রহ………আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে চুলে আঠালো দ্রব্য লাগিয়ে ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ করতে শুনেছি।
হাদীস নং ১৪৪৯
আলী ইবনে আবদুল্লাহ ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুল-হুলাইফার মসজিদের নিকট থেকে ইহরাম বেঁধেছেন।
হাদীস নং ১৪৫০
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! মুহরিম ব্যক্তি কি প্রকারের কাপড় পড়বে ? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : সে জামা, পাগড়ী, পায়জামা, টুপি ও মোজা পরিধান করবে না। তবে কারো জুতা না থাকলে সে টাখনুর নিচ পর্যন্ত মোজা কেটে (জুতার ন্যায়) পরবে। তোমরা জাফরান বা ওয়ারস (এক প্রকার খুশবু) রঞ্জিত কোন কাপড় পরবে না। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, মুহরিম ব্যক্তি মাথা ধুতে পারবে। চুল আচড়াবে না, শরীর চুলকাবে না। মাথা ও শরীর থেকে উকুন যমীনে ফেলে দিবে।
হাদীস নং ১৪৫১
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ…….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, আরাফা থেকে মযদালিফা পর্যন্ত একই বাহনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে উসামা ইবনে যায়েদ রা. উপবিষ্ট ছিলেন। এরপর মুযদালিফা থেকে মিনা পর্যন্ত ফযল (ইবনে আব্বাস রা.)-কে তাঁর পিছনে আরোহণ করান। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, তাঁরা উভয়ই বলেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামরা আকাবায় কংকর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করছিলেন।