হাদীস নং ১৩৯৬
সাঈদ ইবনে আবু মারয়াম রহ………আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : বৃষ্টি ও প্রবাহিত পানি দ্বারা সিক্ত উৎপাদিত ফসল বা সেচ ছাড়া উর্বরতার ফলে উৎপন্ন ফসলের উপর উশর ওয়াজিব হয়। আর সেচ দ্বারা উৎপাদিত ফসলের উপর অর্ধ উশর। ইমাম বুখারী রহ. বলেন, এই হাদীসটি প্রথম হাদীসের ব্যাখ্যা স্বরূপ। কেননা, প্রথম হাদীস অর্থাৎ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে উশর বা অর্ধ উশর-এর ক্ষেত্র নির্দিষ্টরূপে বর্ণিত হয়নি। আর এই হাদীসে তার নির্দিষ্ট ক্ষেত্র বর্ণিত হয়েছে। রাবী নির্ভরযোগ্য হলে তাঁর বর্ণনায় অন্য সূত্রের বর্ণনা অপেক্ষা বর্ধিত অংশ থাকলে গ্রহণযোগ্য হয় এবং এ ধরনের বিস্তারিত বর্ণনা অস্পষ্ট বর্ণনার ফয়সালাকারী হয়। যেমন, উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ফাযল ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবাগৃহে সালাত আদায় করেননি। বিলাল রা. বলেন, সালাত আদায় করেছেন। এ ক্ষেত্রে বিলাল রা.-এর বর্ণনা গৃহীত হয়েছে আর ফাযল রা.-এর বর্ণনা গৃহীত হয়নি।
হাদীস নং ১৩৯৭
মুসাদ্দাদ রহ………আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : পাঁচ ওসাক-এর কম উৎপন্ন দ্রব্যের যাকাত নেই এবং পাঁচটির কম উটের যাকাত নেই। এমনিভাবে পাঁচ উকিয়ার কম পরিমাণ রৌপ্যেরও যাকাত নেই।
হাদীস নং ১৩৯৮
উমর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হাসান আসাদী রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খেজুর কাটার মৌসুমে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে (সাদকার) খেজুর আনা হত। অমুকে তার খেজুর নিয়ে আসত, অমুকে এর খেজুর নিয়ে আসত। এভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে খেজুর স্তুপ হয়ে গেল। হাসান ও হুসাইন রা. সে খেজুর নিয়ে খেলতে লাগলেন, তাদের একজন একটি খেজুর নিয়ে তা মুখে দিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন এবং তার মুখ থেকে খেজুর বের করে বললেন, তুমি কি জান না যে, মুহাম্মদের বংশধর (বনু হাশিম) সাদকা খায় না।
হাদীস নং ১৩৯৯
হাজ্জাজ রহ……..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর ব্যবহারযোগ্য না হওয়া পর্যন্ত বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। যখন তাকে ব্যবহারযোগ্যতা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হল, তখন তিনি বললেন: ফল নষ্ট হওয়া থেকে নিরাপদ হওয়া।
হাদীস নং ১৪০০
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফল ব্যবহারযোগ্য না হওয়া পর্যন্ত বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।
হাদীস নং ১৪০১
কুতাইবা রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রং ধরার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এর অর্থ লালচে হওয়া।
হাদীস নং ১৪০২
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করতেন যে, উমর ইবনে খাত্তাব রা. আল্লাহর রাস্তায় তাঁর একটি ঘোড়া সাদকা করেছিলেন। পরে তা বিক্রয় করা হচ্ছে জেনে তিনি নিজেই তা ক্রয় করার ইচ্ছা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে তাঁর মত জানতে চাইলেন। তিনি বললেন : তোমার সাদকা ফিরিয়ে নিবে না। সে নির্দেশের কারণে ইবনে উমর রা.-এর অভ্যাস ছিল নিজের দেওয়া সাদকার বস্তু কিনে ফেললে সেটি সাদকা না করে ছাড়তেন না।
হাদীস নং ১৪০৩
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার একটি ঘোড়া আল্লাহর রাস্তায় দান করলাম। যার কাছে ঘোড়াটি ছিল সে এর হক আদায় করতে পারল না। তখন আমি তা ক্রয় করতে চাইলাম এবং আমার ধারণা ছিল যে, সে সেটি কম মূল্যে বিক্রি করবে। এ সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন : তুমি ক্রয় করবে না এবং তোমার সাদকা ফিরিয়ে নিবে না, সে তা এক দিরহামের বিনিময়ে দিলেও। কেননা, যে ব্যক্তি সাদকা ফিরিয়ে নেয় সে আপন বমি পুনরায় গলাধঃকরণ করে।
হাদীস নং ১৪০৪
আদম রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হাসান ইবনে আলী রা. সাদকার একটি খেজুর নিয়ে মুখে দিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ফেলে দেওয়ার জন্য কাখ কাখ (ওয়াক ওয়াক) বললেন। তারপর বললেন : তুমি কি জান না যে, আমরা সাদকা খাইনা।
হাদীস নং ১৪০৫
সা’ই ইবনে উফাইর রহ……..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মায়মূনা রা. কর্তৃক আযাদকৃত জনৈক দাসীকে সাদকা স্বরূপ প্রদত্ত একটি বকরীকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তোমরা এর চামড়া দিয়ে উপকৃত হও না কেন ? তারা বললেন :এটা তো মৃত। তিনি বললেন : এটা কেবল খাওয়া হারাম করা হয়েছে।
হাদীস নং ১৪০৬
আদম রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বারীরা নাম্নী দাসীকে আযাদ করার উদ্দেশ্যে কিনতে চাইলেন, তার মালিকরা বারীরার ‘ওয়ালা’ (অভিভাবকত্বের অধিকার)-এর শর্ত আরোপ করতে চাইল। আয়িশা রা.(বিষয়টি সম্পর্কে) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উল্লেখ করলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : তুমি তাকে ক্রয় কর। কারণ যে (তাকে) আযাদ করবে ‘ওয়ালা’ তারই। আয়িশা রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একটু গোশত হাজির করা হল। আমি বললাম, এ বারীরাকে সাদকা স্বরূপ দেওয়া হয়েছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বারীরা’র জন্য সাদকা, আর আমাদের জন্য হাদিয়া।