হাদীস নং ১৩৮৪
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……..আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত যে, কিছুসংখ্যক আনসারী সাহাবী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কিছু চাইলে তিনি তাদের দিলেন, পুনরায় তাঁরা চাইলে তিনি তাদের দিলেন। এমনকি তাঁর নিকট যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন : আমার নিকট যে মাল থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার নিকট জমা রাখিনা। তবে, যে যাচনা থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন আর যে পরমুখাপেক্ষী না হয়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে সবর দান করেন। সবরের চাইতে উত্তম ও ব্যাপক কোন নিয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নি।
হাদীস নং ১৩৮৫
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যার হাতে আমার জীবন, সেই সত্তার কসম ! তোমাদের মধ্যে কারো রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করে পিঠে করে বয়ে আনা, কোন লোকের কাছে এসে যাচনা করার চাইতে অনেক ভাল, চাই সে দিক বা না দিক।
হাদীস নং ১৩৮৬
মূসা রহ………..যুবাইর ইবনে আওয়াম রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : তোমাদের মধ্যে কেউ রশি নিয়ে তার পিঠে কাঠের বোঝা বয়ে আনা এবং তা বিক্রি করা, ফলে আল্লাহ তার চেহারাকে (যাচনা করার অপমান থেকে) রক্ষা করেন, তা মানুষের কাছে সাওয়াল করার চাইতে উত্তম, চাই তারা দিক বা না দিক।
হাদীস নং ১৩৮৭
আবদান রহ……….হাকীম ইবনে হিযাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কিছু চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন, আবার চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন, আবার চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন। তারপর বললেন : হে হাকীম, এই সম্পদ শ্যামল সুস্বাদু। যে ব্যক্তি প্রশস্ত অন্তরে (লাভ ছাড়া) তা গ্রহণ করে তার জন্য তা বরকতময় করা হয় । আর যে ব্যক্তি অন্তরের লোভসহ তা গ্রহণ করে তার জন্য তা বরকতময় করা হয় না। যেন সে এমন ব্যক্তির মত, যে খায় কিন্তু তার ক্ষুধা মেটে না। উপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম। হাকীম রা. বলেন, আমি বললাম, যিনি আপনাকে সত্য সহ পাঠিয়েছেন, তাঁর কসম ! ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনার পর মৃত্যু পর্যন্ত (সাওয়াল করে) আমি কাউকে সামান্যতমও ক্ষতিগ্রস্থ করব না। এরপর আবু বকর রা. হাকীম রা.-কে অনুদান গ্রহণের জন্য ডাকতেন, কিন্তু তিনি তাঁর কাছ থেকে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করতেন। তারপর উমর রা. (তাঁর যুগে) তাকে কিছু দেওয়ার জন্য ডাকলেন। তিনি তাঁর কাছ থেকেও কিছু গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। উমর রা. বললেন, মুসলিমগণ ! হাকীম রা. -এর ব্যাপারে আমি তোমাদের সাক্ষী রাখছি। আমি তাঁর কাছে এই গনীমত থেকে তাঁর প্রাপ্য পেশ করেছি, কিন্তু সে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। (সত্য সত্যই) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পর হাকীম মৃত্যু পর্যন্ত কারো নিকট কিছু চেয়ে কাউকে ক্ষতিগ্রস্থ করেননি।
হাদীস নং ১৩৮৮
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উমর রা.-কে বলতে শুনেছি যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কিছু দান করতেন, তখন আমি বলতাম যে, আমার চাইতে বেশী অভাবগ্রস্ত, তাকে দিন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন : তা গ্রহণ কর। যখন তোমার কাছে এসব মালের কিছু আসে অথচ তার প্রতি তোমার অন্তরের লোভ নেই এবং তা গ্রহণ কর। যখন তোমার কাছে এসব মালের কিছু আসে অথচ তার প্রতি তোমার অন্তরের লোভ নেই এবং তার জন্য তুমি যাচনাকারীও নও, তখন তা তুমি গ্রহণ করবে। (এরূপ না হলে তুমি তার প্রতি অন্তর ধাবিত করবে না।
হাদীস নং ১৩৮৯
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি সব সময় মানুষের কাছে চাইতে থাকে, সে কিয়ামতের দিন এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার চেহারায় কোন গোশত থাকবে না। তিনি আরো বলেন : কিয়ামতের দিন সূর্য তাদের অতি কাছে আসবে, এমনকি ঘাম কানের অর্ধেক পর্যন্ত পৌঁছবে। যখন তারা এই অবস্থায় থাকবে, তখন তারা সাহায্য চাইবে আদম আ.-এর কাছে, তারপর মূসা আ.-এর কাছে, তারপর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে। আবদুল্লাহ রহ. লায়স রহ.-এর মাধ্যমে ইবনে আবু জাফর রহ. থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টের মধ্যে ফয়সালা করার জন্য সুপারিশ করবেন। তিনি যেতে যেতে জান্নাতের ফটকের কড়া ধরবেন। সেদিন আল্লাহ তাকে মাকামে মাহমুদে পৌছে দিবেন। হাশরের ময়দানে সমবেত সকলেই তাঁর প্রশংসা করবে। রাবী মুআল্লা রহ……….ইবনে উমার রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যাচনা করা সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ১৩৯০
হাজ্জাজ ইবনে মিনহাল রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সে ব্যক্তি প্রকৃত মিসকীন নয়, যাকে এক দু’ লোকমা ফিরিয়ে দেয় (যথেষ্ট হয়) বরং সে-ই প্রকৃত মিসকীন যার কোন সম্পদ নেই, অথচ সে (চাইতে) লজ্জাবোধ করে অথবা লোকদেরকে আকড়ে ধরে সাওয়াল করে না।