হাদীস নং ১১০৪
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সংগে আট রাকাআত একত্রে যুহর ও আসরের এবং সাত রাকাআত একত্রে মাগরিব-ইশার আদায় করেছি। (তাই সে ক্ষেত্রে যুহর ও মাগরিবের পর সুন্নাত আদায় করা হয়নি)। আমর রহ. বলেন, আমি বললাম, হে আবুশ শা’সা ! আমার ধারণা, তিনি যুহর শেষ ওয়াক্তে এবং আসর প্রথম ওয়াক্তে আর ইশা প্রথম ওয়াক্তে ও মাগরিব শেষ ওয়াক্তে আদায় করেছিলেন। তিনি বলেছেন, আমিও তাই মনে করি।
হাদীস নং ১১০৫
মুসাদ্দাদ রহ………..মুওয়াররিক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনে উমর রা. -কে জিজ্ঞাসা করলাম, আনি কি চাশত-এর সালাত আদায় করে থাকেন ? তিনি বললেন, না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, উমর রা. তা আদায় করতেন কি? তিনি বললেন না। আমি বললাম, আবু বকর রা. ? তিনি বললেন, না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ? তিনি বললেন, আমি তা মনে করি না। (আমার মনে হয় তিনিও তা আদায় করতেন না, তবে এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কিছু বলতে পারছি না)।
হাদীস নং ১১০৬
আদম রহ………..আবদুর রহমান ইবনে আবু লায়লা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উম্মু হানী রা. (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর চাচাত বোন) ব্যতীত অন্য কেউ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে চাশতের সালাত আদায় করতে দেখেছেন, এরূপ আমাদের কাছে কেউ বর্ণনা করেননি। তিনি উম্মে হানী রা. অবশ্য বলেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন (পূর্বাহ্নে) তাঁর ঘরে গিয়ে গোসল করেছেন। (তিনি বলেছেন যে, আমি আর কখনো (তাকে) অনুরূপ সংক্ষিপ্ত সালাত (আদায় করতে) দেখিনি। তবে কিরাআত সংক্ষিপ্ত হলেও তিনি রুকু ও সিজদা পূর্ণাঙ্গরূপে আদায় করছিলেন।
হাদীস নং ১১০৭
আদম রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে চাশত-এর সালাত আদায় করতে আমি দেখিনি। তবে আমি তা আদায় করে থাকি।
হাদীস নং ১১০৮
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার খলীল ও বন্ধু (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজের ওসিয়্যাত (বিশেষ আদেশ) করেছেন, আমৃত্যু তা আমি পরিত্যাগ করব না। (কাজ তিনটি) ১. প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম (পালন করা), ২. সালাতুয-যুহা (চাশত-এর সালাত আদায় করা) এবং ৩. বিতর (সালাত) আদায় করে ঘুমান।
হাদীস নং ১১০৯
আলী ইবনুল জাদ রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক স্থুলদেহী আনসারী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমত আরয করলেন, আমি আপনার সংগে (জামাআতে) সালাত আদায় করতে পারি না। তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদ্দেশ্যে খাবার তৈরী করে তাকে দাওয়াত করে নিজ বাড়ীতে নিয়ে এলেন এবং একটি চাটাইয়ের এক অংশে (কোমল ও পরিচ্ছন্ন করার উদ্দেশ্যে) পানি ছিটিয়ে (তা বিছিয়ে) দিলেন। তখন তিনি (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপরে দু’রাকআত সালাত আদায় করলেন। ইবনে জারূদ রহ. (নিশ্চিত হওয়ার উদ্দেশ্যে) আনাস ইবনে মালিক রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন, (তবে কি) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাশত-এর সালাত আদায় করেছেন ? আনাস রা. বললেন, সেদিন ব্যতীত অন্য সময়ে তাকে এ সালাত আদায় করতে দেখিনি।
হাদীস নং ১১১০
সুলাইমান ইবনে হারব রহ………..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমি দশ রাকাআত সালাত আমার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। যুহরের আগে দু’রাকআত পরে দু’রাকাআত, মাগরিবের পরে দু’রাকাআত তাঁর ঘরে, ইশার পরে দু’রাকাআত তাঁর ঘরে এবং দু’রাকাআত সকালের (ফজরের) সালাতের আগে। ইবনে উমর রা. বলেন,) আর সময়টি ছিল এমন, যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে (সাধারণত) কোন ব্যক্তিকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হত না। তবে উম্মুল মু’মিনীন হাফসা রা. আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, যখন মুআযযিন আযান দিতেন এবং ফজর (সুবহে-সাদিক) উদিত হত তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’রাকাআত সালাত আদায় করতেন।
হাদীস নং ১১১১
মুসাদ্দাদ রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের আগে চার রাকাআত এবং (ফজরের আগে) দু’রাকাআত (কখনো) ছাড়তেন না। ইবনে আবু আদী ও আমর রহ. শুবা রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় ইয়াহইয়া রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ১১১২
আবু মামার রহ………..আবদুল্লাহ মুযানী রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন : তোমরা মাগরিবের (ফরযের) আগে (নফল) সালাত আদায় করবে ; (এ কথাটি তিনি তিনবার ইরশাদ করলেন) লোকেরা আমলকে সুন্নাতের মর্যাদায় গ্রহণ করতে পারে, এ কারণে তৃতীয়বারে তিনি বললেন : এ তার জন্য যে ইচ্ছা করে।
হাদীস নং ১১১৩
আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াযীদ রহ……….মারসাদ ইবনে আবদুল্লাহ ইয়াযানী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উকবা ইবনে জুহানী রা.-এর কাছে গিয়ে তাকে বললাম, আবু তামীম রহ. সম্পর্কে এ কথা বলে কি আমি আপনাকে বিস্মিত করে দিব না যে, তিনি মাগরিবের (ফরয) সালাতের আগে দু’রাকাআত (নফল) সালাত আদায় করে থাকেন। উকবা রা. বলেন, (এতে বিস্মিত হওয়ার কি আছে ?) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সময়ে তো আমরা তা আদায় করতাম। আমি প্রশ্ন করলাম, তাহলে এখন কিসে আপনাকে বিরত রাখছে ? তিনি বললেন, কর্মব্যস্ততা।