হাদিস ২৮৭ – দু’লজ্জাস্থান পরস্পর মিলিত হলে
মু’আয ইবনে ফাযালা রহ. ও আবু নু’আয়ম রহ……আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কেউ স্ত্রীর চার শাখার মাঝে বসে তার সাথে সংগত হলে, গোসল ওয়াজিব হয়ে যায়। আমর রহ. শু’বার সূত্রে এই হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর মূসা রহ. হাসান (বসরী রা.) সূত্রেও অনুরূপ বলেছেন।
আবু আবদুল্লাহ্ রহ. বলেন : এটা উত্তম ও অধিকতর মজবুত। মতভেদের কারণে আমরা অন্য হাদীসটিও বর্ণনা করেছি, গোসল করাই অধিকতর সাবধানতা।
হাদিস ২৮৮ – স্ত্রীর অঙ্গ থেকে কিছু লাগলে ধুয়ে ফেলা
আবু মা’মার রহ……..যায়েদ ইবনে খালিদ আল-জুহানী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি উসমান ইবনে আফফান রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন : স্বামী-স্ত্রী সংগত হলে যদি মনি বের না হয় (তখন কি করবে)? উসমান রা. বললেন : সালাতের উযূর মত উযূ করবে এবং লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে। উসমান রা. বলেন : আমি এটা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। এরপর আলী ইবনে আবু তালিব, যুবাইর ইবনে আওয়াম, তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ্ ও উবাই ইবনে কা’ব রা.-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তাঁরা সবাই ঐ একই জবাব দিয়েছেন। আবু সালামা রা. আবু আয়্যূব রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি (আবু আয়্যূব রা.) এ কথা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন।
হাদিস ২৮৯
মুসাদ্দাদ রহ………উবাই ইবনে কা’ব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন : ইয়া রাসূলুল্লাহ্ ! স্ত্রীর সাথে সংগত হলে যদি বীর্য বের না হয় (তার হুকুম কি)? তিনি বললেন : স্ত্রীর থেকে যা লেগেছে তা ধুয়ে উযূ করবে ও সালাত আদায় করবে। আবু আবদুল্লাহ্ (বুখারী রহ.) বলেন :গোসল করাই শ্রেয় । আর তাই সর্বশেষ হুকুম। আমি এই শেষের হাদীসটি বর্ণনা করেছি মতভেদ থাকার কারণে। কিন্তু পানি (গোসল) অধিক পবিত্রকারী।
হায়য অধ্যায় (২৯০-৩২৬)
হাদিস নং ২৯০
আলী ইবনে আবদুল্লাহ্ রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমরা হজ্জের উদ্দেশ্যেই (মদীনা থেকে বের হলাম। ‘সারিফ’ নামক স্থানে যাওয়ার পর আমার হায়য আসলো। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং বললেন : কি হলো তোমার ? তোমার হায়য এসেছে ? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বললেন : এ তো আল্লাহ্ তা’আলা আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী সব কাজ করে যাও। আয়িশা রা. বলেন : নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের পক্ষ থেকে গাভী কুরবানী করলেন।
হাদিস ২৯১
আবদুল্লাহ্ ইবনে ইউসুফ রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি হায়য অবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাথা আঁচড়িয়ে দিতাম।
হাদিস ২৯২
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ……..উরওয়া রা. থেকে বর্ণিত, তাকে (উরওয়াকে) প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ঋতুবতী স্ত্রী কি স্বামীর খিদমত করতে পারে ? অথবা গোসল ফরয হওয়ার অবস্থায় কি স্ত্রী স্বামীর নিকটবর্তী হতে পারে ? উরওয়া রহ. জওয়াব দিলেন, এ সবই আমার কাছে সহজ। এ ধরণের সকর মহিলাই স্বামীর খিদমত করতে পারে। এ ব্যাপারে কারো অসুবিধা থাকার কথা নয়। আমাকে আয়িশা রা. বলেছেন যে, তিনি হায়যের অবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুল আঁচড়িয়ে দিতেন। আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’তাকিফ অবস্থায় মসজিদ থেকে তাঁর (আয়িশার) হুজরার দিকে তাঁর কাছে মাথাটা বাড়িয়ে দিতেন। তখন তিনি মাথার চুল আঁচড়াতেন অথচ তিনি ছিলেন ঋতুবতী।
হাদিস ২৯৩ – স্ত্রী হায়য অবস্থায় তার কোলে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত করা
আবু নু’আয়ম রহ…….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কোলে হেলান দিয়ে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেন । আর তখন আমি হায়যের অবস্থায় ছিলাম।
হাদিস ২৯৪
মক্কী ইবনে ইবরাহীম রহ……..উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে একই চাদরের নীচে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার হায়য দেখা দিলে আমি চুপি চুপি বেরিয়ে গিয়ে হায়যের কাপড় পরে নিলাম। তিনি বললেন : তোমার কি নিফাস দেখা দিয়েছে? আমি বললাম, হাঁ। তখন তিনি আমাকে ডাকলেন । আমি তাঁর সঙ্গে চাদরের ভেতর শুয়ে পড়লাম।
হাদিস ২৯৫
কাবীসা রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি ও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাবাত অবস্থায় একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করতাম এবং তিনি আমাকে নির্দেশ দিলে আমি ইযার পরে নিতাম, আর আমার হায়য অবস্থায় তিনি আমার সাথে মিশামিশি করে শুইতাম। তাছাড়া তিনি ই’তিকাফ অবস্থায় মাথা বের করে দিতেন , আর আমি হায়য অবস্থায় মাথা ধুয়ে দিতাম।
হাদিস ২৯৬
ইসমাঈল ইবনে খলীল রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমাদের কেউ হায়য অবস্থায় থাকলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে মিশামিশি করতে চাইলে তাকে প্রবল হায়যে ইযার পরার নির্দেশ দিতেন। তারপর তার সাথে মিশামিশি করতেন । তিনি (আয়িশা রা.) বলেন : তোমাদের মধ্যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মত কাম-প্রবৃত্তি দমন করার শক্তি রাখে কে ? খালিদ ও জারীর রহ. আশ-শায়বানী রহ. থেকে এই হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।