খিস্তি করল অসকার। তার হাত চলে গেছে হোলস্টারে। চোখের কোণে ব্যাপারটা লক্ষ করল সলটার। অসকারের হাত ওঠার আগেই হোলস্টারমুক্ত হল সলটারের কোল্ট। অসকারের বুক লক্ষ্য করে ট্রিগার টিপল সে। র্যাঞ্চ মালিকের সাদা শাটার বুক পকেট লাল হয়ে উঠল। গুলি খেয়ে পিছিয়ে গেল অসকার। পিস্তলটা শেষবারের মত ব্যবহার করল সে। ব্যর্থ চেষ্টা। তারপর হাত পা ছড়িয়ে দড়াম করে পড়ে গেল বারান্দার কাঠের মেঝেতে। হাত থেকে ছিটকে পড়ল অস্ত্র। ছুটে এল তানিয়া। নিজেকে ছুঁড়ে দিল সলটারের বুকে। প্রেয়সীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে গিয়ে কাঁধে ব্যথা পেল সলটার। তবে পরোয়া করল না। তানিয়ার মাথার ওপর দিয়ে অসকারের প্রাণহীন দেহটার দিকে চাইল সে। লোকটা অসম্ভব ভুগিয়েছে। ওর বুকে তখন ফুঁপিয়ে চলেছে তানিয়া। প্রেমিকার পিঠে হাত বুলিয়ে দিল সলটার।
আমি কিন্তু সব দেখে ফেলেছি, জোহানের কথায় সংবিৎ ফিরে পেল ওরা। ছিটকে সরে গেল দুদিকে। তারপর দুজনেই দৌড়ে এল জোহানের কাছে। এখনও স্যাডলে শুয়ে রয়েছে সে। ওই অবস্থাতেই ওকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে লাগল সলটার, গালে-কপালে।
তুই না বললি হার্টে গুলি লেগেছে? প্রশ্ন করল সলটার। বিস্ময়ের ঘোর পুরোপুরি কাটেনি তার। স্যাডল থেকে জোহানকে নামাল সে আর তানিয়া।
ঠিকই তো বলেছি, বলল জোহান। হার্ট কোথায় থাকে যেন? বাঁ দিকে না? আমার তো ওদিকেই লেগেছে।
দেখি কোথায় তোর হার্ট, শার্ট খুলে দেখল সলটার।
ওরে গর্দভ, হার্ট এখানে থাকে? কাঁধে লেগে বেরিয়ে গেছে গুলি। তেমন কিছুই হয়নি। আর গাধাটা আমাকে পর্যন্ত বোকা বানিয়ে ছেড়েছে।
তানিয়া আর সলটার দুজনেই হাসতে লাগল। বড় লজ্জা পেয়েছে জোহান। বেশি হেস না, বলল সে। ভুল সবারই হয়।
জোহানের কথায় হাসির দমক বাড়ল ওদের। জোহানকে নিয়ে ঘরে ঢুকল ওরা। ওকে শুইয়ে দিল বিছানায়।
ডাক্তার নিয়ে আসব? প্রশ্ন করল সলটার।
দরকার নেই। কাল সকালে আনলেও চলবে। তাছাড়া গুলি খাওয়া রোগীর চিকিৎসায় আমার অভিজ্ঞতাও কিন্তু কম নয়, চোখ গোল গোল করে বলল তানিয়া।
ওর বলার ধরনে এবার লজ্জা পাওয়ার পালা সলটারের। আমি চলি, দ্রুত বলল সে। স্যাডল ব্ল্যাঙ্কেট ক্রীক-এ যাব।
যাও, বলল তানিয়া। সাবধান থাকবে কিন্তু।
মাথা ঝাঁকিয়ে সায় জানাল সলটার। ঘর থেকে বেরিয়ে এসে রজার হার্পারের খুনীর মৃতদেহ দেখে নিল এক ঝলক। আপন মনেই হাসল সে। তারপর ঘোড়ায় চাপল। লক্ষ্য স্যাডল ব্ল্যাঙ্কেট ক্রীক। ওর হৃদয়টা এ মুহূর্তে দু’টুকরো হয়ে গেছে। একটা টুকরো রয়েছে ওর সঙ্গে, আর অন্যটা তানিয়ার কাছে।