হ্যাঁ। তবে তার আগে জোহানকে পেতে হবে। নইলে বড় কোন বিপদ ঘটে যাবে ওর। সলটারের কাঁধের ব্যথাটা চাগাল আবার।
আজ রাতে কথা বলতে শুনেছি ওদের, বলল ডায়াস, পাশের টেবিলে ছিল ওরা। কোন ব্যাপারে খুব উদ্বিগ্ন ছিল ম্যাকগ্র। আমাকে পর্যন্ত খেয়াল করেনি। হাসল সে। ওরা জানে আমার কানের ক্ষমতা।
কিছু শুনেছ?
ম্যাকগ্রর সঙ্গের দুজন লোক একটা খুনের কথা আলাপ করছিল। আজ কাকে যেন মেরেছে ওরা।
হাওয়ার্থ আর হ্যারিসন। চিনি ওদের। ওদের কথা থাক। ম্যাকগ্র কি বলল?
শহরের বাইরে ওদের পাঠিয়েছে ম্যাকগ্র। কোন একটা শ্যাকে যেন। আরেকজন ছিল। বার কয়েক এসে ম্যাকগ্রর সঙ্গে কথা বলে গেছে সে। তোমার নাম শুনেছি ওদের মুখের তবে কি বলেছে বুঝতে পারিনি। শেষবারের মত ও লোকটা চলে যেতে বসে রইল ম্যাকগ্র। মনে হয় অপেক্ষা করছিল কোন কিছুর জন্যে। ওকে খুব উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল। তারপর খানিক আগে গুলির শব্দ কানে। যেতেই লাফিয়ে উঠল সে। বেরিয়ে গেল। আর ফেরেনি।
এতেই চলবে। বুক পকেট হাতড়ে কখানা রোল করা নোট বার করল সলটার। ডায়াসকে নোটগুলো দিয়ে উঠে পড়ল। বেরিয়ে এল ব্যাট উইং ঠেলে। শেরিফ অপেক্ষা করছিল বাইরে। তাকে খুলে বলল সব কথা।
তবে এক্ষুনি চল, বলল শেরিফ। স্যাডল ব্ল্যাঙ্কেট এ।
জোহান সম্ভবত মারা পড়েছে, সলটার বলল। আজ রাতে চরম পরীক্ষা আমাদের। চল রওনা দিই। আগে শ্যাকে যাব। এখান থেকে দু’মাইল।
সঙ্গে লোক নিয়ে নেব?
না। অত সময় নেই। এখন লোক লাগবে না। আমরা দুজনই যথেষ্ট। আর র্যাঞ্চ ও অপারেশনে বক্স ডব্লিউ-এর সবাইকে তো পাবই।
আস্তাবলে একসঙ্গে গেল ওরা। ঘোড়া নিয়ে বেরিয়ে এল দ্রুত। ক্লান্তিবোধ করছে সলটার। বড় জ্বালাতন করছে জখমটা।
রাতটা বড় নিঝুম। আকাশে মেঘ নেই। অসংখ্য তারা উঠেছে আজ। শেরিফের ঘোড়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে খানিকটা অসুবিধেই হচ্ছে সলটারের। শ্যাকের কাছাকাছি আসার পর লাগাম টেনে ধরল ওরা। উঁচু একটা টিবির ওপর এসে দাঁড়িয়েছে। স্যাডল থেকে নেমে পড়ল সলটার। একটা গাছের কাছে টেনে নিয়ে গেল ঘোড়া। তারপর হেলান দিল গাছের গায়ে।
তুমি ঠিক আছ তো, সলটার? উদ্বিগ্ন গলায় প্রশ্ন করল শেরিফ। যেতে পারবে? ঘোড়া নেয়া কিন্তু উচিত হবে না। ওরা শব্দ শুনে ফেলতে পারে।
হুঁ, বলল সলটার। কপাল থেকে ঘাম ঝাড়ল সে। পা দুটো কাঁপছে ওর। মনে হয় আজ রাতে বড় ভোগাবে। এখানকার কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ করে যেতে হবে স্যাডল ব্ল্যাঙ্কেট ক্রীক। তারপর র্যাঞ্চ ও অভিযান তো বাকিই রয়েছে। টিকতে পারবে তো সে? ঘোড়া দুটো গাছের সঙ্গে বাঁধল শেরিফ। বাঁধা শেষে দুজনে নেমে আসতে লাগল টিবি থেকে।
শ্যাকটা কোথায় জানে দুজনেই। ওখানে পৌঁছনর অনেক আগেই আলো চোখে পড়ল ওদের। একটা জানালায় জ্বলছে। রুক্ষ জমিতে দ্রুত পা চালাতে চেষ্টা করল ওরা। শ্যাক থেকে শ’খানেক গজ দূরে আড়াল নিল। হাঁপাচ্ছে দুজনেই। জখমের কারণে সলটার আর বয়সের ভারে শেরিফ। তবে কথা যখন বলল তখন দৃঢ় শোনাল শেরিফ ম্যাকডারমটের গলা।
তোমার ধারণা এটা রাসলারদের আড্ডাখানা? যদি তাই হয়, তবে যাই করি না কেন বুঝে শুনে করতে হবে।
হ্যাঁ, চল গোপনে ঢুকে পড়ি। কটা ঘোড়া আছে গুনতে হবে। জানালা দিয়েও উঁকি মারব। হাওয়ার্থ আর হ্যারিসন এখানে এসে থাকলে জোহানের বারোটা বাজিয়েছে হয়ত।
শ্যাকের দিকে এগোল ওরা। দুজনের হাতেই পিস্তল। সলটার জরিপ করল চারপাশটা। স্নান আলোয় বুঝতে চাইল গার্ড রয়েছে কিনা। পা টিপে টিপে শ্যাকের এক কোণে চলে এল ওরা। ছায়া পড়েছে এখানটাতে। এ সময় উঠনটা আলোকিত হয়ে উঠল। কর্কশ গলায় কথা বলল কেউ। দড়াম করে বন্ধ হয়ে গেল দরজা। আবার অন্ধকার।
দশ মিনিটের মধ্যে হাওয়া হব আমি। তারপর গুলি করবে ওকে।
শেরিফের হাত শক্ত করে চেপে ধরল সলটারের, ডান কনুই। মাথা ঝাঁকাল সলটার। পরিচিত কণ্ঠস্বর। ম্যাকগ্রর। মুহূর্ত কয়েক বাদেই স্যাডলে চাপল র্যাঞ্চ ও-র ফোরম্যান। বেরিয়ে গেল দ্রুত। দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরল সলটার। কিন্তু পরক্ষণেই বুঝ দিল নিজেকে। ম্যাকগ্রর সঙ্গে পরেও বোঝাপড়া করা যাবে। তারচেয়ে অনেক বড় দায়িত্ব এখন ওর কাঁধে। খানিক বাদেই খুন হবে কেউ। কে হতে পারে মোটামুটি আন্দাজ করতে পারছে সে। কেবিনের দিকে এগোল সে। সঙ্গে শেরিফ।
০৯. শ্যাকের সামনের দিকের এক কোণে
শ্যাকের সামনের দিকের এক কোণে চলে গেল সলটার। তার পাশে শেরিফ। কোণ ঘুরে চলে এল ঘোট একটা জানালার কাছে। পর্দা নেই। উঁকি দিল সে। ঝুলে পড়ল চোয়াল যখন দেখল জোহান বসে রয়েছে ফায়ারপ্লেসের পাশে। হাতে সিক্সগান নিয়ে তার পেছনে দাঁড়ানো হাওয়ার্থ। আরেকজন আছে ঘরে। হ্যারিসন। দম আটকে এল সলটারের। আজ সন্ধ্যায় মার্টিনকে খুন করেছে এরা। এখন তৈরি হচ্ছে জোহানকে খুন করার জন্যে। দরজার দিকে এগোল সে। কিন্তু তার হাত আঁকড়ে ধরল শেরিফ।
জোহান, ডাকল হ্যারিসন। আমরা হুকুমের দাস। ম্যাকগ্রর কথা শুনতে হবে। তোমাকে না মেরে উপায় নেই।
মাটিনকে যেমন মারতে হল, হাওয়ার্থ বলল। হাসল নিষ্ঠুরভাবে। বক্স ডব্লিউর বিরুদ্ধে আজ রাতে যুদ্ধ ঘোষণা করছি আমরা। সকালের আগেই মারা পড়বে সলটার শালা। কার্টলিকে মেরেছে।