আমার মনে হয় ভুল করছ তুমি,সলটার, সতর্ক করল ম্যাকডারমট।
তুমি তোমার কাজ কর। আমার ব্যাপারে না ভাবলেও চলবে, কর্কশভাবে বলল সলটার। হেলগার যেন কোন ক্ষতি না হয়। ওকে আশ্বাস দিয়েছি আমি। আর ম্যাকগ্রকে ধরতে চাইলে রওনা দাও এখুনি। স্যালুন থেকে বেরিয়ে গেলে, পরে খুঁজে বার করতে অসুবিধে হবে।
আমি বরং তোমার সঙ্গে যাই, বলল জো। শ্যাকে গণ্ডগোল বাধলে সাহায্যের দরকার পড়তে পারে।
সাহায্য দরকার পড়বে র্যাঞ্চ ও-তে যাওয়ার সময়। এখন নয়, শান্তস্বরে বলল সলটার। এখন যা বলেছি কর।
ওকে, বলল কাউবয়। র্যাঞ্চে ফিরছি আমি। মাঝরাতের দিকে স্যাডল ব্ল্যাঙ্কেট ক্রীক-এ দেখা হবে।
ওখানে থাকব আমি, বলল সলটার। জোর পিছে পিছে বাইরে বেরিয়ে এল সে। এসময় শেরিফের ডাকে থামতে হল তাকে। চলে গেল জো।
সলটার, আমার সঙ্গে চল তুমি, গম্ভীরস্বরে শেরিফ বলল। তুমি সোজা স্যালুনে ঢুকবে। ম্যাককে বলবে তুমি জেনে গেছ সে তোমার বাবার হত্যাকারী। তারপর দেখি কি করে ও।
বুদ্ধিটা মন্দ নয়, বলল সলটার। শেরিফকে নিয়ে বেরিয়ে এল বাইরে। মৃতদেহের চারপাশ ঘিরে ভিড় জমেছে ততক্ষণে। ওরা হাঁটতে শুরু করতেই কিছু, কৌতূহলী লোক পিছু নিল ওদের।
মাথা ঠাণ্ডা রাখবে, পরামর্শ দিল শেরিফ। গোলাগুলি চাই না আমি। ম্যাকগ্র অপরাধী হলে আমি চাই সে তার দোষ স্বীকার করুক।
আমাকে দেখলেই সম্ভবত ড্র করবে সে, কঠিন শোনাল সলটারের কণ্ঠ।
আমিও নিশ্চয় দাঁড়িয়ে থাকব না তখন।
রাস্তা পেরোল ওরা। নিঃশব্দে। এগিয়ে চলল স্যালুনটার দিকে। চারপাশে চাইল সলটার। অনুমান করতে চেষ্টা করল আরও কোন বিপদ ওঁৎ পেতে রয়েছে। কিনা। হাওয়ার্থ আর হ্যারিসন কি তাদের ফোরম্যানের সঙ্গে রয়েছে? থাকুক, পরোয়া করে না সলটার। ক্রোধে জ্বলছে সে ভেতর ভেতর। বাবার খুনীর সঙ্গে দেখা হবে সামান্য পরেই। মার্টিনকেও খুন করিয়েছে ম্যাকগ্র। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে, খুনীটাকে দেখেও। পারবে তো?
গত শনিবারের সেই গানম্যান কে? তার পরিচয় কি? ম্যাক হেলগাকে বলেছে সেদিনের ব্যাপারে কিছু জানে না সে। মিথ্যে বলবে না ও। সব। পরিকল্পনার কথা মেয়েটিকে জানায় ম্যাকগ্র। কাজেই ও ব্যাপারেও স্বীকার না করার কোন কারণ নেই।
দরজার কাছ থেকে নজর রাখব আমি, বলল শেরিফ। ব্যাট-উইং-এর কাছে পৌঁছে গেছে ওরা। সায় জানাল সলটার। এগিয়ে গিয়ে ডান কাঁধ দিয়ে দরজায় আঘাত করল সে। তারপর সদর্পে ঢুকে পড়ল ভেতরে। চারদিকে চেয়ে ম্যাকগ্রকে খুঁজল সে। যে কোন কিছুর জন্যে মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে।
ম্যাকগ্র নেই। হতাশ হল সলটার। হয়ত র্যাঞ্চে ফিরে গেছে। অপেক্ষা করছে কার্টলির জন্যে। সুখবর নিয়ে আসবে সে। এমনিতেই মার্টিন মারা গেছে; তার ওপর সলটার মারা পড়লে হাঙ্গামা হতে পারে; এই ভেবেই হয়ত শহর ত্যাগ করেছে সে।
একটা বিয়ার অর্ডার দিল সলটার। আরেকবার ভাল করে দেখল স্যালুনটা। টেণ্ডারকে জিজ্ঞেস করল, খানিক আগে ম্যাকগ্র ছিল এখানে, চলে গেছে নাকি?
হ্যাঁ। স্যালুনটা এক ঝলক দেখে নিল টেণ্ডার। কয়েকজন রাইডারকে নিয়ে এখানে ছিল সে। চলৈ গেছে এই তো আধ ঘণ্টার মত হবে। ও বেরোনর পরপরই গুলি হতে শুনলাম। ওর র্যাঞ্চের কে বলে মারা গেছে। তারপর আর ফেরেনি ম্যাকগ্র।
ঘুরে বিয়ার হাতে বারের দিকে এগোল সলটার। এক কোণে পরিচিত এক লোককে বসে থাকতে দেখল। সেদিকে এগোল সে।
কি খবর, ডায়াস, হাসিমুখে বলল সলটার। একটা ড্রিঙ্ক নেবে?
বয়স্ক লোকটি ওকে চিনতে পেরে এগিয়ে এল। শরীরের কাঠামো মজবুত এখনও তবে ঝুলে পড়েছে চামড়া।
কেমন আছ, সলটার? পাল্টা জিজ্ঞেস করল লোকটি। বাপের চেহারা পাচ্ছ দিনকে দিন। শুনলাম গুলি খেয়েছ। তা আছ কেমন এখন?
ভাল, বলল সলটার। ইশারায় এক গ্লাস বিয়ার আনার জন্যে অর্ডার করল টেণ্ডারকে। বসে পড়ল দুজনে। চারদিক একবার জরিপ করে মুখ খুলল, ডায়াস, তুমি তো বাবার বন্ধু ছিলে। বাবার খুনীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি জানই তো। আজ রাতে সে কিন্তু তোমার চোখের সামনেই ছিল।
চোখের সামনে? এখানে? বিস্ময়ে ভূ কোঁচকাল ডায়াস। কে সে?
ম্যাকগ্র। কঠোর শোনাল সলটারের গলা। আবার চাইল চারপাশে। দেখল ব্যাট উইং-এর ওপর দিয়ে উঁকি দিচ্ছে শেরিফ। শুনেছি অনেক গোপন কথা জানা আছে তোমার। সত্যি?
ফাঁকা হাসল লোকটি। কমুহূর্ত সলটারের দিকে চেয়ে থেকে মাথা ঝাঁকাল।
হু, বলল সে। ইদানীং এসব খবর বেচে পেট চালাতে হচ্ছে। বয়স তো আর কম হল না। কাজকর্মে শক্তি পাই না আগের মত। রজার হার্পারকেও সাহায্য করতাম আমি, খবর সরবরাহ করে।
তাই নাকি? অবাক হল সলটার। কখনও শুনিনি তো। যা হোক দশডলার রোজগার করতে চাইলে মুখ খোল। কি হচ্ছে এখানে? গত সপ্তাহে আমাদের গুলি করল কে?
গত সপ্তাহের খুনী র্যাঞ্চ ও-র লোক, বলল বুড়ো। এক ঢিলে দু’পাখি মারতে চেয়েছিল সে। তোমাকে আর শেরিফকে পেয়েও গিয়েছিল এক সঙ্গে।
নাম কি তার?
তা জানি না। ভাড়া করে আনা হয়েছিল তাকে। এতদিনে কোথায় গায়েব হয়ে গেছে কে জানে। এ কাউন্টির লোক নয় সে।
যে কাউন্টিরই হোক, বলল সলটার, আমাকে মারার জন্যে আবারও চেষ্টা চালিয়েছে সে। বক্স ডব্লিউতে গুলি করেছে আমার ওপর।
হতে পারে। এখন কি ম্যাককে খোঁজ করছ?