সেই ভাল। একটা এসপার ওসপার হয়ে যাওয়া দরকার।
হু। ওদের তিনজনের কাছ থেকে কথা বার করতে পারার প্রশ্নই ওঠে না, নিচু গলায় বলল সলটার। চিন্তামগ্ন। ওর দিকে চাইল জো।
তবে?
হেলগা নিশ্চয়ই ম্যাক আর জোহানের কাজ-কারবার সম্বন্ধে জানে, ফ্যাসফেঁসে শোনাল সলটারের গলা। ওর সঙ্গে কথা বলব আমরা।
হেলগা যদি মুখ না খোলে? চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল জো। আমাদের দেখে চেঁচামেচি জুড়ে দিতে পারে।
সেটাই চাই আমি, কঠিন গলায় বলল সলটার। ম্যাকগ্র জানুক হেলগার কাছে গিয়েছি আমরা। যা হওয়ার সামনাসামনি হোক।
সলটার ঘুরে দাঁড়িয়ে আবার রাস্তার মোড়ের দিকে রওনা হল। ওকে অনুসরণ করল জো।
সলটার, ডাকল জো। হেলৰ্গাকে এসবে না জড়ালে হয় না? হাজার হোক, মেয়ে মানুষ।
উপায় নেই, এখন ও-ই ভরসা।
নিচু গলায় খিস্তি করল জো। সলটার চলে গেল কেবিনের কাছে। জানালার পাতলা পর্দা ভেদ করে আলো আসছে। পর্দার ফুটোয় চোখ রাখল সলটার। খাটে বসে ম্যাগাজিন পড়ছে হেলগা।
একাই রয়েছে ও, ফিসফিস করে জোকে বলল সে। বিড়বিড় করে কি যেন বলল জো। বুঝল না সলটার। তুমি বাইরে থাক, লক্ষ রাখবে; ম্যাকগ্রকে দেখলেই সতর্ক করবে আমাকে।
ঠিক আছে, দৃঢ় গলায় বলল জো।
দরজার কাছে গিয়ে বার কয়েক মৃদু আঘাত করল সলটার। চারপাশে সতর্ক দৃষ্টি বোলাল। খুলে গেল দরজা। উঁকি দিল হেলগা।
কি চাও? প্রশ্ন করল সে। কেটে পড়। ম্যাকগ্র আসার আগেই, সলটারের মুখের ওপর দরজা টেনে দিল সে। তবে লাগানর আগেই ডান কাঁধ দিয়ে প্রচণ্ড ধাক্কা দিল সলটার। দড়াম করে খুলে গেল দরজা। ধাক্কার চোটে কয়েক পা পিছিয়ে গেল হেলগা। সলটার শুনতে পেল অন্ধকার কোণ থেকে খিস্তি করল জো।
ভেতরে ঢুকল সলটার। ভেজিয়ে দিল দরজা। কি চাও? ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন করল হেলগা।
তোমাদের মতলবটা কি জানতে চাই, দ্রুত জবাব দিল সলটার। হেলগা প্রতিবাদ করতে যেতেই হাত তুলল সে। ম্যাকগ্রর ব্যাপারে জানি আমি, ভাও দিল সলটার, কাজেই ওর কথা না বললেও চলবে। জোহানকে নিয়ে কি করতে চায় সে?
আমি কি জানি? জোহান শহরে নেই, বলল সে। জানতে না?
আন্দাজ করেছিলাম। কিন্তু নেই কেন? ম্যাকগ্র ওকে কাজে লাগাতে পারেনি?
মানে? তুমি কিছু জান নাকি? উত্তেজনা ধরা পড়ল মেয়েটির কঠে। চোয়াল শক্ত হল সলটারের। জানা থাকলে তো কথাই ছিল না। কিন্তু প্রকাশ করল না। সেটা। হেলগার কাছ থেকে খবর বার করতে হবে, যে ভাবে হোক।
যতটুকু জানি তা তোমাকে জেলে পারার জন্যে যথেষ্ট। কটা বছর থেকে আসবে নাকি?
সব তোমার চাপাবাজি, ফাঁকা হেসে বলল হেলগা।
তবে ভয় পাচ্ছ কেন? জোর করে হাসল সলটার। ভেবেছিলাম তুমি জোহানের বন্ধু। এখন দেখছি তা নয়। ম্যাকগ্রর নির্দেশ পালন করে গেছ শুধু। ওরা যদি জোহানকে খুন করে তবে তার দায় তোমার ঘাড়েও বর্তাবে।
ফ্যাকাসে হয়ে গেল হেলগার মুখ। জেদি মেয়ের মত দুপাশে মাথা নাড়ল। সে।
ম্যাকগ্র কি করবে না করবে সে তার ব্যাপার। আমি সেজন্যে দায়ী হতে যাব কেন?
সব জেনেশুনে চুপ করে থাকলে দায়ী হবে না? বলল সলটার। ম্যাকগ্রর দুজন লোক মার্টিনকে খুন করেছে। আমি র্যাঞ্চে ফিরে খবরটা জানালেই দু’র্যাঞ্চে যুদ্ধ বেধে যাবে। তুমি কি তাই চাও? আমাকে সব খুলে বল। একশ ডলার পাবে।
বেরোও এখান থেকে, চেঁচিয়ে উঠল হেলগা। তোমার যা ইচ্ছে করগে যাও।
ঠিক আছে, যাচ্ছি। তোমার ভালর জন্যেই বলেছিলাম, শ্রাগ করে বলল সলটার। এখন শেরিফকে সব জানানো ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এল সে। মনে আশা এই বুঝি পিছু ডাকবে হেলগা। কিন্তু চুপ। করে রইল মেয়েটি। আশা নিভে গেল সলটারের। তার ধোকায় কাজ হয়নি। দরজাটা ভিড়িয়ে দিয়ে জো এর দিকে কয়েক পা এগিয়েছে কেবল এসময় আচমকা খুলে গেল দরজা।
আমি রাজি। কারও জন্যে জেল খাটব না আমি। তবে কথা রাখতে হবে। তোমাকে। পুরো টাকা চাই।
পাবে, দ্রুত বলল সলটার। আমি চাই এ শহরের একজন লোক নিজের কানে তোমার সব কথা শুনুক।
শেরিফ? প্রশ্ন করল হেলগা। উফ!
প্রমাণ দরকার শেরিফের। আমার নয়। কাজেই ওকে বাদ দেয়া যায় না।
আমি পরিস্থিতির শিকার, তিক্ত কণ্ঠে বলল মেয়েটি। ঠিক আছে, সব। জানাব আমি। তবে ম্যাকগ্রর হাত থেকে আমাকে রক্ষা করার দায়িত্ব তোমার। মনে থাকে যেন।
০৮. হেলগাকে নিয়ে শেরিফের অফিসে
হেলগাকে নিয়ে শেরিফের অফিসের দিকে রওনা দিল সলটার। সঙ্গে জোও রয়েছে। এতক্ষণের উত্তেজনায় ব্যথার কথা ভুলেই গিয়েছিল সলটার। এখন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সেটা।
কী ঘটতে যাচ্ছে জানা নেই ওর। মেয়েটি কতখানি জানে? যতটুকু জানে তাতে ম্যাকগ্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবে শেরিফ?
হেলগা নার্ভাস হয়ে পড়েছে। চাইছে এদিক-ওদিক। পেছন দিকে সতর্ক নজর রেখেছে সলটার। কার্টলির কথা ভোলেনি ও। এখনও শহরে রয়েছে সে। দৃষ্টি রাখছে সলটারের ওপর। তবে একটা ব্যাপারে ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে। সে। কার্টলি শেরিফ রজার হাপারের হত্যাকারী নয়। হত্যাকারীর গলা এবং অবয়ব এ লোকের সঙ্গে মেলে না।
শেরিফের অফিসের দরজার কাছে পৌঁছে দাঁড়াল ওরা। ইশারায় জোকে পেছন থেকে কভার দিতে বলল সলটার। অফিসের সামনের জানালায় আলো জ্বলছে। কিন্তু দরজা খুলতে ব্যর্থ হল সলটার। বন্ধ। অসহিষ্ণুভাবে গুঙিয়ে উঠল হেলগা।