কোর্টে প্রমাণ করা অত সহজ হবে না, ভারী গলায় বলল ম্যাকগ্র।
হাওয়ার্থ, তুমি মার্টিনকে গুলি করেছ?
না, বস।
হ্যারিসন, তুমি?
আমি খুনী নই, বস।
ব্যস। আমি এতেই সন্তুষ্ট। শেরিফ, তুমি কি বল? এদের আটকে রাখার কোন যুক্তি আছে? রাস্তার মোড়ে খুন করে এসে এখানে আবার জোকে গুলি করা এক কথায় অসম্ভব। এরা তো পাখি নয় যে উড়ে আসবে।
ঠিক আছে, ক্লান্ত গলায় বলল শেরিফ। কাল দেখা যাবে। তোমরা দুজন আমার অনুমতি ছাড়া কাউন্টি ছেড়ে নড়বে না। সলটার, তুমি আর জো মাথা ঠাণ্ডা রাখ। আর ঝামেলা বাড়িয়ো না।
সলটারকে জেলে ঢোকানো উচিত, সহজ গলায় বলল ম্যাকগ্র। সে-ই ঝামেলা পাকাচ্ছে।
র্যাঞ্চ ও-র ফোরম্যান তার লোকদের ইঙ্গিত করল। তারা পিছু নিল ওর। সদম্ভে উঠন পেরোল ম্যাকগ্র। অনেক লোক জড়ো হয়েছে গেটে। তারা পথ ছেড়ে দিল ওদের।
দাঁতে দাঁত চাপল সলটার। শুনতে পেল দীর্ঘশ্বাস ফেলল জো। অসহিষ্ণুর মত পায়চারি করতে লাগল শেরিফ।
জো, সব দোষ তোমার, দাঁতের ফাঁকে বলল সলটার। তুমি গুলি না করলে ওরাও করত না। ওদের পিস্তল চেক করতে পারত শেরিফ।
তোমাকে তো বলেছি, গুলি আমি শুরু করিনি, ক্ষোভের সঙ্গে বলল জো।
এক কথা কবার বলব?
রাস্তায় যখন আমি ডেকেছিলাম, তখন যদি থামতে; তবে তোমাদের সঙ্গে আসতাম আমি। ওদের চ্যালেঞ্জও করতে পারতাম। আইন অমান্য করতে সাহস পেত না ওরা। এখন দেখলে তো-
ওদের পালাতে দিতে চাইনি আমরা। দেরি করলে ঠিকই পালাত, সলটার বলল।
পালাত মানে? পালিয়ে তো গেলই। ওদের বিরুদ্ধে আর খুনের চার্জ আনা যাবে না। কোন প্রমাণ নেই। তারচেয়ে চল মার্টিনের লাশ দেখে আসি। যদিও কোন লাভ হবে না তাতে। তোমাদের আর ওদের কথা পরস্পার বিরোধী। মার্টিনকে গুলি করতে দেখেনি কেউ।
তাই বলে দোষ করেও পার পেয়ে যাবে? প্রায় চেঁচিয়ে উঠল জো।
রাগ-ঝাল করে তো আর মার্টিনকে ফিরে পাবে না, বলল ম্যাকডারমট। উঠনের দিকে এগোল। চল, একবার রাস্তার মোড় থেকে ঘুরে আসি।
রাস্তায় বেরিয়ে এল ওরা। ওদের পিছু নিল জনতা। ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে লণ্ঠন নিয়ে হাজির হয়ে গেছে লোকজন। মোড়ে পৌঁছে গেল ওরা। মৃতদেহের চারপাশে খানিকটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে। ভিড় ঠেলে মৃতদেহের একপাশে চলে এল ওরা। উত্তেজিত গলায় আলোচনা করছে লোকে। রাগে গা জ্বলে গেল সলটারের।
তামাশা দেখতে এসেছ? ভাগ এখান থেকে, চিৎকার করে বলে উঠল সে।
ওর ধমকে কাজ হল। চুপ করে গেল সকলে। চারদিকে চাইল একবার শেরিফ।
কেউ খুনের ঘটনাটা দেখেছ? জান কিছু প্রশ্ন করল সে। জানা থাকলে বলে ফেল। ভয়ের কিছু নেই।
তোমার অফিসের দিক থেকে দুজন লোক এদিকে ছুটে এসেছিল, বলল কেউ একজন।
সে সময় তুমি কোথায় ছিলে? প্রশ্ন করল ম্যাকডারমট।
ওই যে ওদিকে, উল্টো দিকে আঙুল দেখাল সে। স্যালুনের দিকে যাচ্ছিলাম আমি। দুটো পিস্তল দিয়ে পেছন দিক থেকে গুলি করেছিল একে। এও পাল্টা গুলি করেছিল কিন্তু টিকতে পারেনি দুজনের বিরুদ্ধে।
পিস্তল দুটো ছিল? জানতে চাইল কৌতূহলী শেরিফ।
লোক ছিল কজন? একজন না দুজন? দুটোই একজনের হাতে ছিল না তো?
না। দুজন লোক। পিস্তল দুটোর ব্যবধান দশ ফুটের মত ছিল। গুলির শব্দ মিলিয়ে যেতেই শুনলাম দুজন লোক ছুটে পালাচ্ছে। লোকটি অর্ধেকখানি ঘুরে অন্ধকার যে রাস্তাটা দেখাল সে রাস্তাতেই রয়েছে হেলগা ডিকসনের কেবিন। তারপর এল এই লোক দুটো। লাশ দেখেই ঘুরে দৌড়াল। কিছুক্ষণ পরে বার্নে গোলাগুলি শুনলাম।
তোমাকে ঠিক এ কথাগুলোই বলেছিলাম আমরা, শেরিফকে উদ্দেশ্য করে বলল সলটার। খুনীরা দেখতে কেমন? লোকটিকে প্রশ্ন করল সে।
দেখতে পাইনি। আলো ছিল না। শুধু ছুটতে দেখেছি।
তোমার নাম? প্রশ্ন করল শেরিফ। স্টেটমেন্ট লাগবে।
কার্ল হুপার, জবাব এল। স্টেজ অফিসে আছি আমি। সারাদিনই পাবে ওখানে।
লোকজন সরে যেতে শুরু করেছে। বুঝে ফেলেছে উত্তেজনা ফুরিয়ে গেছে।
আমাদের কথা বিশ্বাস হল এবার? শেরিফকে জিজ্ঞেস করল সলটার।
অবশ্যই, জবাব দিল সে। কিন্তু এতে প্রমাণিত হয় না যে হাওয়ার্থ আর হ্যারিসন খুনী।
লাশের একটা ব্যবস্থা করতে হয়, কর্কশ কণ্ঠে বলে উঠল কেউ।
সলটার ঘুরে তাকাল। তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফ্রেড। আণ্ডারটেকার।
মাথা ঝাঁকাল সলটার। পাশে দাঁড়ানো অন্য লোকটিকে কার্ট নিয়ে আসতে নির্দেশ দিল ফ্রেড। আর সে নিজে এগিয়ে এল লাশ পরীক্ষা করার জন্যে।
খরচ দেবে বক্স ডব্লিউ, বলল সলটার।
কাজটা কার? প্রশ্ন করল ফ্রেড।
জানি কাদের কিন্তু প্রমাণ করতে পারছি না, জো বলল। তবে, ওদের ছাড়ব আমি।
তুমি তদন্ত কর, শেরিফকে বলল সলটার। চল, জো, র্যাঞ্চে ফিরে যাই। জোহানকে তো পেলাম না। মাঝখান থেকে মার্টিনকে হারালাম। জর্জকে জানাতে হবে সব।
সলটার, ঝামেলা এড়িয়ে চলবে, সে হাঁটা ধরতেই বলল শেরিফ। জবাব দিল না সলটার।
কি ভাবছ, সলটার? খানিকদূর আসার পর প্রশ্ন করল জো। নিশ্চয়ই র্যাঞ্চে ফিরছ না? তোমার নির্দেশ পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে মার্টিন। ওর লাশ মাড়িয়ে ফিরর না কিছুতেই।
প্রশ্নই ওঠে না। শেরিফকে শোনালাম কেবল।
তবে এত কি ভাবছ?
হাওয়ার্থ আর হ্যারিসন ম্যাকগ্রর সঙ্গে বেরিয়ে গেছে। ঘোড়া নেয়নি। আমার ধারণা শহরেই রয়েছে ওরা তিনজন। সুযোগের অপেক্ষা করছে। চরম কিছু ঘটাতে চায়।