দুঃখ পেয়েছ মনে হয়, বিদ্রূপ করল সলটার। আমার লোককে হুমকি দিচ্ছ কেন?
ও এখানে আড়ি পেতেছিল।
তাতে ক্ষতি কিসের? দ্রুত প্রশ্ন করল মার্টিন। জো তোমাদের কথা শুনে ফেলেছে? অসুবিধে কি? তোমরা নিশ্চয়ই ষড়যন্ত্র করছিলে না।
হ্যাণ্ডগান ফেলে দাও, লোক দুটোর পেছন থেকে বলল জো।
বাদ দাও, জো, বলল সলটার। দরজা ছেড়ে দাঁড়াল সে। লোক দুজনকে চলে যেতে ইঙ্গিত করল। দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে উঠন পেরোল ওরা। তারপর রাস্তায় পৌঁছে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেল।
মুশকিলে ফেলে দিলে, জো, বলল সলটার, ওরা এরপর তৈরি হয়ে থাকবে।
তৈরি ওরা হয়েই রয়েছে। ম্যাকগ্রর কথাতে, বোঝনি? শান্ত অথচ জোরালভাবে কথাগুলো বলল মার্টিন। আমাদের কাজ এখন জোহাকে খুঁজে বার করা।
ঠিক, ঘুরল সলটার। এই লোক দুটো এক্ষুণি গিয়ে ম্যাকগ্রকে সব জানাবে। আমাদের কথা জেনে যাবে ম্যাকগ্র। আচ্ছা, জো, তুমি তো আলাদা হয়ে গিয়েছিলে, জোহানকে দেখেছ?
না, এবার কোথায় লুকিয়েছে কে জানে।
ম্যাকগ্রও হন্যে হয়ে খুঁজছে তাকে। কেন কে জানে, চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল মার্টিন। সলটারের পিছু পিছু বেরিয়ে এল বার্ন থেকে।
মেইন রোডে আবছা অন্ধকার। র্যাঞ্চ ও-র লোক দুটোকে দেখা গেল না কোথাও! স্যালুনগুলো পেরনর সময় জোহানকে আরেকবার করে খুঁজে গেল সলটার। নেই। খুব সম্ভব র্যাঞ্চে ফিরে গেছে সে। তবে পরক্ষণেই বুঝল এটা কষ্ট কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়। জোহানের জন্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছেই তার।
মার্টিন, বলল সে। তুমি হেলগার কেবিনে ফিরে যাও। লোক দুটো ম্যাককে কি বলে লুকিয়ে শোনার চেষ্টা করবে। জো, তুমি ফলো কর আমাকে। রওনা দিল মাটিন। রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে গেল সে।
জোকে নিয়ে হাঁটা ধরল সলটার। ম্যাকগ্রর কথা ভাবছে সে। নতুন কি ফন্দি আঁটছে র্যাঞ্চ ও-র ফোরম্যান? কার্টলি নামের এক লোক এ মুহূর্তে রয় সলটারের খোঁজ করছে শহরে। কেন?
শেরিফের অফিসের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ভেতরে চাইল সলটার। ডেস্কে বসে রয়েছে ম্যাকডারমট। দেখে মনে হল চিন্তামগ্ন।
খানিক দূর যেতেই এক লোককে হেঁটে আসতে দেখা গেল ওদের দিকে। লোকটা থেমে দাঁড়িয়ে উঁকি দিল একটা স্যালুনে। বেঁটে-খাটো গড়ন। মার্টিন নয়। ম্যাকগ্রর সেই চর নয় তো?
যে লোকটা এদিকে আসছে, জোকে বলল সলটার, মনে হয় ম্যাকগ্রর লোক সে। আমাকে খুঁজছে।
অস্ফুটে কিছু বলল জো। তারপর ফুটপাথের দিকে সরে গেল। আগুয়ান লোকটাকে এখন তাদের দুজনের মাঝ দিয়ে পেরোতে হবে। ধীর পদক্ষেপে হাঁটতে লাগল ওরা। লোকটা এসময় দেখে ফেলল ওদের। চিনতে চেষ্টা করল। রাস্তার আলো পড়েছে সলটারের মুখে। আগন্তুকের চেহারাও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে এখন। এই লোকই ম্যাকগ্রর সঙ্গে আস্তাবলের উঠনে গিয়েছিল। অবয়ব দেখে চিনতে পারল সলটার।
তুমি রয় সলটার না? ফুটপাথে দাঁড়িয়ে পড়েছে লোকটা। জোর দিকে একবার তাকিয়েই চোখ ফেরাল সলটারের চোখে।
হ্যাঁ, কিন্তু তোমাকে তো চিনলাম না, হোলস্টারে হাত চলে গেল সলটারের। র্যাঞ্চ ও-তে বেশ কজন নতুন লোক নেয়া হয়েছে। এ লোকটা তাদের একজন।
এ কাউন্টিতে নতুন এসেছি আমি। তবে গত সপ্তাহের ঘটনা শুনেছি। তোমাকে সুস্থ দেখে ভাল লাগছে। বেচারা রজার হার্পার! খুব ভাল লোক ছিল নাকি
ঠিকই শুনেছ, কর্কশ কণ্ঠে বলল জো।
এ কাউন্টিতে বড় গোলমাল, তাই না?
সবে তো শুরু, সলটার বলল। জোহানকে দেখেছ এদিকে কোথাও?
না, দ্রুত জবাব এল। চলি। ফুটপাথ ধরে এগোল লোকটা।
নতুন লোক হিসেবে বড় বেশি জার্নে ব্যাটা, জো মন্তব্য করল।
কিছু একটা বলার জন্যে মুখ খুলেছিল জো। কিন্তু বলা আর হল না। হঠাৎ গুলির শব্দে কেঁপে উঠল ওরা। পরপর কয়েকটা গুলি হল। তবে ধারে কাছে এল ওদের। মাজল লাইটের লালচে শিখা চোখে পড়ল সলটারের। মাথা নিচু করে দ্রুত পা চালাল সেদিকে। মার্টিনের জন্যে চিন্তা হচ্ছে। সে রয়েছে ওদিকটাতেই। জোর মাথাতেও একই চিন্তা। অসুস্থ সলটারকে পিছনে ফেলে রেখেই এগিয়ে গেল সে।
০৭. চিৎকার করে ডাকল সলটার
জো, দাঁড়াও, প্রায় চিৎকার করে ডাকল সলটার। জোর নাগাল পাওয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করল ও। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কাঁধের ব্যথাটা চেগিয়ে উঠল। জো ততক্ষণে মিলিয়ে গেছে চোখের সামনে থেকে। এপথ ধরেই হেলগার কেবিনের কাছে গিয়েছিল মার্টিন। সম্ভবত র্যাঞ্চ ও-র লোকেরা দেখে ফেলেছে ওকে। তারপরই এই গুলির ঘটনা ঘটেছে।
মোড়ে পৌঁছে সলটার দেখল জো ঝুঁকে পড়েছে একটা পতিত শরীরের ওপর। সলটারের বা কাঁধটা দপদপ করছে। সেখানটায় হাত চাপা দিল সে।
মাটিন? ঢোক গিলে প্রশ্ন করল সলটার।
হ্যাঁ, ফাঁসফেঁসে শোনাল জোর কণ্ঠ। সিধে হল সে। মারা গেছে।
বার্ন, কোনমতে বলল সলটার। র্যাঞ্চও-র লোক দুটো একাজ করে থাকলে ঘোড়ার জন্যে আস্তাবলে গেছে। পালাবে। শিগগির চল।
কথা কটা বলেই ঘুরে দৌড় শুরু করল সলটার। প্রাণপণে। ব্যথার পরোয়া করল না। মুহূর্ত পরেই ওকে রেসের ঘোড়ার মত অতিক্রম করে গেল জো। তার ডান হাতে শক্ত করে ধরা রয়েছে বিশাল সিক্সগান।
গুলির কারণ জানার জন্যে বেরিয়ে এসেছিল অনেকে। ওদের দুজনকে ঊধ্বশ্বাসে ছুটতে দেখে লাফিয়ে সরে গেল তারা।
দাড়াও, চেঁচিয়ে নির্দেশ দিল কে যেন। নইলে গুলি করব।