সলটার। রাসলাররা স্থানীয় লোক, এ ধারণা তোমার এখনও রয়েছে?
অবশ্যই। অসহিষ্ণুভাবে বলল সলটার। দয়া করে আমার কথা শোন। প্রথমেই যদি শুনতে তবে সকলেরই ভাল হত। পুরো কাউন্টি তো খুঁজেছ তোমরা, তাই না?
হ্যাঁ। কিন্তু রাসলারদের চিহ্ন পাইনি কোথাও, দ্রুত বলল জর্জ। জোহান আর তানিয়াকে এ সময় দেখা গেল দরজায়। ভেতরে যাও, ওদের দেখে ধমকাল জর্জ। মরার শখ হয়েছে?
হাসি চাপল সলটার। জর্জের ধমকে জোর আছে। সুড়সুড় করে ভেতরে চলে গেল দু’ভাই-বোন। আবার ওর দিকে ফিরল জর্জ।
তোমার ধারণা কি? প্রশ্ন করল জর্জ। তোমার সিদ্ধান্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক হয়। স্বীকার করতে দোষ নেই।
সিদ্ধান্ত নয়, সন্দেহ বলতে পার, বলল সলটার। রসলারদের খোঁজ মেলেনি এবং তারা এ কাউন্টি ছেড়েও যায়নি। কাজেই নিশ্চয় স্থানীয় লোকজন এর সঙ্গে জড়িত। আমার ধারণা তারা আশপাশের র্যাঞ্চেই আছে। এবং তারাও রাসলারদের খোজার ভান করছে। মুখ দেখে তো আর বোঝার উপায় নেই কে রাসলার, যদি না গরু সহ ধরা পড়ে।
তোমার কথা হয়ত সত্যি, ভারী গলায় বলল জর্জ। ওরা কোন র্যাঞ্চের লোক সেটা তো বললে না। বাইরে উঠনের দিকে চাইল জর্জ। তার র্যাঞ্চের লোকজনেরা রয়েছে ওখানে। আমাদের লোকেরা নয় তো?
না, আমি বিশ্বাস করি না। তবে যদি হয় সেটা নেহাত দুর্ভাগ্য। যা হোক কোন্ পথে গরু তাড়িয়ে নেয়া হয় সেটা বল।
সবগুলো ট্র্যাক চলে গেছে রেড রিজ কান্ট্রির দিকে, যেখানে তোমরা গুলি খেয়েছ।
রেড রিজ যেখান থেকে শুরু অসকারের র্যাঞ্চ সেখানেই শেষ।
তুমি বলতে চাও এই রাসলিং-এর পেছনে অসকারের হাত আছে? জর্জের কণ্ঠে বিস্ময় আর অবিশ্বাস।
আমি তা বলছি না। অসকার বেশিদিন হয়নি এসেছে এখানে। ওর পক্ষে এরকম একটা পরিকল্পনা করা এত সহজ নয়। আমি বলছি ম্যাকার কথা। র্যাঞ্চ। ‘ও’-র মালিক বলতে গেলে সে-ই। অন্তত ওর কাজ-কর্মে তাই মনে হয়। শনিবার। বিকেলে ওর সঙ্গে শহরে গোলমাল হল আমার। ক’ঘণ্টা পরেই গুলি খেলাম আমি, আর শেরিফ মারা গেল।
যে লোক গুলি করেছে সে ম্যাকগ্র নয়। তুমিই বলেছ।
আমি আমার সন্দেহের কথা বলছি। ম্যাকগ্র ভাল লোক নয়, সে তুমি ভালই জান। ওর স্বভাব এমন যে সহকর্মীদের বুকে অস্ত্র ধরতেও দ্বিধা করবে না। আমার বাবার হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ও নিশ্চয়ই কিছু জানে।
মাথা ঠাণ্ডা কর, সলটার। আসলে ম্যাকগ্রর প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ রয়েছে তোমার। তুমি ধরেই নিচ্ছ ফোরম্যান হওয়ার জন্যে তোমার বাবাকে খুন করেছে
সেটা কি একেবারেই অসম্ভব?
না। ওর সত্যিই ইচ্ছে ছিল ফোরম্যান হওয়ার। তোমাকে ফোরম্যান করায় প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিল সে। তোমার বাবার খুনের ব্যাপারে ওকে যদি সন্দেহ করিও তবু রাসলিং-এর সঙ্গে ও জড়িত রয়েছে সেটা ভাবতে পারছি না আমি।
পারবে।
কিভাবে?
ফাঁদ পাতব আমরা। দেখি ও ধরা দেয় কিনা।
খুলে বল।
সময় হলে বলব, জবাব দিল সলটার। আমার ধারণা ভুল নয়। এইমাত্র যে গোলাগুলি হয়ে গেল এটা কোন সাধারণ রাসলারের কাজ হতে পারে না।
সে তুমি জান, বলল জর্জ। ওর কথায় অসন্তুষ্ট। ওরা ফিরে এসেছে।
উঠে দাঁড়াল সলটার। চেয়ে দেখল তিনজন অশ্বারোহী ফিরে আসছে। সাথে বাড়তি ঘোড়া নেই। তারমানে গানম্যান ধরা পড়েনি। পালিয়েছে। জো লাথি মারল ঘোড়ার পেটে বারান্দার কাছে চলে এল ঘোড়া।
কপাল খারাপ, বস্, হতাশ ভঙ্গিতে বলল সে। শালা পালিয়েছে। খুব বেশি ক্ষতি হয়েছে নাকি?
না। তেমন কিছু না। একটা জানালা ভেঙেছে কেবল, জবাব দিল সলটার।
ধন্যবাদ, জো।
আমরা ঘোড়ায় চেপে পাহারার কথা ভাবছিলাম, বলল জো।
দরকার নেই, বলল জর্জ। তবে কাউবয়দের বল গোটা কয়েক ঘোড়ায় স্যাডল পরিয়ে তৈরি রাখতে। যে কোন সময় দরকার পড়তে পারে। নিজেরাও সতর্ক থাকবে।
অবশ্যই, দৃঢ়স্বরে বলল জো। ঘোড়ার মুখ ঘুরিয়ে চলে গেল সে।
ভেতরে এস। বাইরে থাকা ঠিক নয়, সলটারকে বলল জর্জ। মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিল সলটার। ধীরে ধীরে এগোল দরজার দিকে।
তানিয়া রয়েছে রান্নাঘরে। দুপুরের খাবার তৈরিতে ব্যস্ত। সলটারের দিকে বড় বড় চোখে চাইল সে। খাবার টেবিলে যথারীতি উত্তেজিত হয়ে উঠল জোহান, আজকের ঘটনার ব্যাপারে। ওকে গম্ভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করল সলটার। ছেলেটা ম্যাকগ্রদের সাথে বেশ কিছুদিন মেলামেশা করেছে। ও কি জানে কিছু? হয়ত ওদের দু’একটা কথা কানে এসেছে জোহানের–কিন্তু গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন মনে। করেনি সে। ওকে জিজ্ঞেস করা দরকার। খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করল সলটার।
জোহান, শান্ত কণ্ঠে বলল সে। ম্যাকগ্রদের সঙ্গে ইদানীং প্রচুর মেলামেশা করেছ তুমি।
করেছিলাম। তবে আর নয়, বলল সে।
জর্জ টেবিল ছেড়ে উঠে যাচ্ছিল। কিন্তু সলটারের উদ্দেশ্য বুঝে বসে পড়ল। সরু চোখে চাইল ছেলের দিকে। অস্বস্তি বোধ করছে জোহান।
ভাল, বলল সলটার। ম্যাকগ্রর সঙ্গে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল তোমার। এমনকি ওর প্রেমিকার সাথে তোমাকে মিশতে দিতেও দ্বিধা করেনি সে। তাই?
লাল হয়ে উঠল জোহানের মুখ। বাপের দিকে এক ঝলক তাকিয়েই মাথা নিচু করল সে।
সলটারের প্রশ্নের জবাব দাও, মৃদুকণ্ঠে বলল জর্জ।
কি জানতে চাও বল, সলটারকে বলল জোহান।
মার্কর কথা জানতে চাই। ওকে বা ওর কোন লোককে কখনও এ এলাকার রাসলিং-এর ব্যাপারে কিছু বলতে শুনেছ?