না, এক কথায় উত্তর দিল র্যাঞ্চার। তোমার বক্তব্যকে ব্ল্যাকমেল।; বলা যায়। ব্ল্যাকমেলারকে ফুটো পয়সা দিয়েও বিশ্বাস করি না আমি।
প্রতি ডলারে চল্লিশ সেন্ট, মিস্টার বেঞ্চলি।
না।
তিরিশ।
না, দূর হও! প্রতিটা মুহূর্তে আরও বেশি রেগে উঠছে বুড়ো র্যাঞ্চার।
শ্রাগ করল প্যাট্রিক হল। বিশ?
চড়াৎ শব্দে প্রচণ্ড জোরে চড়টা পড়ল জুয়াড়ীর গালে। চার আঙুলের দাগ বসে গেল সাথে সাথে। মনের ভেতর আরও গভীর একটা ক্ষতে। রক্ত জমল। হোলস্টারের দিকে হাত বাড়িয়েও থেমে গেল সে। নিরস্ত্র র্যাঞ্চারকে খুন করলে আইনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না, জেরাল্ড স্ট্যানলি জানে বক্স বিতে এসেছে সে।
দূর হও! রাগে কাঁপতে কাঁপতে চেঁচাল বিলি বেঞ্চলি।
মাথা ঠাণ্ডা রেখে নির্লিপ্ত চেহারায় ঘুরে দাঁড়াল প্যাট্রিক হল। হিচর্যাকে এসে ঘোড়ায় চড়ল। র্যাঞ্চটা একমাইল পেছনে ফেলে আসার পর পকেটে রাখা টেলিগ্রামটার কথা মনে পড়ল তার।
০৫.
সন্ধে নেমে আসছে, চল্লিশ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে রলিন্সে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই প্যাট্রিক হলের। বিউয়েলদের র্যাঞ্চের দিকে, উত্তর-পুবে রওয়ানা হলো সে। শুনেছে ওখানে টাকার বিনিময়ে কট ভাড়া দেয়া হয়। আর কোনও উপায় না দেখলে সে ওখানের পোস্ট অফিসে টেলিগ্রামটাও রেখে যাবে। পরে র্যাঙ্কার সংগ্রহ করে নিতে পারবে।
সাঁঝের শেষ আলোয় বিউয়েলদের স্টোরের সামনে ঘোড়া থেকে নামল সে। মাঝ বয়েসী চুলপাকা এক লোক স্টোর থেকে বেরিয়ে এসে ঘোড়াটা বার্নে নিয়ে গেল। ফিরে এসে বলল, ভেতরে গিয়ে তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুয়ে নাও, মিস্টার, এখনই সাপার খাওয়ার জন্য ডাক পড়বে।
স্যাডল রোল হাতে স্টোরে ঢোকার পর মিষ্টি করে হেসে প্যাট্রিককে স্বাগতম জানাল এক তরুণী। তুমিই বোধহয় ডেপুটির সাথে এসেছ? বলল সে, ডেপুটি ভেবেছিল আজ রাতটা তুমি বক্স বিতেই কাটাবে।
সে এখানেই থাকবে, নিজের নাম জানিয়ে বলল প্যাট্রিক হল।
মই বেয়ে উঠতে হবে ওপরে, স্টোর কাউন্টারে দাঁড়ানো একজন যুবককে দেখাল তরুণী। বার্ট দেখিয়ে দেবে কোথায় থাকবে তুমি। আজ রাতে তুমিই একমাত্র বোর্ডার।
ডাইনিঙ রূমে ঢুকে বার্ট আর্থারের পিছু পিছু মই বেয়ে ওপরের হল ঘরে পৌঁছুল প্যাট্রিক। ঘরে চারটা কট। এককোণে একটা ওয়াশস্ট্যাণ্ড। দিনের শেষ আলো আসছে ছোট একটা জানালা দিয়ে। ওখান থেকে নিচে তাকালে বার্নের পেছন দিকটা দেখা যায়।
সাপারের জন্য তাড়াতড়ি আসতে বলে নিঃশব্দে মই বেয়ে নেমে গেল বার্ট আর্থার।
ওয়াশস্ট্যান্ডে গিয়ে গা-হাত-পা পরিষ্কার করল প্যাট্রিক। জানালা দিয়ে দেখল স্যাডল খুলে করালে ঘোড়া রাখছে চুল পাকা লোকটা। জানালা গলে সহজেই নিচে নেমে যাওয়া যাবে, চার ফুট নিচেই লাগোয়া কিচেনের ছাদ। একটা পরিকল্পনা আকৃতি নিতে শুরু করল প্যাট্রিকের মাথায়।
মই বেয়ে নিচে নেমে যখন বারে এল তখনও সে চিন্তা করছে একই। ব্যাপারে। দুটো ড্রিঙ্ক নিল সে মাথা পরিষ্কার করার জন্যে। তারপর ডাইনিঙ রূম থেকে বেলের আওয়াজ পেয়ে সাপারের জন্য ওখানে গেল।
টেবিলে চারজনের জন্য প্লেট রাখা হয়েছে। খেতে বসার পর অলিভা জিজ্ঞেস করল, ডেপুটি তোমাকে নিশ্চয়ই হিউ হুবার্টের কথা বলেছে। বলেছে না?
হ্যাঁ, অন্যমনস্কভাবে উত্তর দিল প্যাট্রিক। প্লেট থেকে চোখ তুলে তাকাল অলিভার দিকে। এখান থেকে ডেপুটি কোথায় গেছে, তোমাদের এখানে রাত কাটাবে না?
চিঠিটা গায়েব হওয়ার আগে যারা এখানে ছিল তাদের সবার নামের লিস্ট নিয়েই চলে গেছে। কোথায় যাবে বনে যায়নি।
হিউ হুবার্টই নিশ্চয়ই চিঠিটা নিয়ে গেছে, বলল-পাকা চুলো। হেনরিখ বিউয়েল। কিন্তু লোকটা কে হতে পারে?
দুবছর আগে জুন মাসে লিস্টের পনেরো জন কে কোথায় ছিল খবর নেবে ডেপুটি স্ট্যানলি, বলল অলিভা, প্রথমে যাবে টম ওয়েস্টের ওখানে, তারপর কাল সকালে সুইটওয়াটারের জেফারসন আর অন্যান্যদের র্যাঞ্চে।
তাহলে ডেপুটি বক্স বিতেও খোঁজ নেবে, মন্তব্য করল প্যাট্রিক নিরাসক্ত গলায়।
ওমাহা থেকে ক্রুরা ফেরার আগে না, মাথা নাড়ল হেনরিখ বিউয়েল।
প্লেট ধধায়ার সময় ইচ্ছে করলে আমাকে সাহায্য করতে পারো, বার্ট, খাওয়া শেষ হওয়ার পর বিরাট সুযোগ দিচ্ছে এমন ভঙ্গিতে যুবকের দিকে তাকাল অলিভা।
টেবিল ছেড়ে উঠে বারে চলে এল প্যাট্রিক আরেক পেগ গেলার জন্য। সবকিছু গভীর ভাবে ভাবতে হবে। মেয়েটার পেছনে ঘুর ঘুর করা বার্ট আর্থার রাতে আবার থেকে যাবে না তো? অনেকক্ষণ পর বাইরে বেরিয়ে করাল আর বার্নের সামনে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করল সে। ঘোড়াটা আর স্যাডল কোথায় রাখা হয়েছে দেখে। আরেকবার নিশ্চিত হলো। লক্ষ করল বাড়ি থেকে একশো গজ দূরে। করালের পেছন দরজা।
ফিরে এসে দেখল স্টোরের দরজায় দাঁড়িয়ে বিষণ্ণ চেহারায় যুবতীর কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছে বার্ট আর্থার। সে চলে যাওয়ার খানিক পরে দরজায় আঁচড়ানোর শব্দ হতে এগিয়ে এসে দরজা খুলে দিল হেনরিখ বিউয়েল। একটা মাদি কুকুর প্রবেশ করল ঘরে। বয়স হয়ে গেছে, সেজন্যে এখানেই থাকে, লজ্জিত হেসে ব্যাখ্যা করল অলিভা।
সকালে দেখা হবে, আড়মোড়া ভেঙে বলল প্যাট্রিক হল। ব্রেকফাস্টের সময় তোমাদের বোধহয় ঘুম থেকে টেনে তুলতে হবে আমাকে। অনভ্যস্ত শরীরে রলিন্স থেকে এতদূর ঘোড়ায় চড়ে এসে শেষ। হয়ে গেছি।