ওদের সাথে ফেরিসে দেখা করব আমি, কাজ শেষে বলল হুবার্ট, রলিস থেকে ফেরিসেই আসবে ওরা।
প্যাট্রিক হলের ঘোড়াটা ছাড়া বাকি তিনটে নিয়ে চলে গেল সে। জানে চার লক্ষ ডলারের মুলো ঝুলানোর পর ক্যাম্প থেকে নড়বে না জুয়াড়ী গায়ে আগুন লাগলেও।
.
মঙ্গলবার, চোদ্দই সেপ্টেম্বরে এডমণ্ড হুপার হার্টের পরিচয় বলে দিয়ে স্ট্যানলিকে চমকে দিল। পাঁচমিনিট পর অফিসে ঢুকে উত্তেজিত চেহারায়। ডেস্কের ওপর বসল ডেপুটি। জিজ্ঞাসু চোখে কনস্টেবল এডকে তাকাতে দেখে বলল, এডমণ্ড হুপার হুবার্টের ছদ্মনাম বলে দিয়েছে!
কে?.
লু মেয়ার! বাকি ছয়জন স্যাণ্ড ক্রীক রাইডারদের মধ্যে একমাত্র সে-ই চলে গেছে কাউন্টি ছেড়ে।
লোকটা কোথায় গেছে সে সম্বন্ধে হুপার কিছু বলেছে?
না, তবে আমরা জানি সে দক্ষিণে স্নেক রিভারের দিকে গেছে। অ্যাডাম বা ওয়েন যেকোন একজনকে নিয়ে আজই রওয়ানা হয়ে যাব আমি।
ম্যাক্সওয়েল হোটেলের টেবিলে ব্রেকফাস্ট নিয়ে মাত্র বসেছে। ওয়েন, অ্যাডাম আর রোসা। প্যাট্রিক হলের গায়েব হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা অ্যাডাম শোনাচ্ছে এমন সময় ওখানে হাজির হলো স্ট্যানলি। সে চেয়ার টেনে বসার পর অ্যাডাম বলল, আমি মনে করেছিলাম আমার সামনে ট্রেইলে কোথাও আছে প্যাট্রিক হল। কিন্তু শহরে ফিরে খবর নিয়ে দেখেছি হোটেলে ফেরেনি। বুঝতে পারছি না কোথায় গেছে।
আমি বোধহয় জানি কোথায় গেছে, বলল স্ট্যানলি। দক্ষিণে স্নেক রিভারের দিকে।
ওদিকে যাবে কেন? জানতে চাইল ওয়েন।
হয়তো হুবার্টের সাথে যোগ দিতে গেছে। এডমণ্ড হপার কিছুক্ষণ আগে বলে দিয়েছে যে লু মেয়ারই আসলে হিউ হুবার্ট। আমরা জানি স্নেক রিভারের ব্যাগসে একটা র্যাঞ্চে কাজ নিয়ে চলে গেছে লোকটা। আমি হুবার্টকে ধরে আনতে যাচ্ছি, তোমাদের মধ্যে কে যাবে আমার সাথে?
আমি, অ্যাডামকে হাঁ করতে দেখে দ্রুত বলে উঠল জোসেফ ওয়েন।
আমি এখানেই থাকছি তাহলে, গম্ভীর চেহারায় সবার দিকে তাকাল অ্যাডাম। আগেও একবার স্বীকারোক্তি দিয়ে পরে অস্বীকার করেছে হুপার। আমি জানি না কেন, তবে মনে হচ্ছে লোকটা আমাদের ভুল পথে ঠেলে দিতে চাইছে।
আমার তা মনে হয় না, প্রতিবাদ করল ওয়েন। মিথ্যে বলে। হুপারের কি লাভ!
তবু… কথা শেষ করল না চিন্তিত অ্যাডাম।
বেশ, ট্রেনগুলোর ওপর তুমি আর বোসা নজর রাখো, বলল। স্ট্যানলি। কালকে যদি ভয়া হান্টার দুজন আসে, ওদের অনুসরণ করে হয়তো ব্যাগসে পৌঁছে যাবে তুমি। ওদিকে প্রচুর হরিণ আছে। স্নেক, রিভারেই হয়তো ক্যাম্প করেছিল ওরা গ্যানন উইলিস আর হার্টের সাথে। সেজন্যেই সম্ভবত স্নেক রিভারে গেছে হুবার্ট। উঠে দাঁড়াল ডেপুটি স্ট্যানলি। চলো, ওয়েন, এখনই রওয়ানা হব আমরা।
ওরা দুজন তাড়াহুড়ো করে চলে যাবার পর রোসা অ্যাডামের দিকে তাকাল। বক্সি বিতে গিয়ে জোডির দেখা পেয়েছ, অ্যাডাম? কেমন আছে সে?
চিন্তা কেটে গিয়ে মুহূর্তের জন্য উজ্জ্বল হয়ে উঠল অ্যাডামের মুখ। হাসল সে। ভাল, আগের চেয়ে অনেক ভাল আছে ও।
.
চোদ্দই সেপ্টেম্বর যেদিন হুপার মুখ খুলেছে সেদিনের তিন নাম্বার ট্রেনে রলিন্সের পথে পশ্চিমে আসছে দুজন লোক। ওদের ব্যাগেজের সাথে দুটো গানকেস আছে। অপেক্ষাকৃত বয়স্ক লোকটার চেহারায় অসংখ্য। ভঁজ, ওয়ালনাটের মত। চোখে উদ্বিগ্ন চাহনি। শাইয়্যানে প্রকাশিত দি নিউজ পত্রিকাটি পড়ছে সে গভীর মনোযোগের সাথে। হিউ হুবার্টের কীর্তি কাণ্ড ফলাও করে ছাপিয়েছে আজকের পত্রিকায়।
অবস্থা সুবিধার মনে হচ্ছে না আমার পাশে বসা বেঁটে লোকটার কানের কাছে মুখ এনে বলল ওয়ালনাট।
কপালে কাটা দাগওয়ালা লোকটা হিউ হুবার্টের ওপর লেখা আর্টিকেলটা আগেই পড়েছে। হাসল সে ফাটা বাঁশের শব্দ তুলে। বুড়ো মেয়েছেলের মত খামোকা চিন্তা কোরো না তো, উইডো। হুবার্টের সাথে আমাদের সম্পর্ক কি! পাইপ ধরিয়ে নিশ্চিন্ত চেহারায় ধোয়া ছাড়তে লাগল সে।
কিন্তু, ল্যানট্রি, অধৈর্যকণ্ঠে বলল পাকাচুল। যে সাতজনকে সন্দেহ করা হচ্ছে হুবার্ট হিসেবে, তাদের মধ্যে আমাদের গাইড জুডাস অ্যাডলারের নামও আছে।
শ্রাগ করল ওয়ার্ড ল্যানট্রি। তো কি হয়েছে? এডমণ্ড হুপার তো সাতজনের একজনকেও হুবার্ট বলে ধরিয়ে দেয়নি। এমনকি হুবার্টের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে সে, বলেছে ফাঁসির দড়ি এড়াতে হাওয়া থেকে হুবার্টকে তৈরি করেছে।
পেপারের দিকে নজর ফিরিয়ে উইডোফিল্ড বলল, কিন্তু আমাদের আরেকজন গাইড ছিল গ্যানন উইলিস। পেপারে বলছে লোকটা আউট-ল ছিল।
হ্যাঁ, ছিল। এখন আর নেই, মারা গেছে সে, পাকাচুলকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করল ল্যানট্রি।
চিন্তা দূর হলো না উইডোফিল্ডের মাথা থেকে। মেডিসিন বোতে ট্রেন থামার পর আজকে বেরনো রলিন্সের একটা খবরের কাগজ কিনল সে। এই পেপারেও সামনের পৃষ্ঠা দখল করে আছে হুবার্ট। রলিন্সের ভেতর দিয়ে আমাদের যেতে না হলেই ভাল হয়, ল্যানটি, কিছুক্ষণ ইতস্তত করে বলল উইডোফিল্ড। জুডাস অ্যাডলারকে সন্দেহ করে থাকলে ওর ওপর চোখ রাখবে শেরিফ।
কিন্তু রলিন্সে অ্যাডলারের সাথে আমাদের দেখা হবে না, উইডো, আবারও পাকাচুলকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করল বেঁটে ল্যানট্রি। বুড়ো মেয়েমানুষের মত অযথা ভয় পেয়ো না, স্টেজে করে ফেরিসে যাওয়ার পর ক্যাম্পে আমাদের নিয়ে যেতে আসবে সে।