ডিক উলফের র্যাঞ্চ পাশ কাটানোর পর স্ক্যাবার্ড থেকে খুলে কারবাইনটা পরীক্ষা করল। গুলি না থাকলে সামনে ক্যান্টলিন র্যাঞ্চের স্টোর থেকে কিনে নেবে। চেম্বার খালি, তবে ম্যাগাজিনে পাঁচটা শেল দেখে সন্তুষ্ট হয়ে আবার স্ক্যাবার্ডে রেখে দিল কারবাইন। অ্যাডামের সাথে তার রাইফেল যুদ্ধ হওয়ার কোনও কারণ নেই। মুখোমুখি যদি দাঁড়াতেই হয়, ব্রেস্ট হোলস্টারে রাখা .৩৮ টাই বেশি পছন্দ তার।
স্যাণ্ড ক্রীকের কাছে এসে ক্যান্টলিন র্যাঞ্চ এড়ানোর জন্য পশ্চিমে সরে গেল সে, এগোল প্রেইরির মধ্যে দিয়ে। চারপাশে অসংখ্য গরু চরছে। ওমাহা থেকে আনা অ্যাডামের হেফারগুলোও আছে ওগুলোর মাঝে। ওগুলোর মালিক হতে পারলে গর্ব হবে যেকোন র্যাঞ্চারের।
শেষ বিকেলে বক্স বির পরিচিত গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকল প্যাট্রিক হল। করালের কাছে একজন কাউহ্যাণ্ডকে কুড়াল ধার করতে দেখে এগিয়ে গেল। জিজ্ঞেস করল জোডি কোথায়।
চেহারায় জুয়াড়ীকে চেনে না ফোরম্যান ল্যারি। বাইরে গেছে। ছেলেটা, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরবে, জানাল সে। হাতের ইশারায়। একটা বেঞ্চ দেখাল। করালে ঘোড়া রেখে ওখানে বসে জিরিয়ে নাও।
কটনউড গাছের নিচে বেঞ্চটা। ঘোড়া করালে বেঁধে এসে বসল। প্যাট্রিক হল। একটা সিগারেট ধরিয়ে কাউহ্যাণ্ডের কাজ দেখতে লাগল। এখানে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করার ঝুঁকি নেয়া ঠিক হবে না, ভাবল সে। অস্বস্তি ভরে দেখল র্যাঞ্চ হাউসের পোর্চটা। এখানে দাঁড়িয়েই সেরাতে শুলি করে মেরেছে সে র্যাঞ্চারকে। অ্যাডাম সন্দেহ করছে কাজটা তার। এখানে এসেছে দেখতে পেলে যদি অ্যাডাম গোলাগুলি করে, ফলাফল যাই হোক কালকে হুবার্টের সাথে দেখা করাটা অসম্ভব হয়ে যাবে।
কুড়ালটা ধার দেয়া শেষে উঠে দাঁড়াল ফোরম্যান, ওর দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার জন্য সাপারের কথা বলে আসি।
সাপার পর্যন্ত থাকব না আমি, দ্রুত বলল প্যাট্রিক হল। কোথায় গেছে জোডি, এখনও আসছে না কেন?
হাসল ফোরম্যান। জোডি পঞ্চাশটা গোনায় ব্যস্ত।
পঞ্চাশটা কি?
ফোরম্যানের হাসি আরও চওড়া হলো। জোডি এলে তাকেই। জিজ্ঞেস কোরো। সাপারের কথা বলতে র্যাঞ্চহাউসের ভেতরে চলে গেল সে।
ছায়া ঢাকা বেঞ্চে একা বসে আছে প্যাট্রিক হল। অস্বস্তি লাগছে। তার। উঠে দাঁড়িয়ে করাল থেকে ঘোড়াটা এনে বেঞ্চের পাশে বেঁধে বসল আবার।
আধঘণ্টা পর একটা পনিতে চড়ে এল জোডি বেঞ্চলি, কটনউড গাছের ছায়ায় বসে থাকায় প্যাট্রিক হলকে প্রথমে দেখতে পেল না। হাত নাড়ানোয় বুঝতে পারল ওখানে কেউ আছে। বেঞ্চের সামনে ঘোড়া থামিয়ে লাফ দিয়ে নামল সে, জুয়াড়ীকে দেখে প্রায় চেঁচিয়ে উঠল, তুমি!
কেন, আসতে বারণ আছে নাকি?
ঋণ শোধ দেয়ার সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি।
তা ঠিক, সায় দিয়ে হাসল প্যাট্রিক হল। কিন্তু টাকাটা এখনই শোধ করে দিলে শুধু ষাট ভাগ পেলেই খুশি থাকব আমি। বাইশ হাজার ডলারে তোমাকে দিতে হবে মাত্র তেরো হাজার দুশো ডলার। কি?
জবাব দেয়ার সুযোগ পেল না জোডি, ওদের কথা শুনে র্যাঞ্চহাউসের পোর্চ থেকে লাফ দিয়ে নেমে সিক্সগান হাতে তেড়ে এল ফোরম্যান। গলা ফাটিয়ে চেঁচাচ্ছে সে, এই র্যাঞ্চে আসার সাহস পেলে কোথায়! ভাগে! দশ গুনে গুলি করব আমি। এক…
বেঞ্চের ওপর উঠে দাঁড়িয়ে এক লাফে বের পিঠে চাপল প্যাট্রিক হল, ঝুঁকে পড়ে দড়ির গিট খুলে ঘোড়া ছোটাল গেট লক্ষ্য করে। গেটের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এমন সময় পেছনে একটানা ছয়বার গর্জে উঠল সিক্সগান। বুলেটগুলো লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত করতে না পারলেও কাছ দিয়ে গিয়ে আতঙ্ক জাগাতে পারল লক্ষ্যবস্তুর মনে।
পাঁচমাইল দূরে ক্যান্টলিন র্যাঞ্চে পৌঁছুনোর আগ পর্যন্ত পেছনে তাকিয়েও সময় নষ্ট করল না প্যাট্রিক,হল। সন্ধে সাতটায় র্যাঞ্চে পৌঁছে দেখল কোরম্যান ছাড়া আর কেউ নেই, কাউহ্যাণ্ডরা অন্যান্য র্যাঞ্চের কাউহ্যাণ্ডদের সাথে রঙ্গিসে গেছে রাউণ্ডআপ করতে। এখানেও থামত না, কিন্তু সকাল পর্যন্ত বিশ্রাম না নিলে ঘোড়াটা ছুটতে পারবে না বুয়ে থেকে যেতে বাধ্য হলো। ঘোড়া স্টলে রেখে এসো, জুয়াড়ীকে চেনে বলে খাতির করল কোরম্যান, আমি তোমার খাবারের ব্যবস্থা করছি।
পরদিন তেরো তারিখ ভোরে রওনা হয়ে গেল প্যাট্রিক হল। আজ তাকে হুবার্টের সাথে দেখা করতেই হবে। কোরম্যানের মনে যাতে ভুল ধারণা জন্মায় সেজন্য রলিন্সের পথে কিছুদূর এগুলো সে। তারপর একমাইল দূরে গিয়ে পেছনদিকটা দেখল তীক্ষ্ণ নজরে। বক্স বি আর ক্যান্টলিন র্যাঞ্চের মাঝের জমি পার হচ্ছে একজন অশ্বারোহী। ঘোড়াটা স্ট্যালিয়ন! অ্যাডাম বেঞ্চলিও স্ট্যালিয়নে চড়ে।
আগেই আন্দাজ করেছিল, চমকাল না জুয়াড়ী। বক্স বিতে সম্ভবত কাল রাতে পৌঁছেছে অ্যাডাম। ওর খবর জেনেছে ফোরম্যান বা জোডির মুখে। তারপর বুঝে নিয়েছে কোথায় রাত কাটাবে সে। ভোরে উঠেই ক্যান্টলিন র্যাঞ্চের উদ্দেশে ঘোড়া ছুটিয়েছে।
গতি বাড়ানোর জন্য বের পেটে স্পরের খোঁচা দিল প্যাট্রিক হল। চিন্তার আপাতত কোনও কারণ নেই, ক্যান্টলিনে গিয়ে প্রথমে কোরম্যানের কাছ থেকে ওর খোঁজ জানবে অ্যাডাম। তারপর সে রলিন্স যাচ্ছে মনে করে ঘোড়া ছোটাবে।
ওর কিছুদূর সামনেই ফেরিস আর সেমিনো মাউন্টিনের মাঝখানের সরু প্যাসেজ। ওই পথে গেলে ওকে ধরে ফেলতে পারবে অ্যাডাম। না পারলেও অন্তত খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাবে, নজর রাখতে পারবে ওর ওপর। অ্যাডামের চোখের সামনে হুবার্টের সাথে দেখা করার কোনও ইচ্ছে নেই প্যাট্রিক হলের।