হাতটা ঝাঁকিয়ে ছেড়ে দিল বোসা, তুমি স্ট্যানলির চিঠি পেয়ে এসেছ।
তুমি জানলে কি করে, ম্যাম?
স্ট্যানলির হয়ে চিঠিটা আমিই লিখেছি। চলে যেতে যেতে কথা। হবে।
ছোট্ট ব্যাগটা প্ল্যাটফর্ম থেকে তুলে নিয়ে রোসার সাথে শেরিফের অফিসে পৌঁছুল ফ্রেড ম্যাকলিন। অ্যাডামের সাথে মীটিঙে বসেছিল। স্ট্যানলি, ঘরে বোসার পেছনে পাটখড়িকে ঢুকতে দেখে চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠল তার। কিছু জানতে পেরেছ, ফ্রেড?
বোধহয়, পকেট থেকে একটা নোটবুক বের করে ডেস্কের ওপর বসল ম্যাকলিন। দুবছর আগে জুলাইয়ের ছয় তারিখে আমাদের পেপারে একটা খবর ছেপেছিল। বাল্টিমোর, মেরিল্যাণ্ডের দুই ব্যাংকার পার্টনার গ্রাহকদের চার লক্ষ ডলার নিয়ে পলাতক। পুলিশ খোঁজ নিয়ে। দেখেছে লোক দুজন কানাডা যাবার ট্রেনে টিকেট কেটেছে, কিন্তু ধারণা করা হয় ওরা আসলে গেছে মেক্সিকোতে।
নাম?
ভিনসেন্ট উইডোফিল্ড আর ওয়ার্ড ল্যানট্রি। উইডোফিল্ড লম্বা, পাকা চুল। ল্যানট্রি বেঁটে-মোটা। চল্লিশ-বিয়াল্লিশ হবে তার বয়স। কপালে কাটা দাগ আর গালে চাপ দাড়ি আছে লোকটার।
কাউকে কিছু বলেনি তো?
না।
স্বস্তির ছাপ ফুটে উঠল স্ট্যানলির চেহারায়। আমাদের ধারণা এ মাসের পনেরো তারিখে আসবে ওরা। ভিনসেন্ট আর ল্যানট্রি। চোখ। খোলা রাখো, কাউকে বুঝতে দিয়ো না এখানে কেন এসেছ। কেউ জানতে চাইলে বলবে এডমণ্ড হুপারের সাক্ষাৎকার নিতে পাঠিয়েছে। তোমার পেপার।
বেশ। আমার পেপার জানতে চাইলে বলব শেরিফের সাথে দেখা করেই ফিরে যাব। রোসার মুখে শুনলাম লেম্যান শহরের বাইরে গেছে। আসবে কবে?
শ্রাগ করল স্ট্যানলি। বলা যায় না কবে আসবে। স্পাইক হাননাকে ধাওয়া করে মনট্যানার দিকেই গেছে কিনা কে জানে! এখনও কোনও, খবর পাঠায়নি।
.
শাইয়্যান থেকে রিপোর্টার আসায় আরও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ল প্যাট্রিক হল। লক্ষ করে দেখেছে ডেপুটি স্ট্যানলির সাথে লোকটার বেশ মাখামাখি আছে। অ্যাডাম বেঞ্চলির সাথে গোল্ড রূমে এসেও আড্ডা মারছে রিপোর্টার। এগারোই সেপ্টেম্বর ওদের অনুসরণ করে ম্যাক্সওয়েল হোটেল পর্যন্ত এল সে।
হোটেল পোর্চে বসল রিপোর্টার। অ্যাডাম, স্ট্যানলি আর রোসা। নিচু স্বরে কি যেন আলাপ শুরু করল। আজ ওদের সাথে জ্যাক হিগিনসও আছে। দম বন্ধ হয়ে আসার মত একটা অনুভূতি জুয়াড়ীকে গ্রাস করল। রলিস ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছেটাকে বহুকষ্টে দমন করে আবার গোল্ড রূমের দিকে পা চালাল সে। চার লক্ষ ডলারের মায়া ছেড়ে। চলে যাওয়া সহজ কাজ নয়। তেরো তারিখে অ্যাডামের চোখ এড়িয়ে হুবার্টের সাথে দেখা করতে হবে ওকে।
অ্যাডাম বেঞ্চলি দিনে দুইবার করে ওর খোঁজ নিচ্ছে জানে সে। প্যাট্রিক হল ঘোড়া ভাড়া করলে সাথে সাথে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে বার্নগুলোকে। ডেপুটিরা আশা করছে জোডির সাথে দেখা করতে বক্স বিতে যাবে সে। ঠিক তাই করবে সিদ্ধান্ত নিল প্যাট্রিক হল। অ্যাডামকে আট-দশ ঘণ্টা পেছনে ফেলে দেবে সে।
গোল্ড রূমের সামনে চমৎকার একটা বে ঘোড়া থেকে একজন কাউহ্যাণ্ডকে নামতে, দেখল প্যাট্রিক হল। স্যাডলে কারবাইন ঝুলছে দৈখে মনে মনে খুশি হলো। লোকটাকে অনুসরণ করে প্রবেশ করল। গোল্ড রূমের ভেতরে।
জুয়াড়ীর চোখের সামনে হুইল অভ ফরচুনে এক ডলার খোয়াল কাউহ্যাণ্ড। তারপর ডাইস টেবিলে হারল আরও দশ ডলার। লোকটার পাশে দাঁড়িয়ে নিজে একদান খেলল প্যাট্রিক হল। জেতা চিপসগুলো নিজের দিকে টেনে বলল, তোমার ঘোড়াটা চমৎকার। বেচবে?
ওর আপাদমস্তকে নজর বোলাল কাউহ্যাণ্ড চেহারায় বিরক্তি নিয়ে। তারপর বলল, দুইশো ডলার দেয়ার সাধ্য আছে তোমার? বেচার ইচ্ছে নেই বলেই অসম্ভব দাম হেঁকেছে সে।
রাজি। স্যাডল গিয়ার সহ তিনশো দেব।
টেবিলে গিয়ে বসল ওরা দুজন, কয়েকটা পেগ পেটে পড়তেই জুয়াড়ীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে গেল কাউহ্যাণ্ড। প্যাট্রিক হলের পিঠ চাপড়ে জড়ানো গলায় বলল, আর কেউ হলে বেচতাম না। কিন্তু তোমার জন্য, দোস্ত, দুইশো ডলারেই রাজি।
বিল অভ সেল বুঝে নিয়ে কাউহ্যাণ্ডের হাতে দুইশো ডলার গুঁজে দিল প্যাট্রিক হল। কাউন্টারে গিয়ে ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে সেফে রাখা এনভেলপটা সংগ্রহ করল। কাগজ দুটো ওয়ালেটে খুঁজে বেরিয়ে এল কাউহ্যাণ্ডের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে।
রাত সাড়ে এগারোটায় বের স্যাডলে চাপল প্যাট্রিক হল। ম্যাক্সওয়েল হোটেলের এক ব্লক আগে ঘোড়া বেঁধে রূম থেকে কম্বল নিয়ে ফিরে এল। তারপর তারার আবছা আলোয় পথ দেখে ঘোড়া ছোটাল উত্তরে, স্যাণ্ড ক্রীকের দিকে।
.
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে এসময় বেল প্রিঙ স্টেজ স্টেশনে পৌঁছল সে। রেস্টুরেন্ট মাত্র খুলেছে। ঘোড়া করালে রেখে নাস্তা করল সে। ঘোড়াটাকে তিন ঘণ্টা বিশ্রাম দিয়ে এগুলো আবার। বাজার্ড গ্যাপে পৌঁছল দুপুর বেলায়।
সে জানে সকালে ম্যাক্সওয়েল হোটেলের ডাইনিঙ রূমে ওকে না দেখে অ্যাডাম বেঞ্চলির সন্দেহ হবে। খোঁজ নিলেই বুঝে যাবে শহর ছেড়েছে সে। ধরেই নেবে পাওনা টাকা সংগ্রহ করতে বক্স বিতে যাচ্ছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই, আপন মনে হাসল প্যাট্রিক হল, ডেপুটির চেয়ে অন্তত বিশ মাইল এগিয়ে আছে সে।
জোডির সাথে কথা বলার জন্য বক্স বিতে দুঘণ্টা কাটানোই। যথেষ্ট। টাকা পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, তবে বক্স বি হয়ে অক্স বোর দুই নম্বর লাইন ক্যাম্পের দিকে গেলে অনুসরণ করে আসা অ্যাডাম। বেঞ্চলি ওর আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পারবে সেই সম্ভাবনা কম।