না। কেন? নির্বিকার চেহারায় চোখ সরু করে পাল্টা প্রশ্ন করল। প্রামার।
শহর ছেড়ে চলে গেছে মার্গারিট নামের একটা মেয়ে। তাকে খুঁজছি। আমি। তাতে আমার কি? গ্লাস তুলে হুইস্কিতে চুমুক দিল প্লামার।
ওর ঘর সার্চ করার সময় আরেকটা জিনিস পেয়েছি, মিথ্যে বলেনি।
স্ট্যানলি, ঘরে একটা নেলকাটার পেয়েছে সে। লোকটা যদি সত্যিই হুপারের সঙ্গী হয়ে থাকে, উল্টোপাল্টা ভেবে ভয় পেয়ে যাবে হয়তো। হয়তো ভাববে কারও নাম, ঠিকানা বা কোনও চিঠি পেয়েছে ডেপুটি, ওর পরিচয় জেনে ফেলেছে।
কি খুঁজে পেয়েছে লোকটা হয়তো জিজ্ঞেস করবে, মনে মনে আশা করল স্ট্যানলি। ওই প্রসঙ্গের ধার দিয়েও গেল না প্লামার। চেয়ার পেছনে ঠেলে উঠে দাঁড়াল।
কার্বন কাউন্টিতে এক দেড় মাস থেকেছে তেমন কোনও লোক স্ট্যানলির বিরুদ্ধে ড্র করার সাহস পেত না। কিন্তু অতদিন থাকেনি প্লামার। ডেপুটির ড্র কখনও দেখেনি সে, তবে নিজের দ্রুততায় আস্থা। আছে।
দুজন কাস্টোমার সেলুনের ব্যাটউইং ঠেলে ভেতরে ঢুকে থমকে দাঁড়াল। দেখল সিক্সগানের দিকে হাত বাড়াল প্লামার, পরক্ষণেই কুঁজো হয়ে আছড়ে পড়ল মাটিতে। অবাক চোখে ওরা তাকিয়ে থাকল ডেপুটির সিক্সথানের ধোয়া ওঠা নলটার দিকে। স্ট্যানলির হাতে কখন সিক্সগান উঠে এসেছে দেখতে পায়নি দুজনের একজনও।
টেবিল পাশ কাটিয়ে ঝুঁকে পড়ে মৃতদেহটা দেখল স্ট্যানলি। গ্রেফতার করতে পারলে ভাল হত, মনে মনে বলল সে, একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ চিরতরে চলে গেল লোকটা।
১৩.
তেরো সকালের রোদে গম্ভীর চেহারায় দাঁড়িয়ে আছে প্যাট্রিক হল। রলিন্সের আবহাওয়া সুবিধার মনে হচ্ছে না তার। সেলুনে, হোটেলে, বারে, রাস্তায় সবাই উত্তেজিত। হিউ হুবার্টকে চায় ওরা। অস্বস্তি বোধ করছে জুয়াড়ী। প্রমাণ হয়ে গেছে ডেপুটির হাতে কাল রাতে মারা পড়া লোকটা হবার্টের সঙ্গী ছিল। ধরা পড়ার ভয়ে পতিতালয় থেকে পালিয়েছে এক যুবতী। হুবার্টের সঙ্গী সাথী আর কয়জন আছে চিন্তাভাবনা করতে শুরু। করেছে শহরবাসী।ওকে সন্দেহ করে বসলে বিপদ হতে পারে। সাবধানে চলতে হবে, সিদ্ধান্ত নিল প্যাট্রিক হল। হোটেল রূমে ডেপুটির সাথে গোলমালে জড়ানো ভুল হয়ে গেছে। এখন জোডি এসে সম্পত্তি বুঝে নেয়ার আগ পর্যন্ত ঘাপটি মেরে বসে থাকা উচিত। জোডির কাছ থেকে পাওনা আদায় করা কঠিন হবে না।
সকালে গোল্ড রূমে জুয়া খেলার ব্যবস্থা নেই, তবু ওখানে গিয়ে হাজির হলো সে। সিসিলিয়ার ওপর চোখ পড়তে মনে মনে বলল, গত বছরও ডেনভারের সেলুনে তোমাকে দেখেছি, সুন্দরী। এই পচা শহরে এসে চাকরি নিয়েছ যখন, বোঝা যায় ভাল ঝামেলা পাকিয়ে দিয়ে তারপর এসেছ এখানে!
প্যাট্রিক হলকে চেয়ার টেনে বসতে দেখে হাসিমুখে এগিয়ে এসে টেবিলের ওপর বসল সিসিলিয়া। ঝুঁকে পড়ে কার্ডিগানের ফাঁক দিয়ে দৈহিক সম্পদের উপরের অংশ প্রায় উন্মুক্ত করে জানতে চাইল, জোডির কাছ থেকে টাকা বুঝে নিয়েছ?
জোডি? কোন জোডি? পাল্টা প্রশ্ন করল প্যাট্রিক হল।
জোডি বেঞ্চলি। তুমি জানো না সে ফিরেছে?
অসম্ভব, মাথা নাড়ল হল। প্রতিটা ট্রেনের ওপর নজর রেখেছি আমি।
মালগাড়ির ওপর রাখোনি, হাসল সিসিলিয়া। কাল মাঝরাতের ট্রেনে এসেছে সে। উঠেছে হেয়েস হোটেলে।
জোডি এখন কোথায় আছে জানো?
বোধহয় হোটেলে।
বারটেন্ডারের রেখে যাওয়া হুইস্কির গ্লাস একচুমুকে শেষ করল, প্যাট্রিক হল। টেবিলের ওপর একটা কয়েন রেখে সিসিলিয়ার কাছ থেকে বিদায় না নিয়েই সেলুন থেকে বেরিয়ে এল। হেয়েস হোটেলের কাউন্টারে গিয়ে জানতে চাইল জোডি বেঞ্চলি কোথায়।
জোডি? বিষণ্ণ চোখ জোড়া তুলে তাকাল হোটেল ক্লার্ক। বোধহয় লইয়ারের অফিসে গেছে। বিলি বেঞ্চলির কপাল ভাল ছেলের এই অবস্থা দেখে যেতে হয়নি তার। কাল রাতে যখন পৌঁছুল, শুয়োরের মত দুর্গন্ধ সারা গায়ে। কয়দিন অভুক্ত ছিল ঈশ্বর জানে। মুখে কয়েক সপ্তাহের না কামানো দাড়ি, পকেটে ফুটো পয়সা নেই, চোখে। ডাকাতের দৃষ্টি…
ক্লার্কের বয়ান শোনা ধৈর্যে কুলাল না প্যাট্রিক হলের। হোটেল থেকে বেরিয়ে দ্রুতপায়ে জ্যাক হিগিনসের অফিস লক্ষ্য করে হাঁটা দিল। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে দেখল দরজাটা ভেড়ানো, ভেতর থেকে উত্তপ্ত গলার আওয়াজ ভেসে আসছে। কথা শোনার জন্য অফিসে না, ঢুকে ওখানেই দাঁড়িয়ে পড়ল ডেনভারের জুয়াড়ী।
বেঞ্চলিদের সমস্ত দেনা পাওনার ব্যাপারটা আপাতত তুমি দেখছ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দিয়েছি, আঙ্কল, বলল রোসা।
আইনগত ঝামেলা মেটার আগ পর্যন্ত সম্পত্তি আগের মতই।থাকবে। র্যাঞ্চের সমস্ত খরচ তার আগ পর্যন্ত আমি বহন করব উইলের নির্দেশ অনুযায়ী…
আর একদিন কি আমি না খেয়ে থাকব? লইয়ারকে থামিয়ে দিয়ে খেঁকিয়ে উঠল জোডি। উইলে বাবা আমাকে টাকা দিয়ে গেছে তুমিই বলেছ। সেই টাকা থেকে কিছু ছাড়ো, আমার পকেট একদম ফাঁকা।
আমার যা আছে সবই তো তোমারও। অ্যাডাম বেঞ্চলির কণ্ঠস্বর চিনতে না পারলেও কে হতে পারে আন্দাজে বুঝল জুয়াড়ী। একবার অন্তত বাবার কথা রাখো। বাবা চেয়েছিল ফিরে আসো তুমি। চলো,
নাপিতের দোকানে গিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে নেবে। তারপর র্যাঞ্চে যাবার পথে কথা বলব আমরা।