স্ট্যানলি বুঝে ফেলল অ্যাডাম কি বলতে চাইছে। কবরস্থানে চলে যেতাম আমি, লোকজন হুপারকে জেল ভেঙে বের করে বার্টের পরিচয় জেনে নিত ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে।
তারমানে মার্গারিট হুপারকে জানে বাঁচিয়েছে। কেন? গ্যাননের _ কাছে চিঠি লেখা লরাই তো মার্গারিট হতে পারে, তাই না?
ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেল স্ট্যানলির কাছে। লইয়ার বলল, ওই পেশার মেয়েরা বিভিন্ন নাম ব্যবহার করবে এটাই তো স্বাভাবিক।
আমি খোঁজ নিতে যাচ্ছি, উঠে দাঁড়াল জোসেফ ওয়েন, হুবার্টের খোঁজে আমি নরকে যেতেও রাজি।
আমিও যাব, আইনগত পরামর্শ দরকার হতে পারে তোমার, টাক চুলকাল লইয়ার।
ওরা চারজনই হাঁটতে শুরু করল নিষিদ্ধ পল্লীর দিকে। জ্যাক হিগিনস ছাড়া বাকি তিনজন সশস্ত্র। রেল লাইন পেরিয়ে ডানে মোড় নিয়ে এগুলো ওরা।
বড়সড় দোতলা কাঠের বাড়িটা চমৎকার। দরজায় লাল লণ্ঠন জ্বলতে না দেখলে ভদ্রলোকের বাড়ি বলে ভ্রম হয়। হিচরেইলে মাত্র। দুটো ঘোড়া, আজ খদ্দের বেশি নেই। জোসেফ, ওখানে থেমে দাঁড়িয়ে বলল লইয়ার, তুমি আর আমি এখানেই দাঁড়াই। স্ট্যানলির কাছে সার্চ ওয়ারেন্ট চাইলে আমরা ওর হয়ে জাজের কাছ থেকে নিয়ে আসব।
পোর্চে উঠে রশি টেনে ঘণ্টি বাজাল অ্যাডাম। কিছুক্ষণ পর দরজা। খুলে উঁকি দিল মাঝ বয়েসী এক মহিলা। মার্গারিটের সাথে কথা আছে, আমাদের, ডেকে দাও, বলল স্ট্যানলি।
ওদের দুজনের শার্টে পিন দিয়ে লাগানো ব্যাজ দুটো পালা করে দেখল মহিলা, তারপর বলল, আমার লাইসেন্স দেখতে চাইলে দেখতে পারো। মার্গারিট বিকালের ট্রেনে চলে গেছে।
আবার আসবে?
কি জানি।
আমাদের কাছে ওয়ারেন্ট নেই, স্বীকার করল স্ট্যানলি, ওর রূমটা। সার্চ করতে চাই, আপত্তি আছে?
মাথা নেড়ে দরজা ছেড়ে পঁড়াল মহিলা। দোতলায়। আট নম্বর রূম।
ডেপুটি দুজন বাড়ির ভেতরে ঢোকার পর দরজা বন্ধ করে দিল মহিলা। বাইরে হিচর্যাকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে লইয়ার আর জোসেফ ওয়েন। একটা কার্ট হুইলের, অন্যটা স্পুর্কি র্যাঞ্চের, ঘোড়া দুটো। দেখিয়ে বলল সে।
দোতলার একটা ঘরের জানালায় লণ্ঠনের আলো দেখতে পেল ওরা। জানালা দিয়ে কাঁধ বের করে ওদের উদ্দেশে চেঁচাল স্ট্যানলি, মালপত্র সহ ভেগেছে। তোমরা স্টেশনে গিয়ে খবর নাও কোন ট্রেনে গেছে, আমরা ঘরটা সার্চ করে ওখানে তোমাদের সাথে দেখা করব।
দ্রুতপায়ে হেঁটে ডিপোতে পৌঁছে গেল ওয়েন আর লইয়ার। টিকেট কাউন্টারে প্রৌঢ় লইয়ার এজেন্টকে মার্গারিটর চেহারার হুবহু বর্ণনা জানানোয় অবাক হলো ওয়েন।
চার নাম্বার ট্রেনে গেছে, বলল এজেন্ট, শাইয়্যানে যাবার।; ওয়ানওয়ে টিকেট কেটেছে সে।
সাথে আর কেউ ছিল?
না। মাথা নেড়ে দেয়ালঘড়ি দেখল এজেন্ট। ট্রেন এক ঘণ্টা আগে শাইয়্যানে পৌঁছে গেছে।
দৌড়ে স্টেশনে এল উদগ্রীব ডেপুটি দুজন। স্ট্যানলির হাতে একটা। পুরানো খাম। খামের গায়ে প্রাপকের নাম ঠিকানা ঝাঁপসা হয়ে গেলেও পড়া যায়। ওটা লইয়ারকে দেখিয়ে অ্যাডামের দিকে তাকাল স্ট্যানলি, ও যে লরা হতে পারে সেকথা আমার মাথায়ই আসেনি। আমার বদলে, কাউন্টির টপ ডেপুটি তোমারই হওয়া উচিত ছিল।
টেলিগ্রাফ অপারেটরের কাউন্টারে গিয়ে মার্গারিটের খোঁজ জানতে চেয়ে শাইয়্যানের পুলিশ চীফের কাছে একটা টেলিগ্রাম পাঠাল সে।
ফিরে এসে দাঁড়াল অপেক্ষমাণ বাকি তিনজনের পাশে। আরেকটা ব্যাপারে আমাদের মনোযোগ দেয়া দরকার, স্ট্যানলির দিকে তাকিয়ে বলল অ্যাডাম। স্যাও ক্রীকের সাতজন রাইডারকে সন্দেহ করা হচ্ছে বলেছ। এদের মধ্যে সবচেয়ে পরে এই কাউন্টিতে এসেছে কে?
নোটবুক বের করে নামের পাশে লিখে রাখা তারিখগুলো দেখল স্ট্যানলি। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে, সবার পরে এসেছে ম্যাডরিক প্রামার। এ বছরের জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত অন্য কোথাও ছিল সে। কোথায় বলেনি।
শাইয়ানে গ্যানন উইলিস খুন হয়েছে কবে?
আবার নোটবুকের পাতা উল্টে দেখল স্ট্যানলি। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে।
উইলিসের এখানে আসার কথা ছিল হুবার্টের সাথে কোনও একটা অপকর্মে অংশ নেয়ার জন্য। সে আসত সেপ্টেম্বরে। কিন্তু ধরে গ্যানন মারা যাওয়ায় একা হয়ে পড়ল হুবার্ট, এবং আরেকজনকে আসতে বলল। নতুন লোকটা এলাকা চিনতে জুলাই মাসেই চলে আসবে না? কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে অ্যাডাম বলল, আমার ধারণা ওই সাতজন রাইডারের মধ্যেই হুবার্ট আর তার সহকারী আছে। তারিখ মিলিয়ে দেখল বার্টের সহযোগী হতে পারে একমাত্র ম্যাভরিক প্লামার।
ডিপোর বিশাল দেয়াল ঘড়িতে রাত সাড়ে দশটা বাজে। বারগুলোয় খোঁজ নিলেই ওকে পাওয়া যাবে, বলল স্ট্যানলি। ওয়েনের দিকে তাকাল। তুমি আর মিস্টার হিগিনস গোল্ড রাম আর হোটেলগুলোয় দেখো। অ্যাডাম সাউথ ফ্রন্টে যাও। আমি যাচ্ছি নর্থ ফ্রন্টে। প্লামারকে দেখতে পেলে কিছু করে বোসা না তোমরা, আমাকে খবর দিয়ো।
আলাদা হয়ে গেল ওরা। ডেভিড মুরের সেলুনে যাচ্ছে অ্যাডাম। গোল্ড রূম সেলুনের দিকে হাঁটতে শুরু করল লইয়ার আর ওয়েন। পুব ব্লকের সবকটা বারে টু দিল স্ট্যানলি। একটাতেও নেই প্লামার। একজন বারটেণ্ডার ক্ষোভের সাথে বলল ফরচুন সেলুনে গিলতে যায় লোকটা।
দুব্লক হেঁটে ফরচুন সেলুনে ঢুকল স্ট্যানলি। কমদামী মদ বেচা হয় এখানে। জুয়ার প্রায় সবরকম ব্যবস্থা আছে। প্লামারকে এক একট টেবিলে বসে থাকতে দেখল সে। হ্যাট খুলে টেবিলে রেখেছে লোকটা। ফ্ল্যাপলেস হোলস্টার থেকে উঁকি দিচ্ছে .৪৫ সিক্সগান। সামনে গিয়ে দাঁড়াল স্ট্যানলি। এটা আগে দেখেছ কখনও? পুরানো খামটা বাড়িয়ে ধরে জানতে চাইল। তীক্ষ্ণ চোখে দেখল লোকটার চেহারায় কোনও পরিবর্তন হয় কিনা।