জীবনে কোনদিন নামও শুনিনি, জবাব দিল আর্থার লজ্জিত চেহারায়, যেন না চেনাটা বিরাট ভুল হয়ে গেছে।
বার থেকে বেরিয়ে এসে জে বারের কোনও চিঠি এসেছে কিনা জানতে চাইল কিলরন হার্পার। একটা খুপরি থেকে বের করে তার হাতে তিনটে খাম ধরিয়ে দিল অলিভা, তারপর হিউ বার্টের চিঠিটা দেখাল। আমার পরিচিত কেউ না, বলল কিলরন।
বার ছেড়ে একে একে এঘরে এল সবাই নিজেদের চিঠিপত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। প্রত্যেককে পড়ে থাকা চিঠিটা দেখাল অলিভা, কেউ চিনল না প্রাপককে।
বোধহয় কোনও ভবঘুরে পাঞ্চারের কাছে লেখা, মত প্রকাশ করল স্পুকি র্যাঞ্চের এক রাইডার।
সবার শেষে মেইল সংগ্রহ করতে এল রিলি বেঞ্চলি, অলিভার কাছ থেকে চিঠিগুলো নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখল। হতাশার ছাপ দেখা গেল র্যাঞ্চারের চেহারায়, তার ছোট ছেলে জোডির কোনও চিঠি নেই, ওগুলোর মধ্যে।
আজ থেকে দুবছর আগে র্যাঞ্চের কাজ ভাল লাগে না বলে পুবে চলে গেছে জোডি বেঞ্চলি। জানিয়েছে পারতপক্ষে আর কখনও ফিরে আসবে না। বাবার সাথে কোনও যোগাযোগও রাখেনি সে।
র্যাঞ্চার সরে যাওয়ার পর মাডি গ্যাপের মার্কো গাজিনি অলিভাকে বলল, বুড়ো বেঞ্চলি জোডির ব্যাপারটা সহজভাবে নেয়নি।
মাথা ঝাঁকিয়ে সায় জানাল অলিভা। এক মাতাল রেকর্ডিং ক্লার্কের , মুখ থেকে র্যাঞ্চারের উইলের কথা প্রকাশ হয়ে গেছে। বিলি বেঞ্চলি অসুস্থ অবস্থায় উইলটা যখন করেছিল তখন ঋণে ডুবে ছিল তার র্যাঞ্চ।
জোডিকে নগদ অর্থ আর অ্যাডামকে ক্যাটল দিতে উইলে নির্দেশ দিয়েছে সে। সে সময়ের হিসেবে ভাগাভাগিটা সমানই ছিল, কিন্তু এখন অবস্থা পাল্টে গেছে। হাজার হাজার ডলার লাভ করেছে বুড়ো বেঞ্চলি গত দুবছরে, সমস্ত টাকা আরও ক্যাটল কেনার পেছনে ব্যয় করেছে। এক বাক্স .৪৫, লম্বা একজন আগন্তুক অলিভার চিন্তার জাল ছিড়ে দিল। লোকটা কিছুক্ষণ আগে এসেছে। ক্রুদের কেউ না। একটা কালো কোট পরেছে সে, প্যান্টটা হাফ বুটের মধ্যে গোঁজা। সিক্সগানটা উরুতে। নিচু করে বেঁধেছে। এখানে সবাই তাকে চেনে জোসেফ ওয়েন নামে। নিজের পরিচয় দেয় ক্যাটল বায়ার হিসেবে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ তাকে ক্যাটল কিনতে দেখেনি। সেটেলমেন্টগুলোর জুয়ার টেবিলেই। তাকে দেখা যায় বেশি।
স্টোরের দ্বিতীয় তাক থেকে গুলির বাক্স নিয়ে ওয়েনের দিকে বাড়িয়ে ধরল অলিভা, টাকা শুনে নিল। কারও সঙ্গে কোনও কথা হলো না ওয়েনের। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ল বক্স বির ক্যাটল ড্রাইভ দেখার জন্য। একটু পরই ফাঁকা হয়ে গেল স্টোর, যার যার র্যাঞ্চের দিকে ঘোড়া ছোটাল সাহায্য করতে আসা কাউহ্যাণ্ডরা।
স্টোর গোছানোর সময় চিঠির খুপরিগুলোর দিকে তাকাল অলিভা। H লেখা গর্তে চিঠিটা নেই দেখে অবাক হলো সে। কে নিল? সবাইকে চিঠিটা দেখিয়েছে অলিভা, কেউ বলেনি সে চেনে প্রাপককে। সাতু। সপ্তাহ আগে মনট্যানার মাইলস সিটি থেকে আসা একটা চিঠি কেউ গোপনে সংগ্রহ করবে কেন? ভ্রূ কুঁচকে কিছুক্ষণ চিন্তা করল অলিভা, তারপর ব্যস্ত হয়ে পড়ল অন্য কাজে।
০২.
বিলি বেঞ্চলির ক্যাটল যেদিন ওমাহায় পৌঁছুল সেদিনই ওয়াইয়োমিঙের। মেডিসিন বোতে অনেকক্ষণের জন্য থামল একটা ইউনিয়ন প্যাসিফিক প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ওটা আবার যখন রওয়ানা হলো দ্বিগুণ সতর্ক হয়ে উঠল। শেরিফ রস লেম্যান। গতমাসের ঘটনাটা ভুলতে পারেনি সে।
বগির সবাই লক্ষ করল বন্দীর হাত শেরিফ সীটের হাতলে হ্যাণ্ডকাফ দিয়ে আটকে দিয়েছে। গম্ভীর চেহারায় বসে আছে লেম্যান। কোলের ওপর রাখা হ্যাটের তলা দিয়ে সিক্সগানের নল দেখা যাচ্ছে। পরবর্তী স্টেশন কার্বন। গতবার ওখানে যা ঘটেছে এবারও ঘটতে পারে।
বগির পেছনদিকের সীটে বসা এক তরুণী পাশের লোকটার দিকে তাকাল কৌতূহলী দৃষ্টিতে। ওরা কারা?
আমার মনেও একই প্রশ্ন জেগেছে, এই প্রথমবারের মত মুখ খুলল, শহুরে পোশাক পরা লোকটা। একটু অপেক্ষা করো, আমি ব্রেকম্যানকে জিজ্ঞেস করে জেনে আসি।
ডেনভারের জুয়াড়ী প্যাট্রিক হল সীট ছেড়ে উঠে ব্রেকম্যানকে খুঁজতে গেল। কিছুক্ষণ পর সমস্ত তথ্য জেনে ফিরে এল সে।
বন্দীর নাম এডমণ্ড হুপার, রলিন্সে খুনের দায়ে কোর্টে দাঁড়াবে।
রলিন্স? আপনমনে বলল যুবতী। আমিও তো ওখানে যাচ্ছি! কি। করেছে লোকটা?
ব্রেকম্যানের কাছ থেকে শোনা তথ্যগুলো যুবতীকে জানাল প্যাট্রিক হল। দুবছর আগে এই লোক আর তার তিন সঙ্গী ট্রেন ডাকাতি করার জন্য রেল লাইন উপড়ে ফেলেছিল। সময় মত ব্যাপারটা একজন সেকশন ফোরম্যানের চোখে পড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেনি। ট্রেন থামিয়ে শেরিফকে খবর দেয় লোকটা। দুবৃত্তদের তাড়া করে একটা উইলোর বনে পৌঁছায় পাসি।
সেখানে ওদের মধ্যে লড়াই হয়েছিল? নড়েচড়ে বসল মেয়েটা।
না। অ্যাম্বুশ করে আউট-লর দল, পাসির দুজন সদস্য মারা যায়। ঘোড়া কেড়ে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল দুবৃত্তরা। চারজনের মধ্যে দুজনকে চেনা যায়, একজন হচ্ছে এডমণ্ড হুপার অন্যজন বাড লরেন্স। কথা থামিয়ে মেয়েটা মনোযোগ দিয়ে শুনছে কিনা খেয়াল করল প্যাট্রিক হল, তারপর বলে যেতে থাকল। এই গ্রীষ্মে খবর এল মনট্যানার মাইলস সিটিতে হুপার আর লরেন্সকে গ্রেফতার করা হয়েছে।