স্কিপি ডিরি বলল, সে টাকা চায় না।
ডিটা টমি গজগজ করে উঠল। স্টুয়ার্টের প্রতি ডিটার মোটেও আস্থা নেই। বিশ্বাসও করে না তাকে। তবে এই অর্থ তো আর তার পকেট থেকে যাচ্ছে না। বানজ বিস্ফারিত চোখে তাকাল স্টুয়ার্টের দিকে। কিন্তু স্টুয়ার্ট সূক্ষ্ম দৃষ্টি হেনে যাচ্ছিল ম্যারিয়নের ওপর। অত্যন্ত শীতল চোখে তাকিয়ে ছিল স্টুয়ার্ট।
স্টুয়ার্টের যুক্তিকে যথাযথ মনে করলেন ম্যারিয়ন। তার বিশ্লেষণে স্টুয়ার্টকে সঠিক বলেই মনে হলো। কিন্তু অ্যাথেনা কি ফিরে আসবে? টাকার জন্য অ্যাথেনা ফিরে আসবে না। ট্যালেন্টরা খুব বেশি চালাক হয় না। ম্যারিয়ন সভার এখানেই সমাপ্তি টানার সিদ্ধান্ত নিলেন।
তিনি বললেন, মেলো, খুব সতকর্তার সাথে তুমি তোমার ক্লায়েন্টের কাছে ব্যাখ্যা দেবে। এতে যদি সে এক মাস সময়ের মধ্যেও ফিরে না আসে তবে স্টুডিও এ ছবি বাতিল করবে। তারপর সে যা এ পর্যন্ত অর্জন করেছে তার সব কিছু আমরা কেড়ে নেব। সে অবশ্যই অবগত আছে যে, এরপর সে আমেরিকার কোনো বড় স্টুডিওতে কাজ করতে পারবে না।
কথাগুলো বলেই টেবিল ঘিরে বসে থাকা অতিথিদের দিকে তাকিয়ে রক্তশূন্য হাসি হাসলেন। বললেন, যা গেল, তা মাত্র পঞ্চাশ মিলিয়ন।
উপস্থিত সবাই বুঝতে পারল ম্যারিয়ন এ বিষয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন এবং নিশ্চিতভাবেই এ ছবি আর হবে না। তবে ডিটা টমি ম্যারিয়নের এমন মন্তব্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়ল। একটি ছবিকে টমি অন্য সবার চেয়ে আলাদা চোখে দেখে থাকে। তার কাছে একটি ছবি তার সন্তানের মতো। ছবিটি যদি সফল হতো তবে টমিও ব্যাংকেবল পরিচালকদের সারিতে উঠে আসত।
টমি বলল, ক্লডিয়া ডি লিনাকেই এই প্রস্তাবের জন্য পাঠানো সমীচীন হবে। ক্লডিয়া অ্যাথেনার সবচেয়ে কাছের বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম।
ববি বানজ অনিশ্চয়তার সুরে বলল, আমি বুঝতে পারছি না আসলে আমাদেরকে কোন চুলোয় যেতে হচ্ছে। একজন স্টার সবাইকে লাইনচ্যুত করে ফেলেছে। তার সাথে আবার লেখকের বন্ধুত্ব! ফাকিং স্টার! শ্লেষ ঝাড়ল বানজ।
একথায় ম্যারিয়ন আরো অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। ববি, এমন একটি বাণিজ্যিক সভায় অপ্রাসঙ্গিক কথা কখনো বলবে না। ক্লডিয়াকে তার সাথে কথা বলতে দাও। তবে এটাকে এক রকম মুড়েই রাখো। আমাদের অন্য ছবির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
কিন্তু পরের দিন লডস্টোন স্টুডিওর নামে একটি পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চেক এসে পৌঁছল। চেকটি পাঠিয়েছে অ্যাথেনা অ্যাকুইটেন। ম্যাসেলিনাতে অভিনয়ের জন্য অ্যাথেনা যে অর্থ অগ্রিম নিয়েছিল তা সে ফেরত পাঠিয়েছে।
এখন ব্যাপারটি সম্পূর্ণ চলে গেল লয়ারদের হাতে।
.
পশ্চিম উপকূলের স্বনামখ্যাত নিরাপত্তা সংস্থা প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটি কোম্পানি। মাত্র পনেরো বছরে এন্ড্রিও পোলার্ড সংস্থাটি গড়ে তুলছেন। তার কর্মজীবনের শুরু হয় একটি হোটেলের সুইটে। সেই থেকে পোলার্ড এখন সান্তা মনিকায় চার তলা ভবনের মালিক। সেখানে তার রয়েছে পঞ্চাশ জন হেড কোয়ার্টার স্টাফ। এছাড়াও প্রায় পাঁচশ জনের মতো ইনভেস্টিগেটর ও গার্ড যারা যে কোনো কন্ট্রাক্টের সহযোগী– তাদেরকে ফ্রি-লান্স স্টাফ হিসেবে গণ্য করা হয়। আরো রয়েছে একদল ভাসমান রিজার্ভ গ্রুপ। এরা বছরের বিশেষ শুভ অংশে এন্ড্রিও পোলার্ডের জন্য কাজ করে থাকে।
প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটি সংস্থাটি এর সার্ভিসের জন্য বিখ্যাত এবং যথেষ্ট ব্যয়বহুল। কর্ণধারদের বাড়ি-ঘরের নিরাপত্তা বিধানে সংস্থা রীতিমতো সশস্ত্র রক্ষী ও সাথে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসেরও যোগান দিয়ে থাকে। প্রযোজক ও তারকা শিল্পীদের জন্য এদের আছে দক্ষ দেহরক্ষীর ইউনিট। একাডেমি অ্যাওয়ার্ড কিংবা বড় কোনো ফ্যাস্টিভেলের উচ্ছল জনতার ঢল নিয়ন্ত্রণে আনতে অত্যন্ত শক্তিশালী ইউনিফর্ম কর্মীরও সরবরাহ দিয়ে থাকে। এছাড়া ব্ল্যাকমেইলিং কিংবা এ ধরনের সঙ্কট নিরসনে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের দক্ষদের যোগান দিয়ে তদন্তমূলক কাজের সুষ্ঠু সমাধার ক্ষেত্রেও সংস্থাটির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।
এন্ড্রিও পোলার্ডের এত সুখ্যাতির কারণ সে যে কোনো দায়িত্ব পালনে নিখুঁত এবং তার কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণমূলক। তার কোনো ধনী ক্লায়েন্টের বাড়িতে নিরাপত্তা বিধানে সে প্রথমেই যেটা করবে তা হলো– আর্মড রিসপন্স সাইন মাটিতে বসিয়ে দেবে। এতে রাতের আঁধারে কোনো অস্ত্রবহনকারী গুপ্তঘাতক এলে মাটিতে পেতে রাখা ডিভাইসগুলো সাথে সাথে রঙিন আলো জ্বেলে সিগন্যাল দিতে থাকবে। এছাড়া ম্যানশনে ওয়াল ঘিরে নিরাপত্তারক্ষীদের টহল তো থাকবেই।
পোলার্ড তার কর্মীদের যথেষ্ট ভাতা দিয়ে থাকে। এর কারণ তাদের জীবন সবসময় হুমকির মুখে। যে কোনো ঘাতকের আক্রমণে তার কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মৃত্যুর আশঙ্কাও অমূলক নয়। তবে তার ক্লায়েন্টরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী ক্ষমতাবান ও অর্থ সম্পদের মালিক। লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের খুব কাছাকাছি থেকে কাজ করার সুবিধাও সে চতুরতার সাথে আদায় করে নেয়। এক্ষেত্রে তাকে পুলিশের সাথেও সদ্ভাব গড়ে নিতে হয়েছে। ডিপার্টমেন্টের একেবারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে নিম্নমান পুলিশের সাথেও তার ও তার সংস্থার রয়েছে ভালো সম্পর্ক-আর এখানেই তার শতভাগ কৃতিত্ব।