শরীরের প্রতি তুমুল অনিয়ম সত্ত্বেও স্কানেটের স্বাস্থ্যহানী ঘটেনি বিন্দুমাত্র। তার শরীর ছিল এক্সট্রা অর্ডিনারি।
স্কানেট আকস্মিক নিজের শরীরের প্রতি যত্নবান হয়ে উঠল– দুর্বার নিয়মিত শরীর চর্চা। মুষ্টিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিল। মেতে উঠল সে সরাসরি রিংয়ে নেমে প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখে আঘাত করতে–ধূর্ততার সাথে শিখল বক্সিং-এর ষোল কলা। নিজেকে কষ্ট দিতে ক্রমেই আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। শিকারের প্রতি বাড়ল তার আগ্রহ হত্যার খেলায় মেতে উঠল স্কানেট।
এক পর্যায়ে অ্যাথেনাকে শায়েস্তা করতে ব্যাকুল হয়ে উঠল। অভিনব এক পন্থা অবলম্বন করল স্কানেট। মাথায় এলে তাদের আরো সন্তান জন্ম দিতে হবে। পাঁচ-ছটি সন্তান তাদের ঘরে এলেই হয়তো তারা আবার আগের মতো কাছাকাছি আসতে পারবে। আর অ্যাথেনার ঊর্ধ্বগামী উচ্চাকাঙ্ক্ষারও পতন ঘটবে, ফিরে আসবে বজ স্কানেটের বুকে। কিন্তু স্কানেটের এই দূরভিসন্ধি বুঝতে পেরে অ্যাথেনা তার সন্তান বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দিল। সে বলল, তুমি যদি আরো সন্তান চাও তবে অন্য কোনো নারীর কাছে যেতে পারো। তুমি ক্রমেই দুর্বোধ্য হয়ে উঠছ স্কানেট …
অ্যাথেনার এটাই ছিল স্কানেটের প্রতি বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করার প্রথম ঘটনা। স্কানেট এতে মোটেও বিস্মিত হয়নি যে, অ্যাথেনা স্কানেটের অনাস্থার বিষয়টি জেনে গেছে। অবশ্য স্কানেট এটা লুকানোরও চেষ্টা করেনি। আসলে সে চালাকিই করেছিল। এতে স্কানেট তার স্ত্রীকে নিজের পথে চালিত করতে পারত।
অ্যাথেনার কাছে বজ ক্রমেই দুর্বোধ্য হয়ে উঠছিল। বজকে বোঝা তার পক্ষে কঠিন হয়ে উঠছিল। কিন্তু অ্যাথেনার বয়স ছিল এতই কম যে বজের প্রতি তার প্রয়োজনীয় মনোযোগ দেয়ার মতো বুদ্ধি বা চিন্তা তার আর করা হলো না। এমন কলহ তাদের জীবনে নেমে এলো, যখন অ্যাথেনার বয়স মাত্র কুড়ি। তখন কেবল তার চরিত্রের গঠন পর্ব শুরু হয়েছে।
বজ শুরু করল নতুন খেল। সে এমন কিছু ঘটনার সূত্রপাত ঘটাল, যা সত্যিকার অর্থেই নারীরা ঘৃণা করে থাকে। স্কানেট নিজেকে অ্যাথেনার কাছে এমনভাবে উপস্থাপন করল, যেন সে একেবারেই বিচার-বুদ্ধিই পড়েছিল।
বজ স্কানেট নিয়মিত তাদের কাপড়-চোপড়গুলো ড্রাই ক্লিনিংয়ের জন্য নিয়ে যেতে শুরু করল। নিজের কাজ শেষে পরিবারের আনুষঙ্গিক কাজে অ্যাথেনাকে সহযোগিতা করতে লাগল। অ্যাথেনা অভিনয় করে যেতে লাগল। অ্যাথেনার উদ্দেশ্যে বলত, হানি, আমার চেয়ে তোমার সময়ের মূল্য অনেক বেশি। তোমাকে তোমার ডিগ্রির পাশাপাশি মিউজিক ও ড্রামার ক্লাসও চালিয়ে যেতে হচ্ছে …
স্কানেটের এমন উক্তিতে অ্যাথেনার কোনো ভাবান্তর হতো না। এর কারণ বজ স্কানেটের কণ্ঠে থাকত না কোনো প্রাণ। তার সবকথাই অ্যাথেনার কাছে। মেকি মনে হতো।
একদিন অ্যাথেনা যখন গোসল করছিল বজ বগলদাবা করে তার কাপড় নিয়ে হাজির হলো সেখানে। চোখে পড়ল অ্যাথেনার নগ্ন সৌন্দর্য। সোনালি চুল, নিখুঁত ফরসা ত্বক, সুডৌল স্তন আরো সুগঠিত পশ্চাৎদেশ। অ্যাথেনার সারা সৌন্দর্য ঢেকে রয়েছে ফিনফিনে ফেনিল সাবানে। কয়েক পলক তাকিয়ে ছিল বজ অ্যাথেনার সৌন্দর্যের দিকে। তারপর স্বাভাবিক হলো সে। সূক্ষ্ম কণ্ঠে বলে উঠল, তোমার এই ড্রেসগুলো যদি তোমার মতোই বাথটাবে ভিজিয়ে দেই কেমন হয় বলে তো! কিন্তু, বজ তা করল না। অ্যাথেনার কাপড়গুলো ঝুলিয়ে দিল ক্লোসেটে। বাথটাব থেকে তাকে উঠে আসতে সাহায্য করল। গোলাপি টাওয়েল জড়িয়ে দিল নগ্ন শরীরে। তারপর ভালোবাসার আস্বাদ গ্রহণ করল সে অ্যাথেনার কাছ থেকে। কয়েক সপ্তাহ পর এমনই এক ঘটনার পুনরাবৃদ্ধি হলো। কিন্তু এবার বজ অ্যাথেনার কাপড়গুলো আর ক্লোসেটে ঝুলাল না বাথটাবের পানিতেই ভিজিয়ে দিল। হতভম্ব হলো অ্যাথেনা। কাপড় আর শরীরে মতো ভিজে গেল তার চোখও।
বজ আর অ্যাথেনার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলতে লাগল এভাবেই। এক রাতে বজ আকস্মিক ডিনার সেটের সমস্ত বাসন-কোসন ভেঙে ফেলতে উদ্যত হলো— কিন্তু শেষ অবধি তা সে করেনি। সপ্তাহ খানেক পর সে কিচেনের সব জিনিসপত্র আছড়ে ভেঙে ফেলতে লাগল। অবশ্যই এমন ঘটনা ঘটাবার কিছুক্ষণ পরই বজ অনুশোচনায় ভুগত এবং অবশেষে অ্যাথেনার কাছে ক্ষমা চাইত। সর্বদাই এমন ঘটনার পর ভালোবাসার চেষ্টা করত বজ। কিন্তু অ্যাথেনার কাছ থেকে সাড়া পেত না– এড়িয়ে চলতে লাগল অ্যাথেনা। পৃথক কক্ষে ঘুমাতে শুরু করল।
এর রাতের ঘটনা– ডিনারের সময় বজ তার হত মুষ্টিবদ্ধ করে অ্যাথেনার মুখের কাছাকাছি নিয়ে বলল, তোমার মুখটি হবে পারফেক্ট। যদি আমি ঘুষি মেরে তোমার নাকটি ভেঙে দিই, তবে সেটি হবে নতুন চরিত্রের সৃষ্টি দেখতে হবে অনেকটা মারলন ব্র্যান্ডের মতো।
বজের এমন উক্তির পর অ্যাথেনা তাৎক্ষণিক ছুটে গেল কিচেনে– পেছনে পেছনে ছুটল বজও। অ্যাথেনা ভীষণ ভয় পেয়েছিল। পেছনে বজকে দেখে একটি ছুরি তুলে ধরল বজের দিকে। বজ অ্যাথেনার এমন আচরণে উচ্চস্বরে হেসে উঠল। বলল, পৃথিবীতে এটা হচ্ছে এমন একটা কর্ম যা তোমার দ্বারা হবে না কখনো। সত্যিই অ্যাথেনা তা পারবে না কখনো। বজ খুব সহজভাবে অ্যাথেনার হাত থেকে ছুরিটি সরিয়ে নিয়ে বলল, আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করেছি, কিন্তু তুমি করলে ভুল– আসলে তোমার সেনস অব হিউমার বলতে নেই।