পাখিটার ওড়া দেখতে দেখতে হাত ঝাড়লেন ফাদার পাইটোর। তারপর দুই পাশে দুহাত বাড়িয়ে দিলেন।
জীবন মানেই এক বিস্ময়কর রহস্য।
এমনকি তার জন্যও।
.
.
লেখকের বক্তব্য
বেল সত্য নাকি কল্পনা নতুন এই যাত্রায় আমার সঙ্গী হওয়ার জন্য ধন্যবাদ। শেষ মুহূর্তে এসে আমি আপনাদেরকে এই উপন্যাসের কতটুকু সত্য আর কতটুকু কল্পনা সেটা জানিয়ে দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছি।
প্রথমে ছোটখাটো বিষয়…
ডারপা (DARPA) সত্যি সত্যিই সংযোজনযোগ্য কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি করেছে। তবে হ্যাঁ, ওরা তাতে ফ্ল্যাশ চার্জ করার অপশন রেখে কি-না সেটা আমার জানা নেই।
বইয়ের উকুফার ব্যাপারে বলব… স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাস্তবে এমন এক ধরনের ইঁদুর উদ্ভাবন করেছিল যাতে মানব নিউরাল কোষ ঢোকানো ছিল। বিজ্ঞানীরা এখন চেষ্টা করছেন কীভাবে একশভাগ মানব নিউরাল কোষযুক্ত ইঁদুর তৈরি করা যায়।
২০০৪ সালে মিউটেশনের প্রভাবযুক্ত একটি জার্মান ছেলের জন্ম হয়েছিল। যার ফলে ছেলেটার শরীরে স্বাভাবিকের চাইতে দ্বিগুণ পরিমাণে পেশি ও অতিরিক্ত শক্তি ছিল। এই ছেলেটাকে কী তাহলে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া প্রথম Sonnekonig?
১৯৯৮ সালে হিমালয়ে সাংরি-লা আবিষ্কৃত হয়। সেখানে বরফে ঢাকা পাহাড়ের মধ্যে প্রাকৃতিক পানির প্রবাহ আর সবুজ গাছপালা রয়েছে। ওখানে আর কী কী লুকিয়ে রয়েছে কে জানে?
এবার বড় বিষয়গুলোতে আসি…।
বইয়ের শুরুতে যেরকম বলেছি… বেল সত্যি সত্যিই ছিল। মাঝেমাঝে বাস্তব কাহিনি কল্পনাকেও হার মানায়। বেল নিজেই সেটার প্রমাণ। নাৎসিরা একটা অদ্ভুত ডিভাইস তৈরি করেছিল, সেটার জ্বালানি ছিল জেরাম-৫২৫ নামের একটি অজ্ঞাত বস্তু। ডিভাইসটা কীভাবে চালানো হতো সে সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। তবে এতটুকু জানা গেছে, ওটায় যখন পাওয়ার সঞ্চালিত হতো তখন প্রজেক্টের সাথে জড়িত বিজ্ঞানীরা ও কাছের গ্রামগুলোর লোজন আক্রান্ত হয়েছিল। যুদ্ধের পর বেল গায়ের হয়ে যায়, ওটার সাথে জড়িত বিজ্ঞানীদের খুন করা হয়। বেল-এর শেষ পরিণতি কী হয়েছিল সেটা আজও অজানা। এ-ব্যাপারে যদি আপনি আরও কিছু জানতে চান তাহলে আমি আপনাকে নিক কুক-এর লেখা দ্য হান্ট ফর জিরো পয়েন্ট বইটা পড়ার পরামর্শ দেব।
এই উপন্যাসে আমি অনেকটা সময় জুড়ে হেনরিক হিমল্যারের প্রাচীন বর্ণ প্রীতি, গুপ্ত সংঘ ও হিমালয়ে আর্য জাতিদের জন্মস্থান খোঁজা নিয়ে ব্যয় করেছি। সবই তথ্যগতভাবে সত্য। এমনকী উইউইলসবার্গের হিমল্যারের ব্ল্যাক কেইমলটটাও সত্য। এ-বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনি ক্রিস্টোফার হেইল-এর লেখা হিমল্যারস ক্রুসেড এবং পিটার লেভেনন্ডার আনহোলি অ্যালাইন্স পড়ুন।
সর্বশেষ, জনোজি ম্যাকফ্যাডেন-এর লেখা কোয়ান্টাম এভ্যুলুশন বইটা এই উপন্যাসের প্রাণ হিসেবে কাজ করেছে। এই বইতে মিউটেশন ও বিবর্তনবাদে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা আছে। চেতনার বিবর্তন নিয়েও লেখা আছে ওতে। বইয়ের শেষ অংশে আপনি সেটার প্রভাব দেখবেন। এরপরও যদি আপনি আরও বিস্তারিত জানতে চান তাহলে বইটি সংগ্রহ করে পড়ুন।
এবার আসি বইয়ের শেষ অংশের মতবাদ বিষয়ে। ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন বনাম বিবর্তন। আমার মনে হয় এই বই যত প্রশ্ন তৈরি করেছে তত উত্তরও জুগিয়েছে। বর্তমান বিতর্ক ভুল দিকে পরিচালিত হচ্ছে বলে আমি মনে করি। আমরা কোথা থেকে এসেছি? সেটার চেয়ে আমরা কোথায় যাচ্ছি? সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা বেশি জরুরি।
আর সেটার উত্তর জানতে হলে যে পরিমাণ রহস্য ও রোমাঞ্চের সম্মুখীন হতে হবে সেটা যেকোন ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট।
.
কৃতজ্ঞতা
উপন্যাস লেখা মানে ফাঁকা পৃষ্ঠার সাথে সময় কাটানো। এই বইয়ে অনেক ব্যক্তির ছোঁয়া জড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে চার জনের নাম উল্লেখ করছিঃ আমার সম্পাদক Lyssa Keusch, তাঁর সহকর্মী May Chen, আমার এজেন্ট Russ Galen এবং Danny Baror!
আর বরাবরের মতো বইতে তথ্য, সিকোয়েন্স ও বর্ণনাজনিত যেকোন ধরনের ভুলের জন্য দোষ সম্পূর্ণ আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি।
.
অনুবাদকের কৃতজ্ঞতা
আমার অনুবাদকৃত বইটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই বইয়ের অনুবাদের পেছনে আমার কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষীদের অবদান আছে।
ডোকাবিল্ডার বইয়ের লেখক ফরহাদ হোসেন মাসুম ভাইকে ধন্যবাদ বিজ্ঞানের বিভিন্ন জটিল বিষয় অনুবাদে সাহায্য করার জন্য। বইটিকে যথাসম্ভব নিখুঁতভাবে পাঠকদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার বান্ধবী আফসানা আক্তার বিন্দুর কাছে কৃতজ্ঞ। নিজের পড়াশোনার চাপ থাকার পরও বইটির বিভিন্ন বানান ভুল ও বাক্যে থাকা ত্রুটিগুলো দূর করার দুরূহ কাজটি সে সম্পন্ন করেছে। বইটিতে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি ছবির কোয়ালিটি উন্নত করতে সাহায্য করেছেন জিরো টু ইনফিনিটি ম্যাগাজিনের বিভাগীয় সম্পাদক সিরাজাম মুনির শ্রাবণ, তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। প্রকাশক রিয়াজ ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ ঢাউস সাইজের এই বইটির অনুবাদক হিসেবে আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য। নির্ধারিত সময়ের ২ মাস পর পাণ্ডুলিপি জমা দেয়ার পরও তিনি কোনো আপত্তি করেননি কিংবা অসন্তোষ প্রকাশ করেননি, বিষয়টা আমাকে একই সাথে লজ্জা দিয়েছে ও সম্মানিত করেছে। বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার মা শাহনাজ পারভীনের কাছে। এই বইটি অনুবাদের সময় আমার ওপর দিয়ে অনেক চড়াই-উত্রাই গেছে। ব্যক্তিগত জীবনে মানসিকভাবে অনেক দুর্দশাগ্রস্ত ছিলাম। কঠিন সময়ে শক্ত হাতে আমাকে সমর্থন দিয়ে বইটির কাজ শেষ করার তাগাদা ও উৎসাহ দেয়ার জন্য তার কাছে কৃতজ্ঞ। সন্তান হিসেবে এরকম মা পেয়ে আমি গর্বিত।