২৭। উপরের ২১ টীকা দ্রষ্টব্য। ২৮। নিচের ৩১ টীকা দ্রষ্টব্য।
২৯। কিউরি মান্সার স্থান দেলাফোসে নির্দেশ করেছেন বর্তমান কোরি এবং মাসামানা গ্রামের নিকটে, স্যাস্যানণ্ডিংয়ের উত্তর-পূর্বে এবং ইব্নে বতুতার পূর্বেকার বিরাম স্থান কারসাধু থেকে বেশী দূরে নয় (টীকা ১২ দ্রষ্টব্য)।
৩০। মিমা মনে হয় সে জেলার একটি প্রধান শহর উপরে যেটাকে ইব্নে বতুতা জাঘা নামে উল্লেখ করেছেন (টীকা ১৩ দ্রষ্টব্য)। পরবর্তীকালে এ নামটি হ্রদের উপরের অঞ্চল সম্বন্ধে প্রয়োগ করা হতো (সবতঃহ্রদ অঞ্চলসহ)। স্থানটি আধুনিক ম্যাসিনার অংশ বিশেষের সঙ্গে যুক্ত। বার্থের মত অনুসারে মিমার অবস্থান জায়গাটি এখনো বর্তমান-যদিও সেটা পরিত্যক্ত। এটা লিয়ারের কয়েক মাইল পশ্চিমে (Travels Engl. ed. v; 487)।
৩১। ১৩২৫ খ্রীস্টাব্দে গাও জয় করার পর মাসা মুসা (তুমবাতুকে যুক্ত করে নিয়েছিলেন। ইয়াটেঙ্গার মোসির (উর্ধতর ভা) আক্রমণে ১৩৩৩ সালে শহরটি লুঠ হয় এবং পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং সুলেমানের সিংহাসন আরোহণের স্বল্পকাল পরে সেটা পুনরায় নির্মিত করা হয়। হজ্বের সময় মানসা মুসার সঙ্গে কবি আস্-সাহিলির সাক্ষাৎ হয় মক্কাতে-সুলতান তাকে তার সঙ্গে সুদানে ফিরে যেতে সম্মত করেন। তিনি ছিলেন গাও এবং তুকুতুর। মসজিদের নির্মাতা। ১৩৪৬ সালে তুমবাত্তুতে তার মৃত্যু হয়।
৩২। গাও বা গাওগাও (মূল নাম কুঘার একটি রূপান্তর) কেবল পশ্চিম থেকে নিমকের রাস্তার এবং উত্তর থেকে ট্রান্স-সাহারান পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ঘাঁটি ছিল না- বরঞ্চ আন্ত মহাদেশীয় পথের ঘাঁটিও ছিল। এগারো শতাব্দীর প্রথম দিকে এটা সংঘে (সংঘয়) রাজ্যের রাজধানী হয়। এটা তখনি ঘটে যখন প্রথম সংঘে রাজত্ব ইসলামে দীক্ষিত হয়। এর উৎপত্তি বলা হয় বাবার থেকে। ১৩২৫ খ্রীস্টাব্দে মানসা মুসা সোংঘে রাজ্যকে মাল্লি সঙ্গে সংযুক্ত করে নেন। কিন্তু ১৩৩৫ খ্রীস্টাব্দে রাজবংশটি পুনরায় স্থাপিত হয় (সোন্নি পদবী নিয়ে), যদিও সেটা তখনো অন্ততঃ নামে মাত্র মল্লির অধীন ছিল–অবশ্য মূল বার্বার বংশের শেষ নরপতি সেমি আলির রাজত্বকাল শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত (১৪৬৫-৯২)। ইনি মাল্পির বদৌলতে তার রাজ্য বিস্তৃত করেন। তার উত্তরাধিকারী হন তার সোনিনকে সেনাপতি মোহাম্মদ (১৪৯৩-১৫২৯)। ইনি ছিলেন আকিয়া রাজত্বের প্রতিষ্ঠাতা এবং এর প্রভাবে সোংঘে উন্নীত হয় ক্ষমতার শীর্ষ স্থানে। অতঃপর মরোক্কানদের আক্রমণে সোংঘে সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে এবং রাজবংশ লুপ্ত হয়। এরা ১৫৯১ খ্রীষ্টাব্দে গাও তিমবুতু দখল করেন।
৩৩। মাল্পি সাম্রাজ্যে নিমকের পাশাপাশি কড়ির বিনিময় হচ্ছে ১৪ টীকায় উল্লেখিত আফ্রিকা মহাদেশ ব্যাপী অবস্থিত সেকালের বাণিজ্য সম্পর্কের চূড়ান্ত প্রমাণ যেহেতু কড়ি কেবল নিরক্ষবৃত্ত এবং মোজামবিকের মাঝখানে আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে পাওয়া যায় (Grande Encyclopedie s.v. Cauri)। ইব্নে বতুতার সময়ে সওদাগরগণ উত্তর থেকে কড়ি আমদানি করতেন (আল্-এমারি ৭৫-৭৬)।
৩৪। বারদামা উপজাতির বিশেষ করে তাদের মেয়েদের বর্ণনার সঙ্গে বার্থের তাগ হামা উপজাতির বর্ণনার ঘনিষ্ট মিল দেখা যায়। তাগ-হামগণ বাস করতো এয়ারের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে।
৩৫। তাগাদ্দা বা তাকাদ্দা ছিল সে সময়ে তুয়ারেগ দেশের বৃহত্তর শহর। এর বার্বার সুলতান নামে মাত্র মাল্পি ম্রাটের অধীন ছিলেন। ইনি সম্ভবতঃ মাসুফার (সানজাহা) প্রধান শাসক বলে পরিগণিত হতেন। তাগাদ্দার অবস্থান স্থান এখনো অনির্দিষ্ট। বার্থের নির্ধারণের উপর ভিত্তি করে এটাকে আগাদিসের ৯৭ মাইল পশ্চিম উত্তর-পশ্চিমে তেগিন্দা এ তিসেমৃত। বলে গ্রহণ করা হয়। বার্থ বছেন, এর আশেপাশে যদিও তামার অস্তিত্ব কোথাও দেখা যায় না, তথাপি এখানকার খনি থেকে এক প্রকার লাল নিমক পাওয়া যায়। গওতিয়ার এবং চাডিও (Missions au Sahara; ২য় খন্ড, ২৫৭) আওগাটা পর্বতশ্রেণীর (২৯১৫ উঃ ১৪০ প)ঃ অন্তর্গত তেমেগ্রাউন ছাড়া সাহারায় তামার অভাব উল্লেখ করেছেন–এবং বলেছেন এয়ার এবং আহাগারে যে সব তামা ব্যবহৃত হয় সেগুলি আসে ইউরোপ থেকে। তেগিদ্দায় তামার অভাব সম্বন্ধে এফ, আর, রড, ও বলেছেন। তিনি মনে করেন ইনে বতুতার তাগাদ্দার খোঁজ নিতে হবে “আগদেসের দক্ষিণে বেশ খানিকটা দূরে (পিপল আর দি ডেইল, ৪৫২-৬)। পরবর্তীজনের মত অনুসারে তেগিদা শব্দের অর্থ “পানি সংগ্রহ করে রাখার ক্ষুদ্র গহ্বর–এ নামটি বিভিন্ন স্থান সম্পর্কে ব্যবহৃত হয়ে থাকে (cf. এইচ, এস, এন, ২য় খণ্ড, ১৯৩; মারকোয়ার্ট, ৯৮)। কিন্তু তাগাদ্দায় তাখনির অস্তিত্ব আল-ওমারি কর্তৃক স্বীকৃত হয়েছে মান্সা। মুসার তথ্যের উপরে (দেয়বাইসের অনুবাদ, ১ম খণ্ড,৮০-৮১)।
৩৬। কবার হচ্ছে গোবির বর্তমান সকোতরের উত্তর দিকের দেশ-দক্ষিণে তাগাদ্দার দ্বারা সীমায়িত। এখানে মবুতুর দক্ষিণ-পশ্চিম জেলার জন্য জাঘের অবস্থান কিনা, অথবা ক্যালেম এবং ওয়াদাই পরিবেষ্টিত মধ্য অঞ্চলের জন্য কি না যা অস্পষ্টভাবে জাঘাওয়া বলে পরিচিত, সেটা অনিশ্চিত।
৩৭। এখানে নাইজেরিয়ার বর্ণ অপেক্ষা অবস্থান ক্যানেমের জন্য। এ সময়ে ক্যানেম সাম্রাজ্য মধ্য সাহারা অতিক্রম করে উত্তর দিকে ফেজান এবং পূর্ব দিকে দার ফুর এবং উত্তর নাইজেরিয়ার ভিতরে বিস্তৃত হয়েছিল। এই ইদ্রিস (১৩৫৩-৭৬)। একে ষোড়শ শতাব্দীর বর্ণর প্রসিদ্ধ ইদ্রোসার সঙ্গে জড়িত করা ঠিক হবে না) হচ্ছেন ইব্রাহিম নিকেলের ছেলে। ইনি দক্ষিণ আরবীয় বংশজাত বলে দাবী করেন। ১৩০৭-৩৭ খ্রীস্টাব্দে পর্যন্ত ক্যানেমের সুলতান ছিলেন। রাজকার্যের ঐন্দ্রজালিক গুণাবলীর বিশ্বাস হেতু নরপতির এই গোপন অধিবাস (বার্থ ১ম খন্ড, ৬৩৮–৯; মিক, উত্তর নাইজেরিয়া, ১ম খণ্ড, ২৫৪)।