১৯। মাল্পি নামটি হচ্ছে ম্যাডে বা ম্যান্ডিংয়ের ফুলানি উচ্চারণ। এটা কোনো শহরের নাম। নয়, একটি শাসক উপজাতির নাম। এর অবস্থিতি স্থান অনেক দিন থেকে তর্কের বিষয় হয়ে রয়েছে। কুলি (৮১-২পৃঃ) এর স্থান দিয়েছিলেন সেগুর নিকটে বিন্নি নামে কথিত একটি গ্রামে “সামির উপর দিকে সাত মাইল” এবং সানসারা নদীকে নাইজারের একটি বাড়ী বলে গ্রহণ করেছিলেন। দেলাফোসে (এইচ, এস, এ ২য় খণ্ড, ১৮১) এ মতটি গ্রহণ করেন যে মাল্পির অবস্থান ছিল নাইজারের বাম তীরের একটি স্থানে, এটা নিয়ামিনার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মরিবুগুর দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে কনিনা এবং কন্ডু গ্রামের সমস্তরে।…সুতরাং নিয়ামিনা থেকে কুলিকোবরা যাওয়ার বর্তমান পথের কিছুটা পশ্চিমে মাল্পি অবস্থিত। মাল্পির দশ মাইল উত্তরে অবস্থিত যে নদীটিকে ইব্নে বতুতা সানসারা নাম দিয়েছেন বার্থ দেখেছেন সে নামটা এখনো প্রয়োগ করা হয় সেই ক্ষুদ্র নদীটিকে যেটা নিয়ামিনার নিম্নদিকে নাইজারের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মারকোয়ার্ট (১০৫, ১৯১) কুলির মতটাই গ্রহণীয় মনে করেন, কিন্তু মাল্পিক স্থান নির্দেশ করেন নদীর কিছুটা নিম্নদিকে সিল্লে (সিলে) থেকে একদিনের পথ উপরে এবং এটাকে কুঘা এবং জুগার সঙ্গে অভেদ বলে মনে করেন। এটা হচ্ছে পর্তুগীজদের কুইওকাইয়া।
[এই লেখা এবং ম্যাপ তৈরি করতে গিয়ে দেখা গেল যে এম, ভাইডাল এবং এ গেইলার্ড নির্দিষ্টরূপে বললেন যে মাল্পির নাম ছিল নিয়ানি আর এর উপস্থিতি ছিল বতর্মান নিয়ানি গ্রামের নিকটে সাকারানি নদীর বাম তীরে বালাদুগুর কিছুটা উত্তরে এবং জেলিবার (দাইলিবা) দক্ষিণে। এটা একই সাম্রাজ্যের অন্যতম রাজধানী” অর্থাৎ এর অবস্থান হচ্ছে ১১:২২ উত্তরে, ৮:১৮ পশ্চিমে, ম্যাপে নির্দেশিত স্থানের প্রায় ১৫০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে। আল ‘ওমারিব মাসালিক আল-আবৃসার গ্রন্থের অনুবাদ দেমমবাইন্স, ৫২ পৃঃ ২ টীকা দ্রষ্টব্য।]
২০। দেলাফোসে বছেন “দুঘা হচ্ছে বানমালা এবং ম্যালিকেঁদের মধ্যে এক প্রকার শকুনের নাম এবং দৈত্যের নামও বটে। অনেক সময় মানুষকেও এ নাম দেওয়া হয়।”
২১। নিম্নলিখিত বিষয়টি হচ্ছে প্রথম যুগের নিগ্রো সাম্রাজ্যের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
প্রাথমিক সুদানী সাম্রাজ্য ছিল ঘাণার সাম্রাজ্য (প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল পরবর্তী সোনিনকে শাসকদের পদবী)। কোনো একটি শ্বেতকায় প্রবাসী দল চতুর্থ শতাব্দীর দিকে এই সাম্রাজ্য স্থাপন করেন। মনে হয় একাধিক বার এর রাজধানীর স্থান বদল হয়েছে। নয় থেকে এগারো শতাব্দী পর্যন্ত কুবির সোনোনকেগণ ছিলেন ঘানা সাম্রাজ্যের প্রভু ১০৭৬ খ্রীষ্টাব্দে মরক্কোর আমরভিদ কর্তৃক সাম্রাজ্যটি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত। এর ধ্বংসাবশেষের উপর স্থাপিত হয়েছিল কিছু সংখ্যক ক্ষুদ্র রাজ্য। এদের একটি ছিল কতের সোনিকে রাজত্ব-এর রাজধানী ছিল সসসাতে (সান-সাণ্ডিংয়ের পশ্চিমে)। ১২০৩ খ্রীস্টাব্দে এই ক্যান্টের সোনিকে রাজত্ব কর্তৃক ঘন পুনর্দখল করা হয়েছিল এবং সোনিনকে সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। ওয়াটার প্রতিষ্ঠার কারণও ছিল এটা। ঘানার মুসলিম অধিবাসীগণ কাফের শাসকের অধীনে বাস করতে অস্বীকার করেন-তাই তারা ওয়ালটা বিরার পানির কিনারে নিজেদের জন্য নতুন বাসস্থান প্রতিষ্ঠা করেন। (টীকা ৬ দ্রষ্টব্য)। বিজয়ী সুমানগুরু ম্যালিনকের ১৩৫ খ্রীষ্টাব্দের যুদ্ধে নিহত হন। এর নরপতি সুজাতা বা মারি-জাতা সোনিনকে সাম্রাজ্য সংযুক্ত করে নেন। তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। (৩২৯ পৃঃ দ্রষ্টব্য), এবং মাল্লিতে নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। তিনি ১২৪০ খ্রীস্টাব্দে ঘানা দখল করেন এবং সেটা ধ্বংস করে দেন। ১২৩৫ খ্রীস্টাব্দে তার মৃত্যু হয়। বংশ পরম্পরা সূত্রে পরবর্তী খ্যাতিবান ম্রাট হন মুসা (ইব্নে বতুতার মানসা মুসা)। এর রাজত্বকালে (১৩০৭ ৩২) মাল্পি সাম্রাজ্য সবচেয়ে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। মুসা ছিলেন সুনজাতার এক বোনের নাছেলে। তার ছেলে এবং উত্তরাধিকারী মা মাঘানের রাজত্ব কালে একটি সংক্ষিপ্ত সংকোচন ঘটেছিল, কিন্তু মুসার ভাই সুলেমানের রাজত্বকালে (১৩৩৬–৫৯) মাল্লি তার বিপুল ক্ষমতা এবং সম্মান পুনরুদ্ধার করেছিলেন। তার মৃত্যুর পরে অবনতি দেখা দেয় এবং সেটা তীব্রতর হয় গৃহযুদ্ধের দ্বারা। সঘে রাজত্বের (টীকা ৩২ দ্রষ্টব্য) উঘান কাল পর্যন্ত নাইজার রাজত্বগুলির মধ্যে মাল্পি রাজ্য যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল এবং ১৬৭০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত তার অস্তিত্ব বজায় ছিল।
২২। “সমস্ত অবস্থায়” কথাটার সংযোজন হচ্ছে একটি মৃদু ইঙ্গিত যে ব্যাপারটা তত ভালো নয় যতটা আশা করা গিয়েছিল।
২৩। সাতাশে রমজানের পূর্বরাত্রি লাইলাতল কারে ক্ষমতার রাত্রি” বলে কোরাণে উল্লেখিত। এরূপ বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে যে এ রাতে বেহেশতের সব দুয়ার খোলা থাকে এবং ভক্তের প্রার্থনা সাদরে গৃহীত হয়ে থাকে।
২৪। ম্যানডিংগোতে বেবে মানে হচ্ছে “মঞ্চ”। আল-ওমারি’ বেবের বর্ণনা করেছেন, একটি আইভরি বেঞ্চ রূপে।-এটা হস্তিদন্তের খিলানে আচ্ছাদিত।
২৫। অর্থাৎ “স্রাট সুলেমান” ম্যাণ্ডিগোতে “প্রভুত্ব করেছেন”।
২৬। দেলাফোসে বছেন ইব্নে বতুতা যে সব প্রচলিত রীতির বর্ণনা করেছেন এটা তারি মতো একটি রীতি। সুদানের অধিকাংশ দেশে এ রীতিটি বর্তমান কাল পর্যন্ত প্রচলিত রয়েছে।