Between the conception
And the creation
Between the emotion
And the response
Falls the Shadow.
প্রতিরক্ষা R&D সেই সময়ে প্রচণ্ডভাবে নির্ভরশীল ছিল আমদানিকৃত সরঞ্জামের ওপর। দৃশ্যত দেশীয় কোনো কিছুই সহজলভ্য ছিল না। আমরা একটা কেনাকাটার তালিকা ও আমদানি পরিকল্পনা তৈরি করলাম। কিন্তু এটা আমাকে নিরানন্দ করে তুলল। বিকল্প কিছু কি ছিল না? এই জাতি কি ধ্রুড্রাইভার-প্রযুক্তিতেই পড়ে থাকবে মুখ থুবড়ে? ভারতের মতো একটা গরীব দেশের এ ধরনের উন্নয়নের সামর্থ্য আছে?
একদিন অনেক দেরিতেও অফিসে কাজ করার সময় একজন তরুণ সহকর্মী জয় চন্দ্র বাবুকে দেখলাম বাড়িতে যাচ্ছে। কয়েক মাস আগে বাবু আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। তার সম্পর্কে একটা মাত্র বিষয় যা জানতাম তা হলো, তার মনোভাব অত্যন্ত ইতিবাচক আর স্পষ্ট। আমি তাকে আমার অফিসের ভেতর ডেকে নিয়ে আমার একটা চিন্তা প্রকাশ করলাম। তোমার কোনো পরামর্শ আছে? আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম। বাবু কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকল, তারপর বলল পরবর্তী সন্ধ্যায় আমার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে তাকে কিছু হোমওয়ার্ক করতে দেওয়া হোক।
পরের সন্ধ্যায় নির্ধারিত সময়ের আগেই বাবু আমার কাছে এল। প্রতিজ্ঞায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল তার মুখ। আমরা এটা করতে পারব, স্যার! আরএটিও সিস্টেম প্রস্তুত করতে পারব আমদানি করা জিনিস ছাড়াই। একমাত্র বাধা হচ্ছে। সাবকন্ট্রাক্টিং আর প্রকিওরমেন্ট সম্পর্কে সংগঠনের অস্থিতিস্থাপক মনোভাব। কিন্তু আমাদানি এড়াতে হলে এ দুটোর সাহায্য নিতেই হবে। সে আমাকে সাতটা পয়েন্ট দিল। পুরো সংগঠনের পরিবর্তে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক অনুমোদন, পদমর্যাদা যাই হোক এ কাজে সংশ্লিষ্ট প্রতিটা কর্মীর জন্য বিমান ভ্রমণ, কেবল একজনের কাছে জবাবদিহিতা, এয়ার-কার্গোর মাধ্যমে মালামাল উত্তোলন, প্রাইভেট সেক্টরে সাব-কন্ট্রাক্ট, কারিগরি প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে কাজের আদেশ, এবং অভিযানমূলক ব্যয়ের প্রসিডিওর।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের দাবি অশ্রুতপূর্ব, তবু তার প্রস্তাবে কিছু যুক্তি দেখতে পেলাম আমি। আরএটিও প্রকল্প ছিল একটা নতুন খেলা, সুতরাং নতুন নিয়ম যদি এ খেলায় প্রযুক্ত হয় তাতে ভুল কিছু নেই। আমি একটা পুরো রাত ধরে বাবুর পরামর্শের এপিঠ-ওপিঠ ভেবে দেখলাম এবং শেষ পর্যন্ত বিষয়টা অধ্যাপক সারাভাইয়ের কাছে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলাম। অধ্যাপক সারাভাই দ্বিতীয়বার ভাবলেন না। প্রস্তাব অনুমোদন করলেন।
বাবু উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবসায় বিচারবুদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেছিল। বিদ্যমান কর্ম প্যারামিটারের মধ্যে সবকিছু দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিতে হলে তোমাকে নিয়োগ করতে হবে অধিক লোকবল, অধিক উপাদান, অধিক অর্থ। তুমি তা না করতে পারলে তোমার প্যারামিটার বদলাও! বাবুর মধ্যে ছিল সহজাত ব্যবসায়ী মানুষ, ফলে আমাদের সঙ্গে বেশিদিন সে থাকেনি। আইএসআরও ছেড়ে সে চলে গিয়েছিল নাইজেরিয়ায়। আর্থিক বিষয়ে বাবুর সাধারণ জ্ঞানের কথা আমি কখনও ভুলতে পারব না।
আরএটিও মোটর কেসিংয়ের জন্য ফিলামেন্ট ফাইবার গ্লাস/এপোক্সি ব্যবহার করে একটা কম্পোজিট স্ট্রাকচারের জন্য আমরা একটা পন্থা অবলম্বন করেছিলাম। একটা হাই এনার্জি কম্পোজিট প্রোপেল্যান্ট এবং একটা ইভেন্ট-বেজড ইগনিশন ও জেটিসনিং সিস্টেমও আমরা তৈরি করেছিলাম যথাসময়ে। এয়ার ক্র্যাফট থেকে জেট একপাশে সরিয়ে দেবার জন্য একটা ক্যান্টেড নোজলের নকশা করা হয়েছিল। প্রকল্প শুরুর দ্বাদশ মাসে আমরা আরএটিওর প্রথম স্ট্যাটিক পরীক্ষা চালাতে সক্ষম হলাম। পরবর্তী চার মাসের মধ্যে আমরা আরও ৬৪টি পরীক্ষা চালাই। অথচ প্রকল্পে আমরা কাজ করছিলাম মাত্র ২০ জন প্রকৌশলী!
.
৬.
ভবিষ্যতের স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (এসএলভি) এই সময়েই পরিকল্পিত হয়েছিল। মহাশূন্য প্রযুক্তির অপরিসীম আর্থসামাজিক কল্যাণের বিষয়টি বুঝতে পেরে অধ্যাপক সারাভাই ১৯৬৯ সালেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, আমাদের নিজেদের স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণে দেশীয় সামর্থ্য অর্জনের কাজটি পুরো দমে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল ও বড়ো আকৃতির রকেট উৎক্ষেপণের জন্য একটি সম্ভাব্য জায়গার সন্ধানে আকাশ থেকে পূর্ব উপকূল পর্যবেক্ষণে ব্যক্তিগতভাবে অংশ নিয়েছিলেন।
অধ্যাপক সারাভাই পূর্ব উপকূলের দিকে মনোযোগ স্থির করেছিলেন তার কারণ, পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘূর্ণনের পুরো সুবিধা যাতে নিতে পারে লঞ্চ ভেহিকল। তিনি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করলেন মাদ্রাজ (এখন চেন্নাই) থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে শ্রীহরিকোটা দ্বীপ, আর এভাবেই জন্ম নিল এসএইচএআর রকেট লঞ্চ স্টেশন। কাস্তে আকৃতির দ্বীপটি চওডায় ছিল সর্বোচ্চ ৮ কিলোমিটার আর অবস্থান ছিল উপকূল বরাবর। মাদ্রাজ নগরীর সমান সেটা বড়ো ছিল। এর পশ্চিম প্রান্তভাগে সৃষ্টি হয়েছিল বাকিংহাম ক্যানাল ও পুলিক্যাট লেক।
১৯৬৮ সালে আমরা গঠন করলাম ইন্ডিয়ান রকেট সোসাইটি। এর কিছুদিন পরেই, ইনকসপারকে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমী (আইএনএসএ)-এর অধীনে একটা অ্যাডভাইসরি বডি হিসাবে পুনর্গঠিত করা হলো। অন্যদিকে দেশে মহাকাশ গবেষণা পরিচালনার জন্য ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাটমিক এনার্জি (ডিএই)-এর অধীনে সৃষ্টি করা হলো ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (আইএসআরও)।