সেই সময়ে আমি ছিলাম ইনটেফের সবচেয়ে প্রিয়, তার বিশেষ পছন্দের। যখন বুঝতে পারলেন, আমি তার প্রতি অবিশ্বস্ত ছিলাম, তার আত্মগরিমায় এতো লেগেছিল ব্যাপারটা, রাগে পাগল হয়ে উঠলেন।
র্যাসফার এসেছিল আমাদের নিয়ে যেতে। এক জোড়া মুরগির ছানার মতোই দুই হাতে দুজনকে ধরে হাজির করেছিল ইনটেফের ব্যক্তিগত প্রকোষ্ঠে। ওখানে সমস্ত কাপড় ছিঁড়ে ফেলে নগ্ন করা হলো আমাদের; আমার মনিব আধশোয়া হয়ে দেখছিলেন পুরোটা সময়, এখন যেমন দেখছেন। কাঁচা চামড়ার ফিতে দিয়ে এলাইদার দুই হাত পা বেঁধে দিয়েছিল র্যাসফার। আতঙ্কে বিবশ, কাঁপছিল ও; কিন্তু কাঁদোনি একটুও। আমার ভালোবাসা কিংবা ওর সাহসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ সেই মুহূর্তে যেনো আরো বেড়ে গিয়েছিল ।
ইশারায় আমাকে তাঁর সামনে উবু হতে বলেছিলেন আমার মনিব । চুলের মুঠি ধরে ফিসফিস করে কানে কানে বলছিলেন, তুমি কি আমাকে ভালবাসো, টাইটা? হয়তো ভেবেছিলাম, মিথ্যে বলে এলাইদাকে বাঁচাতে পারব, তাই বলেছিলাম, জ্বী।
আর কাউকে ভালবাসো তুমি, টাইটা? মসৃণ স্বরে বলেছিলেন তিনি। কাপুরুষ আর বিশ্বাসঘাতক আমি, উত্তরে বলেছিলাম, না, মালিক। আমি কেবল আপনাকেই ভালোবাসি। কেবল তখনই আমি শুনতে পেলাম, এলাইদা কাঁদছে। আমার জীবনে শোনা সবচেয়ে করুণ শব্দ ছিলো সেই কান্নার ।
র্যাসফারকে ডেকেছিলেন ইনটেফ, এখানে নিয়ে আসো মাগীটাকে। এমনভাবে রাখো, যেনো নিজেদের দেখতে পায় ওরা। ওকে নিয়ে কী করা হচ্ছে, তার সবকিছু যেনো পরিষ্কার দেখতে পায় টাইটা।
আমার দৃষ্টিপথে এলাইদাকে নিয়ে আসতে দেখলাম, দাঁত বের করে হাসছে র্যাসফার। এরপরে স্বর উঁচু করলেন ইনটেফ, ঠিক আছে, রাসফার। এবারে শুরু করতে পারো তুমি।
এলাইদার কপালের উপর দিয়ে পাকানো দড়ির ফাঁস রেখেছিল র্যাসফার। কিছু দূরত্ব পরপর গিঁট বাঁধা সেটায়। ওর পেছনে দাঁড়িয়ে ছোটো, শক্ত অলিভ কাঠের একটা ব্যাটন পেঁচালো সে চামড়ার ফিতেটায়; মোচড় দিতে লাগলো যতক্ষণ পর্যন্ত না এলাইদার মসৃণ, নরম ত্বকে সেঁটে আসে। কর্কশ চামড়ার গিটগুলো এলাইদার ত্বকে চাপ দিতেই ব্যথায় গুঙিয়ে উঠেছিল ও।
ধীরে, র্যাসফার, ইনটেফ বলে উঠেছিলেন, এখনও অনেক সময় বাকি আছে।
র্যাসফারের বিশাল, লোমশ হাতে খেলনার মতো লাগছিল অলিভ কাঠের ব্যাটনটা। খুব সতর্কতার সাথে, ধীরে মোচড় দিতে লাগলো সে ওটায় । গিঁটগুলো যতই চেপে বসছিল, এলাইদার মুখ হা হচ্ছিল ক্রমশ, কাশির দমকে বেরিয়ে যেতে লাগলো ফুসফুঁসের সমস্ত বাতাস। ত্বকের রঙ সরে গিয়ে মরা ছাই ধারণ করেছিল মুখাবয়ব।
হাসতে হাসতেই, ব্যাটনে শেষ একটা মোচড় দিতে দড়ির গিঁটগুলো দেবে গেলো এলাইদার কপালে । মাথার আকার পাল্টে গেলো তার। দড়ির প্রতিটি মোচড়ের সাথে সাথে ক্রমেই লম্বা হয়ে যাচ্ছিল এলাইদার মাথা। ওর একটানা চিৎকার ছুরিকার মতো বিঁধছিল আমার বুকে। যেনো চিরকাল ধরে চলছিল সেই মুহূর্তগুলো।
এরপরে ফেটে গেলো মাথার হাড়। মৃদু শব্দটা ঠিকই শুনতে পেয়েছিলাম আমি। হঠাৎ থেমে যায় সেই ভয়ঙ্কর, হৃদয় বিদীর্ণ করা চিৎকার, র্যাসফারের হাতে শিথিল হয়ে পড়ে এলাইদার দেহ।
যেন একযুগ পর, আমার মুখ তুলে ধরে চোখে চোখে তাকালেন ইনটেফ। দুঃখের সাথে বললেন, ও চলে গেছে, টাইটা। শয়তানী ছিলো একটা, তোমাকে নষ্ট করে গেছে। আর যেনো এমন না ঘটে, নিশ্চিত করতে হবে আমাকে। আরো কোনো শয়তানীর হাত থেকে বাঁচাতে হবে তোমাকে।
আবারো র্যাসফারকে ইশারা করলেন ইনটেফ, এলাইদার নগ্ন প্রাণহীন দেহ। পা ধরে টেনে চাতালে নিয়ে গেলো সে। তুবড়ে যাওয়া মাথার পেছনটা ঘন ঘন বাড়ি খেতে লাগলো সিঁড়ির ধাপে, চুলগুলো হেঁচরে যাচ্ছে মাটিতে। শক্তিশালী কাঁধের ব্যবহারে বহুদূরে, নদীতে ছুঁড়ে ফেলল র্যাসফার নিহত এলাইদাকে। শূন্যে পাক খেল ওর নিপ্রাণ, ধবধবে হাত-পা; পানিতে আছড়ে পড়লো। দ্রুতই তলিয়ে গেলো দেহটা, চুলগুলো ছড়িয়ে পড়ল পানিতে, নদীর আগাছার মতো।
ঘুরে দাঁড়িয়ে চাতালের শেষ মাথার দিকে চললো র্যাসফার, ওখানে দুজন লোক গনগনে কয়লায় কি যেনো পড়াচ্ছিল। পাশেই কাঠের পাটাতনে রাখা ছিলো পুরোদস্তুর শল্যবিদের যন্ত্র। সেদিকে এক পলক তাকিয়ে অনুমোদনের হাসি হেসেছিল র্যাসফার । ফিরে পঁড়িয়ে, মনিব ইনটেফের সামনে মাথা ঝোকাল সে। সবকিছু তৈরি।
এক আঙুলে আমার কান্না-চর্চিত মুখ পরিষ্কার করেছিলেন ইনটেফ, এরপরে আঙুলটা চুষলেন, যেনো আমার বেদনার স্বাদ নিচ্ছেন। এদিকে এসো, আমার সুন্দর সঙ্গী, ফিসফিস করে বলেছিলেন তিনি। পায়ের উপর দাঁড় করিয়ে চাতালে নিয়ে এলেন আমাকে। কান্নার দমকে এতো অন্ধ ছিলাম আমি, নিজের সর্বনাশের কোনো ইশারা তখনও পাই নি। দুজন সৈনিক জেঁকে ধরেছিল আমার কাঁধ। টেরাকোটা ছকের মেঝের উপর চিৎপাত করে ধরে রেখেছিল ওরা আমাকে, কবজি আর গোড়ালিতে বজ্রকঠিন মুঠোতে। শুধু মাথা নাড়তে পারছিলাম ।
আমার মাথার কাছে ঝুঁকে এসেছিলেন ইনটেফ। রাসফার বসেছিল ছড়ানো দুই পায়ের মাঝে।
ওই শয়তানী তুমি আর কখনও করবে না, টাইটা। কেবলমাত্র তখন আমি টের পেলাম, র্যাসফারের ডানহাতে রয়েছে একটা তামার তৈরি শল্যবিদের ছুরি । আমার মনিব ইশারা করতেই মুক্ত হাত দিয়ে আমার বিশেষ অঙ্গ টেনে ধরেছিল র্যাসফার ।