অভিপ্রায় –একসময় আমং পরিবারের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন এবং সোনিয়া আর্মষ্ট্রং ছিলেন এঁর ধর্মকন্যা এবং বিশেষভাবে স্নেহের পাত্রী।
অ্যালিবাই –রাত্রি বারোটা থেকে দুটো (কণ্ডাক্টর ও পরিচারিকা কর্তৃক সমর্থিত)।
বিরুদ্ধ সাক্ষ্য– সন্দেহজনক গতিবিধি কিছু নেই।
কাউন্ট আন্দ্রেনী –হাঙ্গেরীয়। কূটনৈতিক পাসপোর্ট। ১৩ নং বার্থ, প্রথম শ্রেণী।
অ্যালিবাই –রাত্রি বারোটা থেকে দুটো (রাত্রি একটা থেকে একটা পনের মিনিট পর্যন্ত সময়টুকু বাদে বাকি সময় কণ্ডাক্টর কর্তৃক সমর্থিত)।
কাউন্টেস আন্দ্রেনী –কাউন্ট আন্দ্রেনীর স্ত্রী। ১২ নম্বর বার্থ, প্রথম শ্রেণী।
অভিপ্রায় –কিছুই নেই।
অ্যালিবাই বারোটা থেকে দুটো ( ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন ওঁর স্বামী কর্তৃক সমর্থিত) কামরায় ঘুমের ওষুধ পাওয়া গেছে।
কর্নেল আর্বাথনট –ইংরেজ। ১৫ নম্বর বার্থ, প্রথম শ্রেণী।
অভিপ্রায় –কিছু নেই।
অ্যালিবাই– বারোটা থেকে দুটো (একটা ত্রিশ মিনিট পর্যন্ত ম্যাককুইনের সঙ্গে গল্প করছিলেন। তারপর নিজের কামরায় যান ম্যাককুইন ও কণ্ডাক্টর কর্তৃক সমর্থিত)।
বিরুদ্ধ সাক্ষ্য –পাইপ ক্লিনার।
সাইরাস হার্ডম্যান –আমেরিকান। ১৬ নম্বর বার্থ, দ্বিতীয় শ্রেণী।
অভিপ্রায় –অজ্ঞাত।
অ্যালিবাই– বারোটা থেকে দুটো (নিজের কামরাতেই ছিলেন ম্যাককুইন ও কণ্ডাক্টর কর্তৃক সমর্থিত)।
বিরুদ্ধ সাক্ষ্য –কিছু নেই।
আন্তেলিও ফলকারেল্লি –জন্মসূত্রে ইতালিয়ান। বর্তমানে আমেরিকার নাগরিক। ৫ নম্বর বার্থ, দ্বিতীয় শ্রেণী।
অভিপ্রায় –অজ্ঞাত।
অ্যালিবাই –বারোটা থেকে দুটো (মাস্টারম্যান কর্তৃক সমর্থিত)।
বিরুদ্ধ সাক্ষ্য –কিছু নেই। তবে যে অস্ত্রের সাহায্যে রাশেটকে হত্যা করা হয়েছে সেটি ব্যবহার করা এঁর পক্ষে সম্ভব বলে মনে হয়। কুকের মতে লোকটি সন্দেহজনক তালিকায় পড়ে।
মেরী ডেবেনহ্যাম –ইংরেজ। ১১ নম্বর বার্থ, দ্বিতীয় শ্রেণী।
অভিপ্রায় –কিছু নেই।
অ্যালিবাই –বারোটা থেকে দুটো (গ্রেটা অঁলস কর্তৃক সমর্থিত)।
বিরুদ্ধ সাক্ষ্য –পোয়ারোর কাছে ইনি নিজের বক্তব্যের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে অসম্মত হন।
ইল্ডগ্রেদ স্মিট –জার্মান। ৮ নম্বর বার্থ, দ্বিতীয় শ্রেণী।
অভিপ্রায় –কিছু নেই।
অ্যালিবাই –বারোটা থেকে দুটো (কণ্ডাক্টর ও রাজকুমারী কর্তৃক সমর্থিত কামরায় ঘুমোচ্ছিলেন)। বারোটা আটত্রিশ মিনিট নাগাদ কণ্ডাক্টর ডেকে তোলে। তারপর কত্রীর কামরায় গেছিলেন।
দ্রষ্টব্য– যাত্রীদের এবং কণ্ডাক্টরের সাক্ষ্য থেকে সাধারণভাবে জানা যাচ্ছে যে রাত্রি বারোটা থেকে একটা এবং একটা পনের মিনিট থেকে দুটোর মধ্যে রাশেটের কামরায় কেউই ঢোকেনি বা বেরোয়নি। একটা থেকে একটা পনের মিনিট এই সময়টুকুর জন্য কণ্ডাক্টর পাশের কোচে গেছিলেন।
কুক ব্যাগদুটো ফেরত দিলেন।
কিছু হদিশ করতে পারেলেন না মঁসিয়ে পোয়ারো।
এবার এই কাগজটা দেখুন বলে এগিয়ে দিলেন পোয়ারো।
.
০২.
দশটি প্রশ্ন
এক : রুমালের উপর এইচ অক্ষরটি তোলা আছে। রুমালটি কার?
দুই : পাইপ ক্লিনার ফেলে দিয়েছিলেন কে? কর্নেল আবাথনট না আর কেউ?
তিন : লাল কিমানো পরা মহিলাটি কে?
চার : কণ্ডাক্টরের ছদ্মবেশে পুরুষ বা স্ত্রীলোকটি কে?
পাঁচ : ঘড়ির কাঁটা একটা পনের বেজে বন্ধ। এর ইঙ্গিত কি?
ছয় : হত্যা কি ওই সময় হয়?
সাত : না ওই সময়ের আগে?
আট : অথবা পরে?
নয় : একজনের বেশি লোক ছোরা মেরেছিল তার নিশ্চয়তা কি?
দশ : অন্য কি ব্যাখ্যা ক্ষত চিহ্নগুলোর হতে পারে?
রুমাল দিয়েই শুরু করা হল। এইচ অক্ষর দিয়ে শুরু শ্রীমতী হার্বাড, কুমারী হারমিয়োন ডেবেনহ্যাম। আর শ্রীমতী ইল্ডগ্রেদ স্মিট।
এই তিন জনের মধ্যে?
মিস ডেবেনহ্যাম নিজেকে হারমিয়োন বলতেই পছন্দ করেন। একটু সন্দেহজনক চরিত্রের কারণ উনি কিছু সাক্ষে ভাঙ্গেননি।
শ্ৰীমতী হার্বাডের রুমাল বলেই মনে হয় বললেন ডাক্তার কেননা উনি আমেরিকান এবং রুমালটাও দামী। সবাই জানে পছন্দ হলে দামের জন্য পরোয়া নেই আমেরিকানদের।
শ্ৰীমতী স্মিটের যে রুমালটা নয় আপনারা দুজনেই তাহলে একমত।
হ্যাঁ। বেশ দামী উনিই তো বলে গেলেন।
এবার দ্বিতীয় প্রশ্ন পাইপটা কি কর্নেল আবাথনটের?
যেহেতু ইংরেজরা চট করে ছোরাছুরি চালায় না এবং কর্নেলের ওপর যাতে সন্দেহটা যায় সেজন্যই হয়ত ওটাকে রাশেটের কামরায় ফেলে রাখা হয়েছিল।
কেউ দুটো জিনিষই ভুল করে ফেলে যাবে এটা ঠিক নয়, ডাক্তার বললেন। অবশ্য পাইপক্লিনারের কথাটা আলাদা। এটা ইচ্ছাকৃত এবং কর্নেল স্বচ্ছন্দেই বললেন যে তিনি ঐ পাইপক্লিনারেই ব্যবহার করে অন্ধকারে আ সৈটাই প্রশ্ন।
কিমানোটার প্রসঙ্গে সম্পূর্ণ অন্ধকারে আছি। কুক এবং ডাক্তারের একই মত।
কণ্ডাক্টরের ছদ্মবেশে পুরুষ বা মহিলাটি কে সেটাই প্রশ্ন।
যারা নয় বলা সহজ। যাদের বাদ দেওয়া যেতে পারে তারা হলো হার্ডম্যান, কর্নেল, ফলকারেল্লি, কাউন্ট আন্দ্রেনী, আর ম্যাককুইন এঁরা যথেষ্ট লম্বা। শ্রীমতী হার্বাড, শ্রীমতী স্মিট আর গ্রেটা অঁলস আর ফলকারেল্লি জানিয়েছে যে মেরী ডেবেনহ্যাম বা মাস্টারম্যান কেউই কামরা ছেড়ে বাইরে বেরোয়নি। শ্রীমতী স্মিট বলেছে রাজকুমারী তার কামরায় ছিলেন। কাউন্ট বলেছেন তার স্ত্রী ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। ব্যাপারটা খুবই জটিল হল।