মিঃ জ্যাপ বিধিমতো সকলকে নিয়ে কয়েকটা কাজ করতে চান। ডাঃ ব্রায়ান বললেন যে, তার কাছে বাঁকানল বা অন্য কোনো অস্ত্র লুকানো ছিল না। রজার্স সেটা দেখবে, বললেন তিনি। ছোটো বাক্সে রাখা সেই কাটাটাকে দেখিয়ে তার সম্পর্কে ডাক্তারকে ঢপ জিজ্ঞাসা করলেন।
ব্রায়ান বললেন, আদিবাসীরা কিউবার বিষ ব্যবহার করে। উটকো লোকের কাছে বিষ পাওয়া যেতে পারে। জ্যাপ ইয়ার্কি করে ডাক্তারকে ভালো করে খুঁজতে বললেন।
তারা দুজন মানে রজার্স এবং জ্যাপ ঘর থেকে বেরোলেন। জ্যাপ ও পোয়ারো প্লেনের মধ্যে তার ঘোড়াকে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বললেন। হাতের ছাপ নেবার জন্য একজন লোক ও ফটোগ্রাফার এখুনি এসে পড়বে তা বললেন। এরপর দুজন পরিচারক পাসপোর্ট নিয়ে এলেন। মেরী মরিসো ফরাসি–পাসপোর্ট নিয়ে এলেন। মেরী মরিসো ফরাসি-পাসপোর্ট দেখে জ্যাপ তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তারা মাদামের কি ব্যবসা তা বলতে পারল না। ছোটো পরিচারক বলল, কদিন আগে সকালের প্লেনে তাকে দেখেছিল। সেটা প্যারিস থেকে আটটায় ছাড়ে। মিচেল জানালো সে সম্ভবত দুটোর সময় চ্যানেলের উপর দিয়ে উড়বার সময় তাকে কফি দেওয়ার সময় তার সঙ্গে জীবিত অবস্থায় দেখা হয়েছিল। মিচেলকে জিজ্ঞাসা করায় সে বলল কফি দেওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পর শেষ তার সঙ্গে মিচেলের দেখা হয়েছিল। তিনি তখন বোধহয় মারা গেছিলেন। জ্যাপ তীরটি দেখালে সে তা দেখেনি বলল।
জ্যাপ তাদের কিভাবে খাবার দেয় জিজ্ঞাসা করলেন। তারা বলল তারা পিছন দিক থেকে সামনের দিকে খাবার দেয়। পোয়ারো মাথা নাড়লেন। জ্যাপ মহিলা প্লেনে কারো সাথে কথা বা সম্মতিসূচক ঘাড় নেড়েছিলেন কিনা জিজ্ঞাসা করায় তারা না বলল। হেনরি মিচেল ব্যাপারটি তার বিশ্রী লেগেছে জানাল। জ্যাপ বললেন এটা ঠিক, কিন্তু তিনি তার জন্য মিচেলকে দোষী করতে চান না। তিনি তাদের চলে যেতে বললেন।
মঁসিয়ে পোয়ারো একটি প্রশ্ন করার অনুরোধ জানাল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তারা দুজন (পরিচারক) প্লেনের মধ্যে একটা ভীমরুল দেখতে পেয়েছিল কিনা। পোয়ারোকে তারা জানাল তারা ভীমরুল দেখতে পায়নি। একি ভুল বলে তিনি বললেন যে একটা ভীমরুল ছিল যা এখন কোনো যাত্রীর ডিসে পড়ে রয়েছে। তারা বলল যে তা হতে পারে, তবে তারা দেখেনি। পরিচারকরা ঘর থেকে বেরোতে প্লেনে এক ভদ্রমহিলা কাউন্টেস ছিলেন তাকে ডাকার কথা জ্যাপ বললেন।
মঁসিয়ে পোয়ারো জ্যাপকে বললেন যে তিনি সকল যাত্রীর মালপত্র খুঁটিয়ে তল্লাশি করবেন। এটা তার মনে হয়। জ্যাপ বাঁকা নল খুঁজবার জন্য এই কথা বলেছিলেন। তার ধারণা লেখক দুষ্কর্ম করার জন্য তীর ছুঁড়েছেন। জ্যাপ সকলকে তল্লাশি করবেন এই মনস্থ করলেন।
একটা সঠিক তালিকা করা যেতে পারে–পোয়ারো একটা আভাস দিলেন। যাত্রীদের মালপত্র থেকে কি খোঁজা হচ্ছে সে বিষয়ে সঠিক হতে জ্যাপ পোয়ারোকে বললেন এবং পোয়ারো সঠিক জিনিসটি কি তা জানেন না বলায় জ্যাপ তাকে সবকিছুকে কঠিন করে দেখতে একথা বললেন। লেডি হরবেরিলকে ডেকে পাঠানো হল।
হরবেরিল নিজেকে আর্যের পত্নী পরিচয় দিলেন। ঠিকানা জানালেন হরবেরিল চেজ, সাসেক্স, এবং ৩১৫ লন্ডন। তিনি লা পিনেত থেকে প্যারিস হয়ে লন্ডন যাচ্ছেন, মৃতা মহিলা সম্পূর্ণ তার অপরিচিত। তিনি সামনে মুখ করে বসে থাকায় পেছনের ঘটনা দেখার সুযোগ তার হয়নি। যিনি পরিচারক দুজন ছাড়া কাউকে যেতে দেখেননি। দুজন ব্যক্তিকে তিনি প্রসাধন করে যেতে দেখেছেন। তিনি ভীমরুল দেখেননি।
এরপর মিসেস ভেনেসিয়া অন্যকার সাক্ষ্য হুবহু তার বন্ধুর মতোই। ঠিকানা লিটল প্যডক্স হরবেরিল সাসেক্স। তিনি পিছনের কয়েকজন যাত্রীর মধ্যে একটি ভীমরুল মারার চেষ্টা করতে করতে একজনকে খাবার দিয়ে যাবার পর ভীমরুল মারতে দেখেন।
জ্যাপ মঁসিয়ে পোয়ারোকে ভীমরুল সম্পর্কে বেশি উৎসাহ বলে দাবী করলেন। তার মতে ফরাসি লোকদুটো যারা বিদেশী ছাপমারা ঝরঝরে স্যুটকেস নিয়ে এসেছে তাদের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করলেন। তিনি প্যারিসের সেরা গোয়েন্দা দপ্তরের সাহায্য নিতে চান। কিন্তু পোয়ারো বললেন এই জ্যাপ পদবীযুক্ত লোকদুটি প্রত্নতত্ত্ববিদ। পিতা ও পুত্র যারা পারস্যে একটা খননকার্য সেরে মাত্র কয়েকদিন আগে দেশে ফিরেছেন। জ্যাপ কিছুটা অবিশ্বাসী তাদের প্রতি। তার তাদের গুণ্ডা মনে হয়। কিন্তু পোয়ালরা তার যুক্তি খণ্ডন করেন। পিতা আরল্যান্ড জ্যাপ সম্পূর্ণ অপরিচিতা মহিলাটির মৃত্যুর সম্পর্কে কিছুই জানেন না। কারণ তিনি তার পুত্রের সঙ্গে দরকারী আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন। পুত্র বলল যে ভীমরুলের অত্যাচারে বিরক্ত হয়ে তাকে মেরে ফেলে।
শেষে এলেন মিঃ ফ্যান্সি। তিনি বাঁকানল সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন। তার নিজের কাছে ছিল এ কথা জানার সাথে সাথে তাকে আক্রমণ করলেন জ্যাপ। এ বিষয়ে তিনি যে কথাটা বললেন তা হল তিনি বই লিখছেন যাতে এরকমভাবে খুন করা হয়। তিনি আঙুলের ছাপ বাঁকানলের উপর কিভাবে পড়ে তা দেখার জন্য চ্যারিং ক্রস রোডে বাঁকানল কিনেছিলেন। তার এক চিত্রশিল্পী বন্ধু লাল পিঁপড়ের রহস্য বলে একটা বই-এর যথেষ্ট অনুগ্রহ করে এর একটা ছবি এঁকে দিয়েছিল। আঙুলের ছাপ সমেত অত্যন্ত অসংলগ্নভাবে তিনি এই কথাগুলো বললেন।মিঃ ফ্যান্সির কাছে যেতে বইটা যখন চাওয়া হল তখন তিনি বললেন ওটা সঙ্গে নেই। তিনি বললেন যে ঘটনা ঘটার অনেক আগে মহিলার পাশ দিয়ে গেলেন বর্ষাতির পকেট থেকে টাইম টেবিল আনতে। বাকি প্রশ্নের নেতিবাচক উত্তর মিলল। তিনি ভীমরুল দেখেছিলেন। কিন্তু সেটিকে তিনি মারতে পারেননি। তারও নাম-ঠিকানা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হল।