–তাহলে রাতের পর রাত আমি সেই স্বপ্নটা–ফ্রেসার বলে উঠলো।
–আসলে এটা একটা হৃদয় বদলের ব্যাপার। পোয়ারো ব্যাখ্যা করে বোঝাতে লাগলো। বেটি বার্নার্ডের মৃত্যুর পর সেই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে ওর দিদি মেগান। তবে এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে আপনারা কেউ কাছাকাছি হতে পারেননি। সেগুলো স্বপ্নের আকারে প্রতিফলিত হয়েছে। তবে মঁসিয়ে ফ্রেসার, আপনাকে একটা কথা জানিয়ে রাখি, বেটি বার্নার্ডের পরিবর্তে যাকে আপনি আপনার মনের অন্তঃস্থলে স্থান দিয়েছেন তার সহযোগিতা আপনি সবসময় পাবেন, এটা আমার ধারণা।
লজ্জায় মেগান ও ফ্রেসারের মুখ রাঙা হয়ে উঠলো।
এবার সুযোগ বুঝে আমি জানতে চাইলাম, আচ্ছা পোয়ারো, সেদিন ইস্টবোনের হোটেলে বসে এমন অদ্ভুত খেলা খেললে কেন?
–আমি প্রত্যেককে প্রশ্ন করার মাধ্যমে মাদমোয়াজেল গ্রে-র উত্তরের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলোম। এই ফাঁকে মঁসিয়ে ফ্রাঙ্কলিনের মনের ইচ্ছা বুঝে নেওয়া যাবে। এটাই ছিল আমার প্রধান উদ্দেশ্য।
-সত্যি, আপনি সেদিন কি প্রশ্নটাই না করেছিলেন..থরা মিস্টি রেগে পোয়ারোকে বলল।
–হ্যাঁ, আপনিও সঠিক জবাব দেননি।
-টাইপ মেশিনের বোতামে যে আঙুলের ছাপের কথা বললে, আমি কৌতূহলী হয়ে জানতে চাইলাম।
–এই কথাটা কেন বলেছিলাম জানো? তোমার মনকে সন্তুষ্ট করার জন্য। আসলে সমস্ত মেশিন খুঁজেও কোনো আঙুলের ছাপ পাওয়া যায়নি।
এরপর চারদিন কেটে গেল।
–এ অবস্থায় আমার কি করা উচিত? কাস্ট সরাসরি পোয়ারোর দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনি যে কাগজের প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন…আমার জীবনী ও ইতিহাস তারা ছাপবে…বিনিময়ে আমি পাবো একশো পাউন্ড…বলুন তো, আমার কি করা ঠিক?
আপনি ওদেরকে জানিয়ে দিন যে আপনার জীবনী কাগজে প্রকাশ করতে হলে পাঁচশো পাউন্ড আপনাকে দিতে হবে। এর একটা পয়সা কম হলে আপনি রাজি হবেন না। আপনার মতো এমন বিখ্যাত মানুষ সারা ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় কেউ নেই।
আনন্দে কাস্টের চোখে জল এসে গেল–হ্যাঁ, আজ যদি আমার মা জীবিত থাকতেন..আর হ্যাঁ, লিলির মতো মেয়ে হয় না। এই বিয়ের যৌতুক হিসাবে ওকে আমি একটা আংটি উপহার দেবো।
-খুব ভালো হবে। তবে নিজের চোখের চিকিৎসার কথা ভুলবেন না। এতে আপনার মাথার যন্ত্রণা কিছুটা কমতে পারে।
-মনে থাকবে।
তারপর কাস্টের থেকে বিদায় নিলাম।
পোয়ারো বললো, ভবিষ্যতে কোনোদিন আমাদের হয়তো দেখা হবে, আজ আসি। আমরা সিঁড়ির দিকে অগ্রসর হলাম।