হক যে খবরটা দিয়েছিলেন সেটা আমি পড়লাম। সেটা মাথায় যেন একটা যন্ত্রণা এনে দিল, বিরাট একটা বিপদ এনে দিল। পল পেন্টন ট্রেভেলিন সম্পর্কে অনেক কিছু এর আগেই পড়েছিলাম। এবং একটা অনেকদিন আগেকার ছবি দেখেছিলাম। তাই আমি তাকে এখন সামনাসামনি মেরে ফেলতে পারি। পি, পি. ট্রেভোলিন হাইতিতে তার স্থায়ী বাড়ি তৈরী করেছিল। হক বলেছিলেন–যে এ, এখনই কখনো পি. পি.-র খারাপ করে না। সেই জন্যই তাদের উপর খুব বেশী নির্ভর করা যায় না। কারণ পি. পি. একজন রহস্যজনক লোক। এবং পাপা এবং পি. পি. দুজনেই একই রকম হালকা ধরনের মানুষ। পি. পি. পালডকের মাথাওয়ালা তোক এবং স্যান্স খুনী রামপ্রসাদের কাছে পি. পি. ড. রোমেরাকে ভালভাবে থাকতে দিয়েছিল। আমার সি.আই. এ এবং এ, একই ই-এর মতো ছিল যে ট্রেভোলিন পাপাডকের কথা মেনে চলবে।
লিডাও বলেছিল যে. পি. পি.-র মুঠো থেকে ভ্যালডেজকে পাওয়া খুব শক্ত ব্যপার হবে। লোকটার নিজস্ব অনেক সৈন্য, এবং পি. পি.-র মোট দুদল সৈন্য। খাবার পর লিডাকে সমস্ত তালিকার নোট তৈরী করে রাখতে বললাম, আমি ইঞ্জিন দেখে ওপর দিকে গেলাম। পূর্ব দিকে চাঁদ উঠেছে তখন, চার্ট আর নোটগুলো নিয়ে আমি পড়তে আরম্ভ করলাম। লিডাকে বললাম–আজ রাত্রেই রৈতুনার মধ্য দিয়ে ছুটে যাব এবং আলো দেখার আগেই লুকিয়ে পড়ব। এবং লিডা যেন দ্বীপের কাছে অন্য লোকের কাছে চলে যায়।লিডা মাথা নাড়ল, জীভটা ঠোঁট বোলাতে বোলাতে বলল, যে কোন একজনকে নিয়ে নেবে। আর যদি কিছুই না ঘটে তবে কোন কথাই নেই। বললেন, আমাদের কোন বিপদ ছাড়াই সে অন্য কারোর কাছে যেতে পারে। আর যদি কিছু ঘটে তবে লিডা জানতে পারবেই, কারণ সে তো ব্ল্যাক সোয়ান।
লিডাকে জিজ্ঞেস করলাম, টুরটুনারে কি প্রচুর লোক আছে? ওটা কি হাইতির উত্তর সমুদ্র পাড়ের একমাত্র দ্বীপ? লিডা বলল, খুব বেশী নয় তবে কয়েকজন জেলে আর কয়েকজন ব্ল্যাকস।
বললাম, একটা জায়গা খুঁজতে হবে যেখানে আমরা নৌকাটা লুকিয়ে রাখব। লিডা মাথা নেড়ে জানাল তার দরকার হবে না বরং এয়ার প্যাট্রলসদেরই ভয় করা উচিত।
আমি নিশ্চিত ছিলাম এয়ার প্যট্রালসরা খুব সাংঘাতিক। তবে পাপাডকের খুব বেশী সৈন্য নেই। আর আমার একদমই ছিল না।
লিডা বলল, যদি তুমি রেডিওটা ব্যবহার করতে তবে আমি অনেক লোককে সেনল্যাণ্ডে আনতে পারব এবং সেটাই খুব সহজ হবে।
বললাম, এটা সহজ হতো ঠিকই। তারপর আবার বিশেষ করে পাপিডক এবং পি. পি. . ট্রেভেলিনের পক্ষে আরও সহজ হত এবং আর ওসব ব্যাপার আলোচনা করতে হবে না।
লিডাকে বললাম, আমরা টরতুনায় থাকবো। সে যেন তার লোকদের সঙ্গে কথা বলে রাখে এবং সে যেখানে বলবে আজ রাতটা সেখানেই কাটাব।
আমি আরো বললাম, আমি চাই তোমার কোন বন্ধু বান্ধব যেন জাহাজে না আসে। আর যদি তারা তাই চেষ্টা করে তাদের আমি গুলি করে মারবো এবং সেই সময়ে পাপাডকের কাছে টেলিগ্রাম পাঠিয়ে দেব। লিডা আমার কথায় সায় দিয়ে বলল, যতক্ষণ না কোন আক্রমণ আসছে ততক্ষণ যেন কেউ না জানতে পারে আমার কোথায় থাকব।
লিডা বলল, সেখানে খুব বেশী ব্রাউন লোক ছিল না। এবং লিডা যেন তাদের ওপর খুব একটা আস্থা না রাখে। লিডা বলল, তার ভয় হচ্ছে কারণ যদি কোন আক্রমণ তাদের আসে এই জন্যই। আর কোন আক্রমণ না আসলে কোন কথাই নেই। নিক যেন অন্য কোন দলের আশ্রয় নেবার চেষ্টা না করে।
লিডা পেনসিল দিয়ে এঁকে বোঝাল যে উত্তর সমুদ্র তীরে একটা নদী আছে।
সবশেষে ঠিক হলো যে আমি একটা বোটে থাকব। আমরা একটা নালার মুখের সামনে শুয়ে পড়লাম এবং তালপাতাটা আমাদের লুকিয়ে রেখে দিল। লিডাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে এখানেই ছিল কিনা। বলল, সে প্রায় মাস তিনেক আগে।
বললাম, তাহলে যে কোন আক্রমণের পরিকল্পনা করতে পারে।
লিডা সরল ও ঠাণ্ডা চোখে বলল, সে মানত যে ডুবেলিয়ার কখানো ড. ভ্যালডেজকে উদ্ধার করতে যাবে না।
ঠিক হলো আক্রমণকারীদের কোনকিছু না জানিয়েই তাদের দিয়ে কাজ করানো হবে এবং তারা যে মতলব করেছে সেই অনুযায়ী কাজ হবে। লিডা তার ঠোঁটটা জিভ দিয়ে ভিনিয়ার বলল যদিও সেটা খুবই বিপজ্জনক তবুও তাদের মিথ্যা বলতে হবে।
সে একটু অস্বীকার করলো এবং বলল যে, সে এখানে ধরতে পারে এবং সে তাদের বলে দেবে আক্রমণের আগে এটাই তাদের শেষ পরীক্ষা। কিন্তু তবুও নিকলে লিডা একটা গল্প বলবে। একটা টি শার্ট আর জ্যাকেট পরে অস্ত্রগুলো আর লুগার পরীক্ষা করে নীচের রাস্তা দিয়ে নেমে গেলাম। যাবার আগে বললাম, সে যেন ওদের যা ইচ্ছা বলে দেয়। আমি সূর্য ওঠার আগে পর্যন্ত সেই নালার মধ্যে লুকিয়ে থাকলাম। ডেকহাউসে যাবার সময় পথে আমি তার দিকে ফিরে তাকিয়ে রইলাম। বললাম, টুপি পরে নিতে এবং একটা অস্ত্র আর বন্দুক নিতে, আর যদি সে মেশিনগান না নেয় তবে আমি তাকে উচিত শিক্ষা দেব। ইঞ্জিনটা চালিয়ে আমি লঙ্গরটা টেনে নিলাম। অন্ধকার রাস্তার নিচে দিয়ে চলে গেলাম। এবং খুব জোরে কেঁপে কেঁপে উঠলাম। সূর্য ওঠার পর লিডা নদীর ধারে যাবার জন্য প্রস্তুত হল। তার লোকেদের দেখতে পেল। লিডার কাছে একটা ছুরি ছিল যদিও আমি আগে সেটা দেখতে পাইনি। নদীর তীরে যাবার আগে আমি লিডাকে বললাম যে, যদি আমি বন্দুকের আওয়াজ শুনি তাহলে আমি দশ মিনিট অপেক্ষা করব। তারপর ছুটবো। যত তাড়াতাড়ি পারে তাকে ফিরে আসতে বললাম, বললাম আসার সময় গোলামাল করতে এবং কাছে আসার আগে যেন বাঁশী বাজায়।