আমরা তখন ডেক হাউসের দিকে এগোলাম, সে আলোটার ওপর পর্দা টেনে দিল। লিডাকে বললাম, আমাকে নিজস্ব কায়দায় চলতে হবে। আমি হব ক্যাপ্টেন আর লিডা হবে খালাসী। আমার আদেশ মতো লিডাকে কাজ করতে হবে। লিডা জানাল, কোন সম্পর্কে সে কিছু জানে না বলেই আমার উপর সে নির্ভর করেছে। লিডা বোট চালাতে জানে না জেনে অবাক হলাম। পর্দা টানতে টানতে জানাল সে বোট চালাতে জানে কিন্তু এই মুহূর্তে তার ভালো লাগছে না। আমি জ্যাকেট আর টুপিটা নিয়ে চেয়ারে রেখে প্লে বয় জলখাবার টুপিটা পরে নিলাম। লিডা হঠাৎ লুগার আর স্টিলেটোর দিকে তাকিয়ে তার গোলাপী ঠোঁটে চাপ দিয়ে বলল, তুমি একরাতে দুজনকে মেরেছ? বল কে তুমি? কি তোমার আসল পরিচয়?
আমি তাকে আমার নথিপত্রটা দেখলাম, বেনেট আমাকে পরিচয় দিয়েছিল নিক কার্টার বলে। লিডা এগিয়ে এসে বলল–ক্যাকটন একটু মদ খাবার অনুমতি দেবে? বার-এর কাছে গিয়ে আমি ঠাণ্ডা গ্লাসটা তুলে নিলাম আর লিডাকে একচুমুক নিতে বললাম। সে ভাবে গ্লাসটা আমার দিকে তুলল, তার চলনে বলনে কিরকম একটা যেন হাসি-ঠাট্টার ভাব। হাসতে হাসতে তার বাদামী চোখ দুটো চারদিকে ঘুরছিল। সে হঠাৎ আমার দিকে থেকে পড়ে আমার ঠোঁটে আলতো চুমু খেল আর সেই সুযোগে আমি তার লুকনো পিস্তলটা চামড়ার থলিটা থেকে কেড়ে নিলাম। এটা প্রায় ২৫ বোরের। তার ধারটা হাতীর দাঁতের তৈরী। লিডাকে বললাম, লিডা যখন আমাকে বিশ্বাস করতে পেরেছে তখন আর এটা রাখার নিশ্চয়ই কোন দরকার নেই। এই বলে আমি ইঞ্জিনটা দেখতে চলে গেলাম। আলোতে ইঞ্জিনের কাছে একটা ছোট বাক্স দেখতে পেলাম। এটাতে ১৬ ফুটের একটা নট। ইঞ্জিনটাতে ৬২০ গ্যালনের জ্বালানী আর ১৫০ গ্যালন জল ধরে।
ডেক হাউসের বড় বড় লম্বা বোলের মধ্যে অদ্ভুত ধরনের কিছু বন্দুক রয়েছে। হককে খুশী করার জন্য যেমনি অনবদ্য অথবা হাইতি অভিযানে। ডিঙিটাকে টেনে বোটের মধ্যে রেখে ইঞ্জিনগুলো চালিয়ে দিয়ে আলো জ্বালিয়ে দিলাম। এবার ফ্রাইব্রিজের দিকে এগোতে হবে। প্যানেলের চার্টটা পড়ছি এমন সময়ে লিডা কাছে এসে আমার কানে চুমু খেল এবং ভুদু গীর্জার কথা আমার মনে পড়ে গেল। আমি যখন ইঞ্জিনের যন্ত্রপাতিগুলো কিভাবে কাজ করছে, তাদের গঠন, কাজ এসব পরীক্ষা করছিলাম তখন লিডা আমার চেয়ারের সামনে এলে তার ঠাণ্ডা হাত দিয়ে আমার গলা টিপলো। এইভাবে আমাদের সম্পর্কটি নিবিড় হয়ে গেল। আমি চোখটা একটা ট্যাঙ্কারের ওপরে রাখলাম, লিডাকে নদী থেকে প্রায় চল্লিশ মাইল দূরে মনট্রোসে গিয়ে টম মিটছেন-এর সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে আমরা ওখানেই থাকব। এরপর আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠল ওয়াশিংটনের মনোরম সেই সেতু। লিডা আমার কাঁধে হাতে রেখে বলল, ছাগলটা থেকে আমরা বেশ টাকা তুলি। তুমি আর বেনেট বিনা পয়সায়। টিকিটের দাম কিন্তু একশো ডলার। আমি বললাম–যাই হোক, খেলাটা অত্যন্ত নোংরা। পশুকামিতার চূড়ান্ত উদাহরণ। ভুজু গীর্জার কথা বলতেই লিডা আমার শরীরের ওপর আছড়ে পড়ল। আর বেশ উত্তেজিত মনে হলো তাকে।
লিডা ফ্ৰেন্সিং-এর উপর অংশে, অন্ধকারে আমার দিকে আড়চোখে তাকাতে আমি সম্মতি জানালাম ওর এই খেলায়। সিগারেটের প্যাকেটেটা তার হাতে দিলাম। লিডা গোল্ড এন-সি-টাকে ভালোভাবে লক্ষ্য করল। বলল সে, এখন আমাকে তার সত্যিই নিক কার্টার বলে মনে হচ্ছে, সেই নিক যে ভালোবাসার তুণে বিদ্ধ করে শরীর।
বললেন, নদী মাঝ বরাবর পার হলাম। জারসি নদীর তীরে কটি বার্জেল দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাদের চোখে ধরা দিতে চাই না। হঠাৎ বললাম আজ রাতে তুমি কি মাতাল হবে সুন্দরী? অস্ফুটে বলল, এল. এস. ডি.।
স্মিড জিওনের বলল, একটা কার্বকে ক্ষতি করে না। মানুষকে খুব উত্তেজিত করে তোলে।
এরপর লিডা ধোঁয়া ছেড়ে অদ্ভুত ভাবে হেসে উঠল। বলল, রাতে তুমি দুজনকে হত্যা করেছ। তুমি একটা নিষ্ঠুর খুনী। সবাই তোমাকে দেখেছে। আমি বললাম, আমি এক্স-এর একজন বিশ্বাসী লোক! আমি আমেরিকার হয়ে কাজ করি। ভাবলাম এর আগে হয়তো এক্স-এর নামই লিডা শোনেনি। বহুরূপীর মস্ত মেয়েটা তার ভাব বদলালো। থুতনিতে গোবলেট রেখে জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়েই হেসে বলল, আমি শুধুই ব্ল্যাকমেলার, আমার তো তোমার মতো উঁচু পা নেই। লিডাকে বললাম। হাইতিতে আক্রমণ হলে তা পরিচালনা করা আমার দায়িত্ব। আঙ্কেল স্যামুয়েল হাইতিতে এইসব অরাজকতা পছন্দ করে না। ডোমিনিয়ম রিপাবলিকের সমস্যা তাকে ব্যথিত করে। তিনি সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চান। এ ব্যাপারে লিডার মতামত জানতে চাইলে লিডা বলল, যা কোমল, সুন্দর আর সৎ তাই আমি ভালোবাসি। আমার মনে হয় স্টেভ বেনেট যে সমস্ত কথা বলেছিলেন তা সমস্তই ঠিক। স্টেভ আমাকে সিয়াতে নিয়ে গেছিল। কিন্তু এক্স সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। লিডা আমার পিঠে আঙুল দিয়ে আঁচড় কেটে বলল, তাকে হাইতি অভিযান সম্পর্কে বলা হয়েছে। ডাক্তার রোমেলা ভ্যালডেজকে রক্ষা করতে হবে। নানা ডক তাকে কিডন্যাপ করেছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। বেনেট যে কাজ করত মেয়েটা আমাকে সে কথাই বলছিল। হককে কোনো কথা বলা বা না বলা পর্যন্ত আমি কোনরকম সঠিক পরামর্শ দিতে পারলাম না। কিন্তু যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ মেয়েটাকে বেশ সুখে শান্তিতে রেখে দেব। আমি বললাম, ড. ভ্যালডেজকে পাওয়া খুব সহজ নয়। কিন্তু তার জন্য তোমাকে জীবন বিপন্ন করতে হবে না। এরজন্য অনেক সময়ের দরকার না হলে ক্ষতি হতে পারে। তারপর লিডাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হাইতিতে অক্রমণ করা হয়েছে? লিডা জানাল, শুধু সে জানে বহুবার আক্রমণ হয়েছিল এবং নানা ওক এজন্যে অনেক সময় নষ্ট করেছিল। লিডাকে বললাম, তাকে যে কাজগুলো করতে হবে আমি করে দেব। লিডা জানাল হাইতির আক্রমণ কিংবা ডা. ভ্যালডেজের কোন ব্যাপারেই বেশী আগ্রহ নেই। সে আমার সাথে আনন্দের মধ্যে ডুবে যেতে চায়।