অন্য একটা জিনিষ, ব্ল্যাঙ্ক। তুমি ভুলে যাচ্ছ। তুমি সব টাকা শোধ করে দিয়েছ। তুমি পি. পি.-র জায়গায় যেতে পার এবং ড, ভ্যালডেজকে বাইরে বার করে আনতে পার। আমরা তোমাকে পরিকল্পনা দিয়ে সাহায্য করলাম। এবং তুমিই একমাত্র এটা করতে পার। আমার কিছু অবাক করা জ্যাপের টুকরো ছিল কিন্তু বিরাট ফাঁকা। কেবলমাত্র সময় আর ঘটনাপুঞ্জ–সেই ফাঁকা স্থান ভরাট করতে খুব কম সময় পাবে। আমি প্রস্তুত হলাম। আমরা জমবিসদের জড়ো হতে দেখলাম। তারা মার্চ করছিল। আমরা এদের গুনলাম। সে সময় তিনটে জীপ দেখা গেল। লিডা আমার কাছ থেকে বাইনোকুলারটা নিয়ে নিল, তারা এখন ভ্যালডেজকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছে।
তুমি ভুল করছে। ভ্যালডেজ ঠিক আছে, ডুপি ফুঁসে উঠল–নিশ্চয়ই, তুমি জানো না পাঁচ বছর একজন মানুষকে বন্দী করে রাখলে কি হয়।
আমি অবাক হলাম এই ভেবে যে কেন এত ভাবছে। আমি নিশ্চিত যে লোকটাকে লিডা দেখেছে সে ভ্যালডেজ। সত্যিকারের ভ্যালডেজকে দিনে দুবার গাড়ি চালাতে দেখা যাবে এ ব্যাপারটা খুবই দুর্লভ। এটা প্রলোভন, একটা ফাঁদ-গুপ্ত বন্দুকধারী ফাঁদে পা দিল।
লিডা মাঝের জীপটাকে দেখে চীৎকার করে উঠল হায় ভগবান! হায় ভগবান! ওকে মেরে ফেলা হয়েছে। ও তো ভ্যালডেজকে মেরে ফেলেছে। আমি প্ল্যাটফর্মের পিছন দিকে সরে এসে দেখলাম তিনটি জীপই দাঁড়িয়ে আছে। টমটম সারা জায়গা জুড়ে ছোটাছুটি করছে; ওরা খাড়ির ওপর কিছু যেন দেখছিল। ওদের দুজন হাঁটু মুড়ে ছিল এবং লোকটার ওপর যেন কি করছিল, টমটম ম্যাকিউটের এক অফিসার হাত নেড়ে বলছেন শুনলাম-প্রতিশোধ! ডুপি বলল, ওরা ওকে মেরে ফেলেছে সোয়ান। লিডা দারুণ আঘাত পেয়ে বলতে লাগল, কিন্তু কেন? কেন তারা ওকে খুন করতে চাইল? তখন ডুপি বলল লিডাকে-পি. পি. অথবা পাপাডক কখনো ভ্যালডেজের মতো মূল্যবান মানুষকে মারতে পারে না, কিন্তু আমি জানি কে মারতে চেয়েছিল। সি. আই. এ ওঁকে মারতে চেয়েছিল, তাহলে ঐ আমেরিকান কুত্তার বাচ্চাগুলোই ওকে মেরেছে। তুমি বলছ।
হ্যাঙ্ক উইলিয়ামকে বললাম সব কথা। ওর মুখ দিয়ে প্রতিবাদের ভাষা বেরিয়ে এল। কি শোচনীয় নরক, স্যাম? তুমি এমনভাবে তাকাচ্ছ যেন তুমি আমাকে মেরে ফেলবে। আমি তার দাড়ি মুচড়ে বললাম, তোমাকে আমি মেরে ফেলব তুমিই ওঁকে মেরেছ। বললাম হয় তুমি মরবে নয়তো তোমার জন্য গচ্ছিত থাকল পুরস্কার।
.
০৯.
সময় মানুষের মতোই মূল্যবান। আমি এই সময়ের মধ্যে গ্রেনেডগুলো, টেপ আর দরকারী জিনিষগুলো ঠিক করে রাখলাম। টমি বন্দুক; ৮৫ এবং লুগার পরখ করে নিলাম। অন্ধকার পথে প্রায় অর্ধেকটা এসেছি এমন সময় আলোকের ঝলকানি দেখতে পেলাম, বেড়ার আনাচে কানাচে আলোটা ঘোরাফেরা করতে লাগল। এরপর সর্তক হলাম লমান পাহারদার আর কুকুরদের থেকে এবং আমার গ্রেনেডগুলো বসিয়ে দিতে লাগলাম। আমি কপি বার করে এখানে একটা গ্রেনেড বাঁধলাম দড়িতে। দুটো পোষ্টের মাঝখানে। তারপর আর একটা গ্রেনেড বাঁধলাম দ্বিতীয় পোষ্টে। আর তিনটে গ্রেনেট বাঁধলাম একটা শক্ত দড়িতে। একটা পাহারাদার চলে গেল বেড়ার ভেতর দিয়ে। সে গ্রেনেডগুলো চিনতে পারেনি। জোয়ান সবকিছু সত্ত্বেও যুদ্ধ করে যাবে। না আমরা সোয়ানকে কোন বিপদের মধ্যে ঠেলতে চাই না। হ্যাঙ্কের কথা বলতেই ভুলি বলল, সে কোন কাজের নয়। যা করার আমাদের দুজনকে করতে হবে। এখন কাল জীপের সামনে পাঁচটা ম্যাকুট, মধ্যে ডাক্তার, আর চারটে ম্যাকুট। প্রত্যেকটা জীপেই ৫০ ক্যালিভারের জিনিস পোরা আছে। আমাদের মতো ম্যাকুটের সাব মেশিনগান আছে। পি.পি.-র গাড়িটানার কুকুর আছে। তুমি ওভাবে চেষ্ট কর, ব্ল্যাঙ্ক? বুঝলাম আমার ধারণা ভুল। ভুলি, লিডা আর হ্যাঙ্কের মধ্যে কি ঘটেছে সহজেই অনুমান করতে পারলাম। আমি দড়িটার খুব কাছে গেলাম। মতলব ছিল এই যে গ্রেনেড বাঁধা দড়িটা ছিঁড়ে ফেলা। দড়িটা আমার হাতে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। আমি অপেক্ষা করতে করতে শুনতে লাগলাম। পাঁচ-ছয়-সাত-আট গ্রেনেডগুলো রাত্রের জন্য বন্ধ করে রেখেছিলাম। আমি তারপর দৌড়চ্ছিলাম। বেড়া দুটোর খুঁটি নীচে ছিল। মাঝখানের তারের অংশটা ঝুঁকে পড়েছিল। আমি এরমধ্য দিয়ে খুব সন্তর্পণে চলতে লাগলাম। প্রায় পঞ্চাশ গজ দূরে হেঁটে এলাম আর আমি জানতাম আমি মাইনের মধ্যে দিয়ে দৌড়চ্ছি। নিস্তেজ হয়ে পড়েছিলাম। মাটি না ছুঁয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। যখন আমি গাছ থেকে ঠিক সময় মতো নেমে পড়লাম ঠিক তখনই প্রথম সার্চলাইট ফেলা হল। দ্রুত লুকিয়ে পড়লাম আমি। তারপর দশ সেকেণ্ড অপেক্ষা করলাম যাতে তিনজন এসে পড়ে। ওরা দরজার নীচে গুলি করতে লাগলে আর আমি শাস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। লিডা নিশ্চয়ই তার সঙ্গে আলাপ করছে। আমি স্টেনগানের মৃদু শব্দ পেলাম আর ৪৫-এর টমি বন্দুকের গম্ভীর গর্জন শুনতে পেলাম। আমি এটাই চেয়েছিলাম কালো পোষাক পরা লোকগুলো আর টমটম ম্যাকুটরা যেন ভেবে নেয় শব্দ অন্য দিকে থেকে পায়, অথচ আমি ভেতরে বসে আছি। গেস্ট হাউসে একটা কিন্তু ঘটছিল আর আলো নিভে গিয়েছিল কেউ কেউ যন্ত্রণায় গোঙাচ্ছিল। গোপন সার্চলাইটগুলো চারদিকে ছোটাছুটি করছিল কিন্তু আমার গায়ে আলো লাগছিল না। যেন এই অবস্থাই অনেকক্ষণ ধরে চলে আর পি. পি. ট্রেভেলিরে আধুনিক প্রাসাদে যাবার রাস্তা তৈরী করে দেয়। লাল আলোর ঝলকানি আর শব্দে বুঝলাম যে ওরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে আর দরজায়-ত্রিভুজাকৃতি হয়ে আছে। দুটো নোক আমার কাছে এখন কর্কটস্বরে ফিস ফিস করে কি যেন বলছে। আমি ভেবেছিলাম ওরা প্রায় দশফুট দূরে আছে। ওরা যে কোন একটা খাদের ধার দিয়ে চলে যাবে। নিজেকে ছোট্ট করে গুটিয়ে ফেললাম। চাইছিলাম ওরা আমাকে আক্রমণ করুক। তার ভাগ্য খারাপ এই মুহূর্তে চাঁদের ঔজ্জ্বল্যে তাকে ঠিক একটা কুত্তার বাচ্চার মতো দেখাচ্ছে। আমি একটা বিরাট গুঁড়ির ছায়ার মধ্যে এলাম। সে আমার ছয় ইঞ্চির মধ্যে ছিল আর তারপর সে নীচের দিকে তাকিয়ে ব্যাগ আর টমি বন্দুক দুটোয় একবার তাকিয়ে নিল। আমি তার গলা চেপে ধরলাম। সে শেষে নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। অপর লোকটা এগোলো না আর মৃদুভাবে ডাল ক্যারলস? কোথায় তুমি? সে ধীরে ধীরে গাছের দিকে এগোতে লাগল! বলল ক্যারলস? তুমি কি আমার সঙ্গে চালাকি করছ? বেরিয়ে এস, উত্তর দাও। সে চাঁদের আলোয় রাইফেলটা বাগিয়ে ধরল। আমি লাফিয়ে গেলাম আর তারপর রাইফেলটা ঘুষি মেরে ফেলে দিলাম। ডানহাতের ঘুষিতে কাবু করলাম। তারপর ছুরিটা তার গলায় এক পোচ চালিয়ে দিলাম আর তার গলাটা হাঁ হয়ে গেল। ওরা দরজা থেকে গুলি ছুঁড়ছিল। শিগগির ওরা একসঙ্গে জমা হল। দ্রুত সব কাজ করলাম। বন্দুকের গুলি এখনও চলছে। দরজা থেকে দূরে সরে পি. পি.-র লোকেরা নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করল আর আক্রমণকারীদের চালাকি ধরে ফেলল। আমি মৃতের রক্তমাখা পোষাকটি পরে ফেললাম। তার রক্ত মেখে নিলাম মুখে এবং আমাকে একজন কুৎসিত বগিম্যানের মতো দেখাতে লাগল। আলোর ঝলকানিতে পুনরায় কতগুলো তোক কথা বলছে। পি পি আর তার সাঙ্গপাঙ্গারা একটু মুষড়ে পড়েছে। প্রায় মাঝরাতে বড় বাড়িটার আলো নিভে গেল। সঙ্গে সঙ্গে সার্চ লাইটি দেখা গেল। ভাবছিলাম হয় ঐ তিনজন অন্য জায়গায় চলে গিয়েছে অথবা মারা গিয়েছে। আমি আমার গীয়ার, মেশিনগান, ব্যাগ এ সমস্ত বালির ভেতর থেকে বার করে নিলাম। আমাকে দরজার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আমি পাহারদারটাকে দেখলাম বেলুনট্রেড-এ সেঁটে দাঁড়িয়েছিল। পি.পি.-র কাছে আমার এখন যাওয়ার ঘটনাটা কিছুই নয়; যদি আমি পি. পি.-র কাছে নাও যাই তাহলেও কিছু ঘটবে না। আমি মরে যেতাম। আমি এল কোণটা পরীক্ষা করছিলাম যেখানে বলট্রেড-এর ছোট্ট অংশটা বাঁক নিয়েছে। যখন পাহারদারটা চলে গেল আমি এল কোণটার দিকে ছুটলাম, যতক্ষণ না সে আমার দৃষ্টির বাইরে চলে গেল আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। তারপর বলট্রেডের কাছে গিয়ে পাথরের খারের পিছনে লুকিয়ে থাকলাম। তার বুটের কঠিন শব্দ খুব কাছে আসতে লাগল। আমি আমার বাঁ-হাত দিয়ে তার গলা লোহার মতো চেপে ধরলাম। তাকে ছুরি দেখিয়ে বলট্রেডে নিয়ে এলাম। কালোটুপি রয়েছে তার মাথায়। নীল এক্সরে লেখা রয়েছে–পি.পি আর তার বাঁ হাতে দাগ ছিল। আমি নিজেকে একজন সৈনিক ভেবে নিলাম। আমি ওর গলায় আমার ছুরিটার আট ইঞ্চি ঢুকিয়ে দিলাম। ফিসফিস করে বললাম, তুমি যদি বাঁচতে চাও তাহলে আমার প্রশ্নের জবাব হ্যাঁ অথবা না তে দাও। জিজ্ঞেস করলাম– পি.পি. কি শুতে গেছেন? সে মাথা নাড়লো। বললাম-কত নম্বরে সে ঘুমোয়? সে কোন সদুত্তর দিল না। আমি তার মুখের ওপর হাত চাপা দিয়ে ছুরিটা ঢুকিয়ে দিলাম তার বুকের ভেতর। ঘরটা হিসহিস শব্দ করে খুলে গেল আর একটা ঠাণ্ডা বাতাস বেরিয়ে গেল। পি.পি.-র জন্যই এ সবকিছু। আমি সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠলাম। দুটো পেট্রল পাহারাদার আমাকে নিশ্চিত দেখেছে। আমি ছুঁড়ি মেরে সিঁড়ির উপর উঠলাম আর স্কাইলাইটের ওপর অপেক্ষা করতে করতে একজন সাদা মানুষকে দেখতে পেলাম। পিপির কোন চ্যালা হতে পারে। মেশিন পিস্তল সে বার করে নিয়ে এল। এখানে তুমি কি করছ জান কি? তারপর তার আঙুল ট্রিগারের দিকে যেতেই বললাম মিঃ ট্রেভলিনের জন্য খবর আছে। স্যার, খুব জরুরী। এটা ব্যাক্তিগতভাবে আনা উচিত বলেই আমাকে পাঠানো হল। আর একজন লোক বলল। আমাকে তুমি জান তুমি এখানে আসতে পার না। বললাম, জানি স্যার, কিন্তু তিনি আমায় পাঠিয়েছেন। জরুরী দরকার, তিনি বললেন, শুটিং করার সম্বন্ধে মনে হয়। আমার কোন কথা না শুনে সে সিঁড়ির দিকে পাহারাদারদের ডাকতে যেতেই আমি তার মেশিন পিস্তলটায় লাথি মারলাম, আর গলাটা আমি চেপে ধরলাম, তার চোখ লাল হয়ে এল। হাঁটু ভেঙ্গে আসছিল তার। তারপর তাকে আমার সামনে একহাত দূরত্বে তুলে ধরলাম আর ঝুল বারান্দা দিয়ে কয়েক পা ওকে নিয়ে গিয়ে তার গলা মুচড়ে ধরলাম। তাকে ধীরে নামতে দিলাম। সিঁড়ির কাছের একটা দরজা খুলে তার শরীরটা টেনে নিয়ে গিয়ে পিস্তলটা তার বুকে চেপে ধরলাম। আমি বিশ্বাস করলাম না যে পি. পি. পাহারাদার ছাড়া বেরবে। যাই হোক, কিন্তু সেই কুত্তীর বাচ্চাটা কোথায়? ঘরের ভেতর থেকে পি. পি.-র গলা ভেসে এল। গলার স্বরে একটা কর্তৃত্ব আছে, আর হাসি শুনে যেন মনে হলো আদর দিচ্ছে।