হতে পারে, আবার নাও হতে পারে, আমি বললাম। দূর থেকে ডুপির কণ্ঠস্বর এল–এসো ব্ল্যাঙ্ক। আমি তোমাকে কিছু জমবি দেখাই। গাছে চড়লাম আমি, ডুপির বাইনোকুলার দিয়ে দেখলাম। ডুপি বলল, ব্ল্যাঙ্ক, দরজা দিয়ে নীচে তাকিয়ে বল কি দেখলে। দেখলাম একটা বড় ইটের বাড়ি, একটা ইস্পাতের দরজা, কালো কালো অস্ত্রধারী পাহারাদার, শেষের পাহারাদারগুলো আবার সঙ্গে কুকুর রেখেছে। গেট-হাউসের কাছে দুজন কোলো ইউনিফর্ম পরা লোক দাঁড়িয়েছিল, কথাবার্তা বলছিল আর কোন দিকে তাকাচ্ছিল না। অন্যান্যদের মধ্যে আধডজন পাহারাদার ছিল আর তিনজন আলাদা কর্মী। একটা দলে দুজন পাহারাদার। কর্মীরা, নীল ইউনিফর্ম, প্যান্ট আর জ্যাকেট পরেছিল। আর ওদের জ্যাকেটে সাদা হরফে লেখা ছিল; পি. পি. আমি মৃদু বিরক্তি প্রকাশ করলাম। ডুপি বলল, কি ব্যাপার ব্ল্যাঙ্ক? তোমার কতগুলো ধারণা কি উল্টে গেছে? আমি পি. পি. ট্ৰেভেলিনকে গালাগালি করছিলাম। ওটা একটা বাস্টার্ড। ওর বন্দীর ক্যাম্প আর ঐ সাদা হরফে লেখাটাও বাস্টার্ড। মনে হচ্ছিল লেখা আছে পি. ডব্লিউ. এস., আমি সারা পৃথিবীতে ওগুলো প্রায় হাজারখানেক দেখেছি। কিন্তু আমি কখনো চলন্ত লোকেদের ঘাড়ে পি. ডব্লিউ. এস. দেখিনি। ধীরে তবে দৃঢ়ভাবে পা টেনে টেনে হাঁটাচলা ওদের। ওরা ওদের মাথা নাড়াচ্ছিল না। যন্ত্রণাদায়ক ধীরতা নিয়ে তারা তাদের সারা শরীর নাড়াচ্ছিল আর তাদের কাধ নাড়াচ্ছিল বিচরণের মতো। জমবিস? আমি এক মিনিটের জন্য এটা কিনিনি, কিন্তু কোন বাজে ব্যাপার ঘটে যাচ্ছে। জুপির গলায় স্বরে ঝাঁজ দেখে বুঝলাম ও রেগে যাচ্ছে। বলল, তুমি কি বল ব্ল্যাঙ্ক? ওগুলো জমবিস না। সে বলল আমি ওদের চোখে দেখেছি খুব কাছ থেকে, কোনো রং নেই, ঠিক মৃতের চোখের মতো সাদা ধবধবে। জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি কিভাবে কাছ থেকে ওদের চোখ দেখলে?–বলল ওরা নীচে কি করছে দেখছ? দেখলাম ওরা বেড়ার মধ্যে বারবার মাইন বসাচ্ছে। দশফুট অন্তর অন্তর, ঐ বেড়াটায় কিন্তু বিদ্যুৎ লাগানো আছে। সে বলল, পি.পি. নিজেকে পাহারাদার কুকুর, মাইন আর জমবিস দিয়ে ঘিরে রেখেছে। দেখলাম, একটা কালো-চুলওলা মেয়ে…তাকে একটা লোশন লাগাচ্ছিল। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে আমি সন্দেহমুক্ত হলাম যে উনিই পি.পি. ট্ৰেভেলিন। ডুপিকে ডেকে বলালাম, এই যে দেখ। উনি কি সেই পি.পি.? সে গুই গুই করে বলল, ঐ নিশ্চয়ই সেই কুত্তির বাচ্চা। বোধহয় এইমাত্র ব্যাটা এসেছে। ওই ক্রাইস্ট, ভাবতে অবাক লাগছে কিভাবে মেয়েটা ওকে স্পর্শ করে। আমি বললাম, তুমি যদি এক বিলিয়নের মালিক হতে তবে এই ঘটনা ঘটত। সে আমার দিকে শীতল চাউনি দিল। আমি ভাবতে লাগলাম সিটাডেলের দশমাইল দূরের রাস্তাটা সরু, কেবলমাত্র একটা জীপ চলতে পারে। জমবিসদের অনেক দল ওটা তৈরীর কাজ করছে। রাস্তার ওপরে কালো পোষাক পরা লোকগুলোকে দেখা যাচ্ছিল না। টমটম ম্যাকিউট নামে পাহারাদাররা এখানে, তারা ট্রাকের ওপর চড়ে যাচ্ছিল আর জীপ থেকে ৫০ ক্যালিবারের মেশিগান নিয়ে তাদের চারধারে লক্ষ্য করতে করতে যাচ্ছিল। জানালাম যে জমবিস হচ্ছে অন্য একটা সতর্কতা, উৎসাহ বজায় রাখার একটা উপায় অথব ক্রুদ্ধ ব্ল্যাকগুলো অন্য জায়গায় চলে যেত। কিছু গুলি দুর্গের ওপর দিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল আমি অনেকদিন ধরে এখানে গোয়েন্দাগিরি করছি কিন্তু এ ধরনের গুলি আগে দেখিনি। সোয়ান কেন দুঃখিত বুঝলাম না। আমি দশমাইল দূরের দুর্গে বাইনোকুলার ঘোরলাম। সারি সারি ধুলো পড়া কামান দেখতে পেলাম। আর একটা মিসাইল দুর্গকে ছাড়িয়ে শূন্যে চলে গেল। মাঝপথে এটা ভেঙে গেল। একরাশ কালো ধোঁয়া আর ধাতুর বৃষ্টিপাত হল। বললাম–ডুপি, তুমি আগে এরকম ঘটতে দেখেছিলে যেটা ভ্যালডেজ চেষ্টা করেনি? হয়তো তিনিও আমাদের মতো এখানে এসে কিছু আশা করেছিলাম।
না ব্ল্যাঙ্ক। আমার মনে হয় ড. ভ্যালডেজ সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন পাপিডক আর পি. পি. তো বোকা নয়। আমার মনে হয় ড. ভ্যালডেজ চেষ্টা করেছিলেন স্টল করতে কিন্তু ওরা খুব দ্রুত অত্যাচার করে তাকে মেরে ফেলেছে। অনেক সময় নিয়েছে তার ঐ মৃত্যু। গোলমালটা হচ্ছে হাইতিকে নিয়ে, পাপাডক এখন মিসাইলের জন্য তৈরী নয়। ডাক্তার হিসাবে এখানে তিনি একজনই আছেন। আর এখানে আসা মস্তিঙ্কগুলো বোধহয় কিনতে পারে না পি. পি. ডুপিকে জিজ্ঞাসা করলাম ভ্যালডেজ দুর্গে প্রতিদিন সকালে যায় আবার রাতে ফিরে আসে তাই না? সে বলল, একটা জীপ সামনে একটা জীপ পেছনে আর ড, ভ্যালডেজ মাঝখানে। পাহারাদারটা টমটম ম্যাকিউট। শালা বাস্টার্ড। যখন তারা এখানে দরজা দিয়ে ঢেকে তারা পি.পি.-র লোকদের কাছে নিয়ে আসে। ডুপি বলল, ব্ল্যাঙ্ক আর কিছু চিন্তা কোরো না, সে ভালো করে আমার মনের কথা পড়তে লাগল। বললাম, তুমি চিন্তা করনি যে, আমরা ওটা করতে পারতাম? ব্ল্যাঙ্ক ভ্যালডেজ গেট আর দুর্গের মধ্যে কোন এক জায়গায় আছে। ডুপি আগুন চোখে বলল–আমি তোমাকে বলছিলাম এটা কি ওভাবে করতে পার যায় না? আমাদের গ্রেনেড আছে, প্লাস্টিক আছে। আমাদের আছে অটোমেটিক অস্ত্র, বললাম তুমি জানো, আমরা চারজন আছি। তবে আমরা যদি যত্ন নিয়ে পরিকল্পনা করতাম তবে হয়তো ডুপি হাসল, বলল, তুমি এখানকার হত্তাকর্তা নও, সোয়ান হত্তাকর্তা। যদি সোয়ান বলে আমাকে কিছু করতে আমি করব। বললাম, আমার পরিকল্পনায় কি কোন ভুল আছে? সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাথা নাড়ল। কিসের শব্দ হচ্ছে। কোন কিছু বাজে ব্যাপার ঘটছে মনে হচ্ছে। এমন কি আমরা যদি ভ্যালডেজকে পাই তাহলে নৌকা করে চলে যেতে পারি। তবে এটা কখনো কোরো না, ব্ল্যাঙ্ক পাপাডকের এয়ারফোর্স আছে, তার সৈন্য সামন্তরা জঙ্গলে পাহারা দিচ্ছে। টমটম ম্যকিউট এখানে থাকতে পারে। পি.পি. টাও কালো পোষাকে আছে। কোনো সুযোগ নেই, ব্যাঙ্ক। আমি তার কথাবার্তা ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করলাম। এটা একটা ভালো পরিকল্পনা।