আগে বেশ কয়েক বছর গেছি কিন্তু আমি স্বীকার না করে বললাম, না।
ডুপি লাল চোখে বলল, ব্ল্যাঙ্ক তুমি তাহলে হাইতি সম্পর্কে কিছুই জান না। আমি কয়েকদিন ওখানে ছিলাম। সোয়ানের জন্ম এখানে। পেশাদারী যোদ্ধা তুমি, আমি আর ঐ চিন্তাবিদ সোয়ান, এ্যা? এই ভাবেই করতে হবে, ব্ল্যাঙ্ক?
তারপর সে আমাকে অনেক কারণ দেখিয়ে খুব উত্তেজিত করতে চাইল। কিন্তু আমি ভাবতে পারছিলাম না যে স্যাম ক্লেচারের গল্পটা কিনে নিয়েছিল। কিন্তু সে কি জানত না আমি কে? যদি না লিডা বলত তাকে। কিন্তু আমার সন্দেহ হচ্ছিল যে লিডা জানে ডুপি কে।
আমারও সন্দেহ হচ্ছিল যে ডুপি জানত যে, আমি তাকে চিনি নিয়েছি। যদি সে জানতো যে আমি এ.এক্স.ই-এর লোক তাহলে সে আমায় কিছু করত। ওর কাজ পরখ করে বুঝলাম যে, যদি আমি ওর বিরুদ্ধে সামানা-সামনি লড়াই করি তবে আমাকে ও একেবারে নরকে পাঠিয়ে দেবে। ডুপি বলল, আজ রাত্রেই আমরা মঙ্গলের মধ্যে ঐ উপত্যাকার দিকে যাবো আর-অন্য একটা ব্ল্যাঙ্ককে তুলে নেব। ওর নাম হ্যাঙ্ক উইলিয়ার্ড। আমার ধারণা সোয়ান তোমাকে তার সম্বন্ধে বলবে কি ভাবে হাটন সাব এবং ম্যামবো এই ফর্সা লোকটাকে দিনের পর দিন লুকিয়ে রেখেছিল। কীভাবেই বা সে আমাদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক। যে তোমাকে এসব কথা বলবে এই অন্য ব্ল্যাঙ্ক উইলিয়ার্ড ও তোমার মতো ভাড়াটে সৈনিক। আমার মনে হচ্ছিল কী করে হ্যাঙ্ক সমস্ত লোকগুলোকে নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল। ব্যাপারটা হচ্ছে ইলিয়ার্ড একজন নিরপেক্ষ বৈমানিক, ভাগ্যের যোদ্ধা, আংশিক মদ্যকাসক্ত আর একজন পুরোদস্তুর সৈনিক। কোরিয়ার যুদ্ধের সময় স্বাভাবিক জীবন ছেড়ে সৈনিকের জীবনযাবন করতে হত ওকে। যুদ্ধের সৈন্যবাহিনী থেকে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে সে পয়সায় জন্য তার কাছে কাজ করত। হাইতির গত আক্রমণের সময় উইলিয়ার্ড একটা পুরনো বি-২৫ চালিয়ে ছিল এবং পোর্ট-অফ-প্রিন্স এ পাপাড়কের প্রাসাদে বোমা ফেলার চেষ্টা করেছিল। তবে হ্যাঙ্ক তাতে খুব বেশী লাভবান হয়নি। পাপিডক আর টমটম ম্যাকিউট অন্যান্য আক্রমণকারীদের লোহার খাঁচায় পুরেছিল। পাপিডক হ্যাঙ্ককে প্রায় দশহাজার ডলার দিয়েছিল। তবু উইলিয়ার্ড কোন একটাও শরীর কেনেনি এবং তারা দেখিয়ে দিয়েছিল যে তারা কতখানি পাপাডক এবং পি. পি. ঘৃণা করে। যখন আমার ঘুম আসছিল ঠিক তখনই ড্রাম বাজার আওয়াজ পেলাম। হঠাৎ একটা চীৎকারে আমার ঘুম ভেঙে গেল। লিডা ও ডুপি তখন জেগেছিল। ডুপি আমাকে লক্ষ্য করল। তার বাঁ-হাতে টমি বন্দুক তৈরী ছিল। মেয়েটা হঠাৎ চমকে উঠে পড়ল। কিছুক্ষণ পরে কে যেন কর্কশ ভঙ্গীতে হেসে উঠল। লিডা তার ফ্যাকাশে চোখদুটো কি যেন জিজ্ঞাসা করছিল। বলল যে তাদের দিকে গুলি আসছে কিনা। ডুপি তার হাতে টোকা মেরে আমার দিকে তাকাল। পাপিডক এবং বুড়ো পি. পি. অনেক অস্ত্র পেয়েছিল। এক-একটা করে তারা গুলি চালাতে থাকলো। লিডা আমার দিকে তাকিয়ে ডুপির দিকে ফিরে যে ড. রোমেরা ভ্যালডেজকে দেখে হাসত সে একজন ডাক্তার। মেয়েটা বলল, কেন তারা লোকগুলোকে মারছে আর তাদের সরিয়ে পরিষ্কার করে ফেলছে জায়গাটা। ডুপি মাথাটা নাড়ল এবং বলল, মত ঘাবড়াও, আমার মন হলো পাপিডক এবং পি. পি. তখন একটু বেহুঁশ ছিল। তারা অস্ত্র দিয়ে সমস্তটা গরম করতে পারবে। লিডা চেঁচিয়ে উঠল, অস্ত্র, ডুপি তার ব্যাগটা নিয়ে বলল তাড়াতড়ি অন্ধকার করে দিতে। বলল, ব্ল্যাঙ্ক ঠিক আছে? আমি হাসার ভান করে বললাম ঠিক আছে। একটা জিনিষ আমি বুঝতে পারছিলাম না যে হ্যাঙ্ক উইলিয়ার্ড বোবাধহয় স্যাম ক্লেচারকে দেখে থাকতে পারে। উইলিয়ার্ডের পরনে ছিল অফিসারের গোলাপী পোষাক আর একটা ছেঁড়া কিন্তু পরিষ্কার ভডি শার্ট। ধূসর চোখে তাকিয়ে যেন আমায় বুঝিয়ে দিল সে স্যাম নয়। লিডা, ডুপি আর আমি পাহাড়ের ধার দিয়ে উপত্যকার মধ্যে যখন যাচ্ছিলাম তখন অন্ধকার হয়েছে যথেষ্ট। ডুপি আমাদের পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে পথ দেখাল। এরপর আমরা একটা গিরিসংকটের মধ্য দিয়ে গেলাম। শেষ গিরিসংকটে একটা কুঁড়েঘর। ছোট একটু আগুন দেখলাম পাহাড়ের বৃত্তের মধ্যে। আগুনের পাশে প্রায় ডজনখানেক কালো লোক আর হ্যাঙ্ক উইলিয়ার্ডকে দেখা ভালো। ডুপি এবং মেয়েটা সেই কালো লোকগুলোর সঙ্গে দুর্বোধ্য ভাষায় কথাবার্তা বলছিল যে ভাষা আমার পরিচিত নয়। অনুমান করলাম কালো লোকগুলো একটা উৎসবের জন্য তৈরী হচ্ছিল।
হা-হ্যাঁ। কিন্তু আর-একটা ব্যাপার আছে?
কি?
যদি আমি এর থেকে বেরিয়ে যাই তবে ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট আমাকে একটু অসুবিধায় ফেলতে পারে? তোমাদের মতো সি. আই. এ-র লোকেরা পাউডার প্যাক করে। তোমরা ভাব আমার জন্য ঠিক করে রেখেছ এটা যাতে তারা আমার পাশপোর্টটা আটকে দেয়। আমি সত্যিই আশ্চর্য হয়ে দেখলাম আপনি বলতে চাইছেন তারা এখনও এটা তৈরী করেনি। সে বলল, তুমি যদি আমাকে সাহায্য না কর তবে আমি ফঁদে পড়ব। মন চাইলে তোক কিছু অদ্ভুত কাজ করতে পারে, আমি বললাম, ঠিক আছে। প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না তবে দেখছি কি করতে পারি। এখানেই সময়টা কেটে গেল। উইলিয়ার্ডকে ওখানে দেখলাম। হাউসগান একটা রূপোর চামচ পকেট থেকে বার করে পাথরের বৃত্তের কাছে এটা গর্ত খুঁড়ছিল। মনে হয় ও ছোটখাট কবর খুঁড়ছে। খবরটার মাথায় যীশুর মূর্তি হাউসগান ন্যাকড়া জড়ানো পুতুলটাকে নিয়ে অস্ফুটস্বরে যেন কি বলছিল। লিডা ফিসফিস করে বলল, রুচিবেল হচ্ছে একটা দানব। শয়তানের স্যাঙাৎদের মধ্যে একজন। হ্যাঙ্ক উইলিয়ার্ড বলল, আমি এখন এই ভেবে দুঃখী যে আমি বুড়ো পি.পি. নই। যদিও কুত্তির বাচ্চাটা লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক। আমি ডুপিকে দেখবার জন্য ওপর দিকে তাকালাম। ডুপির চাউনি দেখে মনে হলো যেন আমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু কেন? আমি বুঝলাম না। হাউসগান ছোট কবরটার মধ্যে পুতুলটাকে রেখে ঢেকে দিল। খুব জোরে ড্রাম বেজে উঠল আর মেয়েটা লাফিয়ে কবরটা পার হয়ে এর চারধারে নাচতে লাগল।