রোমেরা কাগজে যে-সমস্ত ঘটনা লিখত তাতে একটা বাজে ধরনের ব্যবহার লক্ষ করলাম। পাপিডক কিন্তু সমস্ত ঘটনাকেই অস্বীকার করে যাচ্ছিল। দুতিন সপ্তাহ পর গল্পটা সবার কাছে প্রকাশ পেলেও কেউই ভালো করে জানালো না। তারপর এফ-বি-আই-এর কাজ করতে চলে গেল।
ভ্যালডেজ কোনদিনই আমেরিকার নাগরিক হয়নি। এবং সি-আই-এর লোকেরাই বার করেছিল যে ভ্যালডেজ এখানো বেঁচে আছে। আবার এ.এক্স.ই ফাইলের মতে পি. পি. ট্রাভেলিন য়্যানস ইসীর কাছে কোন একটা জায়গায় তাকে রেখে দিয়েছে। আমি একটা ব্যাগ নিয়ে ডেকহাউসের দিকে গেলাম। সঙ্গে আমার কতগুলো অ্যাসো ছিল। লিডাকে জাগিয়ে অন্ধকারে ছুটতে লাগলাম। টরটুনা এবং মেনল্যাণ্ডের মধ্যে গিয়ে হাজির হলাম। লিডা আবার সেই চার্টটা পড়ল এবং তখন পাপাডকের পাহারদাররা আমাদের লক্ষ্য করে গেল।
টরটুনার পূর্বদিকে যাচ্ছি সেইসময় লিডা চারদিক ভালোভাবে দেখে নিয়ে বলল, তারা পশ্চিমদিকে আরও দশ মাইল ছুটে তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছবে। রাত্রিটা খুব ঠাণ্ডা ছিল, লিডা আমার কাছে সিগারেট চাইল আমি ওকে সাবধান করে দিলাম যে, পাপাক নিশ্চয় কোন পাহারা রেখেছে, কারণ সে খুব-একটা বোকা নয়।
আমরা সমুদ্রের ধারে যেখানে ইউ এন ফ্রন্ট কোম্পানী একটা বন্দরের ব্যবস্থা করেছিল সেখানে আমরা রইলাম। লিডা বলল যে, জায়গাটা সম্পর্কে এত অপবাদ আছে যে, পাপিডক এবং টনটন ম্যাকিউট এটাকে সব সময় কড়া চোখে রাখে। এবং এমন কোন লোক নেই যারা এ জায়গায় যেতে সাহস করে। আমরা সমুদ্রের দিকে ছুটলাম। আমি ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে বললাম যে লাইটটা নিয়ে তাড়াতড়ি এগিয়ে যেতে। লিডা বলল আমাকে যে, আমি খুব চালাক কিন্তু সে খুব অসন্তুষ্ট। লিডা বলল এখন তার নতুন নাম স্যাম ক্লেনার। কারণ স্যাম ক্লেনার রায়াফ্রান্সকার হয়ে আমেরিকায় যুদ্ধ করেছিলেন। এবং সেখানে যে এজন্য স্যাম কিছু মনে করবে না।
লিডা তখন আমাকে সেই ডুপি সম্পর্কে একটুখানি বলল। এবং আমরা তা সঙ্গে দেখা করার জন্য গেলাম। হাইতির লোকেরা বলে যে ডুপি মানে হচ্ছে আত্মা বা প্রেত! সাধারণ একটা মানুষ মরে গেলে তার আত্মা কখনো কখনো আমাদের চারপাশে ঘোরাফেরা করে। লিডা বলেছিল যে ব্ল্যাকরা তাকে ডুপি বলতো। কারণ সে বনে জঙ্গলে ভূত প্রেতদের মতো তাদের সামনে দেখতে পেত। ডুপি ব্ল্যাকদের মধ্যে সবচেয়ে নাম করা ব্ল্যাক। তারপর আমি কলের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমরা যখন বসলাম তখন কি একটা শব্দ ভেসে এল। সমুদ্রের তীর থেকে একটা সাদা আলো দেখা গেল। রাতে সাদা আলোটা জিজ্ঞাস্য হয়ে দাঁড়ায়। যখন সে জিজ্ঞাসা করছে-কে তুমি? লিডা নৌকো থেকে খুব জোরে ছুটতে ছুটতে খুব উত্তেজনার সঙ্গে আমার কাছে এল। বলল নিক, তুমি ঠিকই বলেছ যে ওরা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। বললাম লিডা যেন খুব তাড়াতাড়ি চাটটা পড়ে নেয় যতক্ষণ না আমি ব্রীজের ওপর উঠছি। লিডা আমাকে ডকের বেশ একটা সুন্দর বর্ণনা দিয়েছিল। বলেছিল কোন কারণবশতঃ ব্রীজের দ্বারা ঢাকা পড়ে গেছে। লিডা বলল, আমরা সেই ব্রীজের তলায় ছুটে যাব এবং কিছুক্ষণের জন্য লুকিয়ে থাকব। আমি ঠিক রাজী হইনি। ব্রীজের ওপর দিকে আস্তে আস্তে বললাম লিডাকে। কিন্তু আমরা পাপাডকের পাহারাদারদের দেখতে পেলাম না। এরপর আমি পিস্তল রাখার বেল্টটায় লুগারটা নিলাম। মেশিনগানটা কোলের উপর রাখলাম এবং গাইড লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। তারপর আমি ডকের শেষের দিকটার দুদিকে সী-উইচকাটে লম্বায়চওড়ায় সোজা করে রাখলাম। সমুদ্র স্রোত খুব জোরে বইছিল। সী-উইচটা বোর্ডের ওপরে ছিল। বন্দরে ফিরে যাবার জন্য ইঞ্জিনটা একটু মেরামত করলাম। তার ধনুকটাকে আলোর মাঝখানে ঠেলে দিল। আমি এক সেকেণ্ডের জন্য তাকে ঠেলে দিলাম। ঠিক আমার মাথার ওপরে ডকের একটা দরজা খুলে গেল। আমার সামনে একটা সাদা আলো ঝলসে উঠল। তারপর একটা শব্দ এল–বন যৌ ব্ল্যাঙ্ক।
কেহে, সাদা চামড়ার মানুষ? আমি মেশিনগানের ট্রিগার থেকে হাত সরিয়ে ওটাকে তার নজরের মধ্যে এনে বললাম-কে তুমি? এরপর খুব হাসির রোল উঠল, সে গর্তটার কাছে তার মাথাটা রাখল। এবং আলোটা ঢেকে গেল। লাইটটা তার মুখের উপর পড়ল।
আমি বললাম, তাহলে আমি ডুপি। এবার সোয়ানদের কথা বলতো। তুমি তো ক্লেচার। আমি নেড়ে বললাম–আমি-ই-ক্লেচার। আমি জানলাম যে এ এক্সই ফাইলে ডুপির ছবি আছে। ছবিতে ডুপিকে একজন যুবকের মতো দেখচ্ছিল। ছবিটার নাম ডিয়াজ ওরটেগা, জাতে কিউবান, এবং ওরটগার মরে যাবার সম্ভাবনা ছিল কিন্তু সে ছুটে পালিয়ে রেহাই পেয়েছিল। কাস্ত্রো তাকে খুঁজে বার করেছি। কালো লোকটা তার একটা পেশীবহুল হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, ব্ল্যাক, তুমি এদিকে এস, আমাদের এখন সময় নষ্ট করলে চলবে না।
আমি বললাম, আমাকে প্রথমে সী-উইচ চালাতে হবে। আমার অনেক সময়ের দরকার। আমি চাই না যে কোন লোক আমাদের সঙ্গে এসে থাকুক। লিডা বলল, ওকে কজা করতে দাও আমাকে। আমি তাকে ডকের-দরজার সামনেই সাহায্য করলাম। তারা যেন ফিসফিস করে কি বলছিল। জুপি কুকুরের মতো আওয়াজ করল।
আমি সী-উইচটাকে সাবধানে থাকবার জন্য হাত নাড়লাম। মনে হলো যে ওরটেগা ব্ল্যাঙ্ক সোয়ানের আক্রমণের জন্য কি করেছে, তা বার করতে হবে।