১৪. দ্য মিউট্যান্ট
১৫. দ্য সাইকোলজিস্ট
১৬. সম্মেলন
১৭. দ্য ভিজি সোনার
১৮. ফাউণ্ডেশন-এর পতন
১৯. অনুসন্ধান শুরু
২০. ষড়যন্ত্রকারী
২১. মহাকাশে অবকাশ
২২. নিও ট্রানটরে মরণ থাবা
২৩. ট্রানটরের ধ্বংসস্তূপ
২৪. কনভার্ট
২৫. সাইকোলজিস্টের মৃত্যু
২৬. অনুসন্ধানের সমাপ্তি
.
প্রথম পর্ব : দ্য জেনারেল
বেল রিয়োজ… স্বল্পস্থায়ী কর্মজীবনে রিয়োজ যোগ্যতার সাথে “দ্য লাস্ট অব দ্য ইম্পেরিয়ালস” উপাধি অর্জন করেন। তার সামরিক অভিযানগুলো পর্যালোচনা করে সামরিক কলাকৌশলের ক্ষেত্রে তাকে পিউরিফয়-এর সমকক্ষ বলে মনে করা হয়, এবং সম্ভবত তার নেতৃত্ব দানের গুণাবলি ছিল আরো বড় মাপের। এম্পায়ারের পতনের সময় তার জন্ম হয়েছিল বলে পিউরিফয়-এর যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কম, তারপরেও ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম অমর করে রাখার সুযোগ তিনি পান, যখন এম্পায়ারের প্রথম জেনারেল হিসেবে তিনি মুখোমুখি হন ফাউণ্ডেশন-এর–
এনসাইক্লোপেডিয়া গ্যালাকটিকা*
[* এনসাইক্লোপেডিয়া গ্যালাকটিকার সকল উদ্ধৃতি এনসাইক্লোপেডিয়া গ্যালাকটিকা পাবলিশিং কোং টার্মিনাস-এর আদেশক্রমে ১০২০ এফ.ই.তে প্রকাশিত ১১৬তম সংখ্যা থেকে নেওয়া হয়েছে।]
.
১. জাদুকরের সন্ধানে
বেল রিয়োজ এসকর্ট ছাড়াই চলাচল করেন। গ্যালাকটিক এম্পায়ারের অগ্রযাত্রায় ক্ষুব্ধ হয়ে আছে এমন এক স্টেলার সিস্টেমে অবস্থানরত সামরিক বহরের প্রধানের জন্য কাজটা ইম্পেরিয়াল কোর্ট এর নিয়ম বহির্ভূত।
কিন্তু বেল রিয়োজ তরুণ এবং উদ্যমী-নিরাবেগ এবং হিসেবি রাজদরবারের নির্দেশে মহাবিশ্বের শেষ প্রান্তে ছুটে যাওয়ার মতো যথেষ্ট উদ্যমী-তা ছাড়াও তিনি কৌতূহলী। লোক মুখে ছড়ানো অদ্ভুত চমকপ্রদ কিছু কাহিনী তার কৌতূহল বাড়িয়ে তুলেছে। একটা সামরিক অভিযানের সম্ভাবনা তার প্রথম বৈশিষ্ট্য দুটোকে একত্রিত করেছে। সব মিলে তিনি হয়ে উঠেছেন অপ্রতিরোধ্য।
পুরোনো গ্রাউণ্ড কার থেকে নেমে জীর্ণ ভবনের দরজার সামনে অপেক্ষা করতে লাগলেন। দরজার ফটোনিক দৃষ্টি জীবন্ত হয়ে উঠল। কিন্তু দরজা খোলার পর দেখা গেল সেটা হাতে ধরা।
বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে হাসলেন রিয়োজ। “আমি রিয়োজ-”
“চিনতে পেরেছি।” নিজের জায়গায় অনড় দাঁড়িয়ে থাকলেন বৃদ্ধ। “কী। প্রয়োজন?”
এক পা সরে আত্মসমর্পণের ভঙ্গি করলেন রিয়োজ। “শান্তি। যদি আপনি ডুসেম বার হন, তা হলে একটু কথা বলার সুযোগ চাই।”
ডুসেম বার সরে দাঁড়ালেন একপাশে, ঘরের দেয়ালগুলো আলোকিত হয়ে উঠল। জেনারেল যেন দিনের আলোয় প্রবেশ করলেন।
ভেতরের দেয়াল স্পর্শ করে তিনি আঙুলের দিকে তাকালেন। “আপনাদের সিউয়েনায় এই জিনিস আছে?”
বার-এর মুখে চিকন হাসি। “সবার কাছে নেই। নিজের হাতে যতদূর সম্ভব মেরামত করে আমি এতদিন টিকিয়ে রেখেছি। দরজায় অপেক্ষা করিয়ে রাখার জন্য দুঃখিত। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র অতিথির আগমন রেজিস্ট্রার করতে পারলেও দরজা খুলে দিতে পারে না।”
“ঠিক মতো মেরামত করতে পারেননি?” ঠাট্টার সুরে বললেন জেনারেল।
“যন্ত্রপাতিগুলো দুর্লভ হয়ে পড়েছে। বসুন, স্যার। চা খাবেন?”
“মাই গুড স্যার, স্যিউয়েনায় সামাজিক মেলামেশায় চা না খেয়ে পারা যায়?”
সম্ভ্রান্ত বৃদ্ধ লোকটি চলে গেলেন নিঃশব্দে, তার আগে আস্তে করে মাথা নিচু করে অভিবাদন করলেন। ভঙ্গিটা তিনি গত শতাব্দীর সোনালি দিনের অভিজাত পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন।
রিয়োজ তার মেজবানের অপসৃয়মান কাঠামোর দিকে অনিশ্চিত ভঙ্গিতে তাকিয়ে থাকলেন। তিনি পূর্ণ সামরিক শিক্ষায় শিক্ষিত। অভিজ্ঞতার ঝুলিও বেশ ভারী। কিন্তু তারপরেও একটা প্রাচীন কক্ষের সেকেলে পরিবেশে হঠাৎ করেই টুয়েন্টিয়েথ ফ্লিটের । পাষাণ হৃদয়ের নেতা কেমন যেন ঠাণ্ডা অনুভব করতে লাগলেন।
শেলফে সারি সারি সাজানো নিকষ কালো বক্সগুলোকে বই বলে চিনতে পারলেন জেনারেল। সব অপরিচিত শিরোনাম। ঘরের কোণায় বড় একটা যন্ত্রকে তিনি অনুমানে ধরে নিলেন রিসিভার যা বইগুলোকে শব্দ এবং দৃশ্যে পরিণত করে। কীভাবে কাজ করে তিনি স্বচক্ষে কখনো দেখেননি, তবে শুনেছেন।
বহু আগে যখন পুরো গ্যালাক্সি জুড়ে এম্পায়ার বেড়ে উঠছিল সেই সময় প্রতি দশটার মধ্যে নয়টা বাড়িতেই এরকম সারি সারি বই এবং রিসিভার থাকত।
কিন্তু সময় পাল্টেছে। বই এখন বৃদ্ধ লোকের সঙ্গী। এবং যে কাহিনী থাকে তার অর্ধেকেরও বেশি কাল্পনিক।
চা এসে গেছে, বসলেন জেনারেল। ডুসেম বার নিজের পেয়ালা তুলে বললেন, “আপনার সম্মানে।”
“ধন্যবাদ। আপনার সম্মানে।”
ডুসেম বার বললেন, “শুনেছি আপনি তরুণ। পঁয়ত্রিশ?”
“প্রায় কাছাকাছি। চৌত্রিশ।”
“সেক্ষেত্রে,” হালকা গুরুত্বের সাথে বললেন বার “দুঃখের সাথে জানাতে বাধ্য হচ্ছি আমি আপনার বিনোদনের কোনো ব্যবস্থাই করতে পারছি না। পানীয়, ধূমপান বা কোনো সুন্দরী তরুণীকে আপনার মনোরঞ্জনের জন্য হাজির করতে পারব না।”
“এসবের কোনো প্রয়োজন নেই, স্যার।” বলার সুরে পরিষ্কার বোঝা যায় মজা পেয়েছেন জেনারেল। “এরকম অনুরোধ কি আপনি অনেক বেশি পান?”
“যথেষ্ট। দুর্ভাগ্যক্রমে অজ্ঞ লোকেরা স্কলারশিপের সাথে জাদুবিদ্যাকে গুলিয়ে ফেলে এবং মনে করে যে ভোগবিলাসের জন্য অনেক বেশি জাদুকরী প্রলেপ প্রয়োজন।”