তার ক্ষমতাটা অভিশাপ নাকি আশীর্বাদ, এটা বলতে পারবো না।
একদিন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন পড়ে জানতে পারি যে সুমিদার অ্যাপার্টমেন্টের আশপাশে তল্লাশি করে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে লম্বা সময় ধরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে এসেছে সে। এটা সত্য নাকি মিথ্যা, জানি না।
একদিন সাওরি আমাকে সুমিদাকে নিয়ে লেখা একটা প্রতিবেদন পড়তে দেখে ফেলে। চেহারায় একটা মন খারাপ ভাব ভর করে তার। মুখে অবশ্য কিছু বলে না, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে সুমিদার কথা ভাবছিলো সে। এরপর থেকে আর তার সামনে সুমিদাকে নিয়ে লেখা কিছু পড়িনি।
সুমিদাই যে কাজুয়াকে হত্যা করেছে এই কথাটা শেষমেষ কাউকে বলা হয়নি। সাওরি এটা জানতে পারলে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাবে। এর থেকে ব্যাপারটা একটা দুর্ঘটনাই ধরে নিক সে।
একদিন সাওরি আমার পাশে বসে আপেল কেটে দেয়ার সময় বলি, “কিয়োকোর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে কেন?”
“গুরুত্বপূর্ণ কিছু না।”
“বলো না।”
“একদিন তার বাসায় ডেলিভারি দিতে গিয়ে একটা ছবি দেখি। ছবিটায় ছোট একটা ছেলে ছিল তার সাথে। ছেলেটার চেহারা খুবই পরিচিত ঠেকে আমার কাছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে ছেলেটার ভুলে বাবা-মা মারা যায়, কিয়োকো তারই মা।”
সাওরিকে কাজুয়ার চোখের ব্যাপারে কিছু বলিনি আমি। তবে একদিন বলবো, সবকিছু জানাবো তাকে। বিশ্বাস করবে কিনা এটা তার ব্যাপার।
.
৩
পরের গ্রীষ্মে আমার পুরনো স্মৃতিগুলো ফিরে পেলাম। একদিন টিভি দেখার সময় হঠাৎই ছোটবেলার নামির চেহারা ভেসে ওঠে আমার মনের পর্দায়। প্রথমে কিছুই বুঝতে পারি না। পরে মা’র কাছে পুরো দৃশ্যটা বর্ণনার পর সে বলে যে এটা আমার ছোটবেলার একটা জন্মদিনের অনুষ্ঠানের স্মৃতি।
ধীরে ধীরে পড়াশোনায় উদ্যোম ফিরে আসে। খেলাধুলাতেও আগের মতন ভালো করতে থাকি।
সময় পেলেই কায়েদিতে যাই আমি। কিয়োকো, কিমুরা আর সাওরি আমার পথ চেয়ে থাকে। মিঃ ইশিনো প্রতিবার নিয়ে যান আমাকে স্টেশন থেকে। ওখানে গেলে কাজুয়ার কবরটা দেখে আসতে ভুলি না। আজকের এই আমির পেছনে তার অবদানই সবচেয়ে বেশি।
তবে আরেকজনকে ভুললে চলবে না। বাম চোখ হারানো,? নামি। তার দৃঢ় সংকল্পের কারণেই শেষ হয় অশুভ রূপকথার গল্পটা।
-শেষ-