প্রশংসাটা বেশি হয়ে যাচ্ছে, বাদ দাও এবার, হাত তুলল কিশোর। মুসা, তোমার ভয়টা গেছে তো?
এক্কেবারে মাথা কাত করল মুসা।
আর কিছুকে ভয় পাবে না কখনও?
জীবনেও না।
তা তো হলো, বিড বলল। কিন্তু শুঁটকির গোষ্ঠী বাজির টাকা মিটিয়েছে?
দেবে আর কখন? হাসতে হাসতে বলল কিশোর। প্রাণ নিয়ে পালানোর পথ পাচ্ছিল না, আবার টাকা। জানালার কাছে যা হুড়াহুড়িটা করল… দৃশ্যটা মনে করে হো-হো করে হেসে উঠল আবার সে।
হাসিটা সংক্রমিত হলো সবার মাঝে।
আরেক দফা হাসাহাসি আর চোখ মোছামুছির পর কিশোর বলল, চিন্তা নেই, আশা করি কাল স্কুলেই আদায় করে ফেলতে পারব টাকাটা।
যদি দিতে না চায়?
তোমরা তো আছই। আবার এমন এক প্যাঁচে ফেলব, সেধে এসে পায়ে ধরে দিয়ে যাবে।
*
খেয়েদেয়ে কিশোরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে স্যালভিজ ইয়ার্ড থেকে বেরিয়ে এল মুসা, রবিন, টম, বিড ও তাদের বন্ধুরা। গেট পর্যন্ত তাদের এগিয়ে দিয়ে গেল কিশোর।
সবাই এক জায়গায় থাকে না। একসঙ্গে যতদূর যাওয়া যায়, গেল, তারপর আলাদা হয়ে যার যার বাড়ির দিকে রওনা হতে লাগল একে একে।
সবার শেষে আলাদা হলো মুসা আর রবিন।
নির্জন রাস্তা ধরে হনহন করে হেঁটে চলল মুসা। একটা জায়গায় দুধারে গাছের সারি। ঘন ঝোঁপঝাড়। তার মধ্যে দিয়ে চলে গেছে পথ।
সেখানটায় এসে থমকে দাঁড়াল মুসা। ভয়ে ভয়ে তাকাল অন্ধকারের দিকে। বুঝতে পারছে, মুখে যতই বলুক ভয় পাবে না, ভূতের ভয় সে মন থেকে তাড়াতে পারবে না কোনদিন।
চারপাশে তাকাল অন্য কোন পথচারী আছে কিনা সেই আশায়। কিন্তু এত রাতে কে আর বেরোবে অকারণে। কাউকে দেখল না।
অনন্তকাল ধরে দাঁড়িয়েও থাকা যায় না। দোয়া-দরূদ পড়ে ফুঁ দিয়ে নিল বুকে। তারপর যা থাকে কপালে ভেবে দিল ভো দৌড়। টেরির কপাল খারাপ, দৌড়টা দেখতে পেল না। এ মুহূর্তটার জন্যে। পঞ্চাশ হাজার ডলার বাজি ধরতেও দ্বিধা করত না তাহলে সে।