বৃহস্পতিবার, মে 15, 2025
  • Login
BnBoi.Com
No Result
View All Result
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

পেঁচার ডাক – রকিব হাসান

Pechar Dak by Rakib Hasan

সারা গাঁয়ের মানুষকে জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছে কে?

তাহলে?

নিশাচরদের জিজ্ঞেস করব।

এই তো শুরু হলো রহস্য করে কথা বলা!

আরি, সহজ করেই তো বললাম। নিশাচর মানুষদের চেনো না? চৌকিদার, চৌকিদার।

ওহ, জোরে একটা নিঃশ্বাস ফেলল মুসা। তাই বলো। ঠিক বলেছ। পড়লে ওদের চোখেই পড়তে পারে। রাতভর পাহারা দেয়। কিন্তু জিজ্ঞেস করলেই বলবে কেন?

বলবে, কারণ পম আর কম আমার চাচা।

তোমার চাচা। আমাদের তো নয়।

আমিই জিজ্ঞেস করব তাহলে। দিনের বেলা ওদের সাথে কথাই বলা যাবে না। সারারাত পাহারা দিয়ে দিনে ক্লান্ত হয়ে ঘুমায়। মেজাজ থাকে খারাপ। কথা জিজ্ঞেস করতে গেলে রেগে উঠতে পারে। তাই রাতেই দেখা করব। তখন তোমরা যেতে চাইলেও যেতে পারবে না। তোমাকে আর ফারিহাকে তো বেরোতে দেবেন না আন্টি, ভাল করেই জানি। জ্বর থেকে সরে উঠলে, ঠাণ্ডা লাগার ভয়েই বেরোতে দেবেন না। রবিনকেও বেরোতে দেবেন না ওর আম্মা। সে-ও জ্বর থেকে উঠেছে। বাকি রইলাম আমি আর টিটু। অতএব আমরাই বেরোব।

মেরিচাচী যদি বেরোতে না দেন?

চাচী আজ বাড়ি থাকবে না। রাতে একটা পার্টিতে চলে যাচ্ছে চাচা-চাচী দুজনেই। অতএব আমি ফ্রী।

সত্যি, তোমার স্বাধীনতা দেখলে হিংসেই হয়! মুখ বিকৃত করে ফেলল মুসা, আমার মাটা যে কি! খালি পদে পদে বাগড়া!

রবিনের দিকে তাকাল কিশোর, রবিন, তোমাদের বাড়ি আর বারের বাড়ির মাঝখানের বাড়িটা কার?

কিটিদের।

বয়স?

আমাদেরই মত। কিছুটা বেশি হতে পারে।

করে কি?

স্কুলে পড়ে। পাখি দেখার শখ।

খাতির আছে তোমার সঙ্গে? নাহ, তেমন একটা নেই। দেখা হলে কেমন আছো, ভাল; বই নিয়ে দুচারটে কথা, এই পর্যন্ত। সে-ও বইয়ের পাগল। মাঝেমধ্যে আমার কাছে বই নিতে আসে। কেন?

যেহেতু হুবারের পাশের বাড়িতেই থাকে, তাকে গিয়েও জিজ্ঞেস করতে পারো গতরাতে কোন শব্দ শুনেছে কিনা, যেটা তার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়নি। একটা ছুতো করে চলে যেতে পারবে না?

মাথা কাত করল রবিন। আজই পারব। একটা পাখির বই হাতে করে নিয়ে যাব। লোভে চকচক করতে থাকবে ওর চোখ, আমি জানি। পড়ার জন্যে পাগল হয়ে যাবে। দেব, তবে তার আগে কথা আদায় করে নেব যতটা পারা যায়।

চুটুস করে চুটকি বাজাল কিশোর, ভাল বুদ্ধি! ঠিক আছে, তাই কোরো। জেনে এসে আমাকে ফোন করে জানিয়ো।

.

০৫.

বাড়ি ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেল। তাড়াহুড়া করে একটা বই বের করে নিয়ে পাশের বাড়িতে রওনা হলো রবিন। পাওয়া গেল কিটিকে। সে নিজেই দরজা খুলে দিল। অবাক হলো রবিনকে দেখে। আরি, কি ব্যাপার, তুমি! আজ সূর্য পশ্চিম দিকে উঠল নাকি? এসো, এসো।

সূর্য ঠিক দিকেই উঠেছে, হাতের বইটা দেখাল রবিন। সেদিন বাবা কিনে এনে দিল এটা। ভাবলাম, তোমার তো পাখি খু। পছন্দ, হয়তো পড়তে ইনটারেসটেড হবে।

লোভী ছেলে রসগোল্লার দিকে যে দৃষ্টিতে তাকায় ঠিক সেই দৃষ্টি দেখা গেল কিটির চোখে। এসো, এসো, ঘরে এসো। আম্মা-আব্বা কেউ নেই বাড়িতে। চুটিয়ে গল্প করা যাবে। হাত বাড়াল, দেখি, বইটা?

ঘরে ঢুকেই বই খুলে বসল কিটি। ভঙ্গি দেখে মনে হলো চুটিয়ে গল্প করা বাদ দিয়ে এখন এই অবস্থায় যদি তাকে ফেলে যায় রবিন, তাহলেই খুশি হবে বেশি।

রবিন সেটা বুঝল। কিভাবে কথা শুরু করা যায় ভাবতে লাগল। সুযোগটা কিটিই তাকে করে দিল। বইয়ের একটা পাতা খুলে চিৎকার করে উঠল, আরে, পেঁচা? আর কি একখান ছবি দিয়েছে দেখো। দারুণ! র্দান্ত! ওই শোনো, পেঁচা ডাকছে। যেন বুঝতে পেরেছে আমি এখন ওর ছবি দেখছি। শুনতে পাচ্ছ?

কান পাতল রবিন। ডাকটা শুনতে পেল সে-ও! আজই প্রথম শুনলে? না কাল রাতেও শুনেছ?

রবিনের দিকে তাকাল কিটি। মাথা ঝাঁকাল। শুনেছি। জ্যোৎস্নায় ডানা ভাসিয়ে এসে বসল আমার জানালায়। মনে হলো যেন ওর সঙ্গে গিয়ে ইঁদুর ধরার দাওয়াত দিতে এসেছে আমাকে। কিছুক্ষণ বসে থেকে চলে গেল। ওরা ডাকে খুব জোরে, কিন্তু ওড়ার সময় কোন শব্দ হয় না। ছায়ার মত ভেসে চলে যায়।

শব্দ করলে কি আর ইঁদুর বসে থাকত ধরা পড়ার জন্যে। ডানা ঝাঁপটানোর শব্দ শুনলেই পালাত। আচ্ছা, যাই হোক, কটার সময় ডেকেছিল পেঁচাটা, মনে আছে?

অবাক হলো কিটি। কেন, তুমিও ওর ডাক শুনেছ নাকি? জবাবের অপেক্ষায় না থেকে চোখ আধবোজা করে ভাবতে লাগল, ডাকটা শুনেছি শুতে যাওয়ার ঠিক আগে। তখন বাজে দশটা। সাড়ে বারোটায় ঘুম ভেঙে গেল ওদের ডাকাডাকিতে। ওই সময়ই একটাকে দেখলাম জানালায় এসে বসতে। আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে গেলাম ভালমত দেখার জন্যে।

তোমার বেডরূম কোনদিকে? আমাদের বাড়ির দিকে?

না, মিস্টার হুবারের। কাল রাতে চোর ঢুকেছিল ও বাড়িতে, জানো বোধহয়। কখন যে ঢুকল কে জানে। সাড়ে বারোটায় যখন জানালা দিয়ে তাকালাম, তখনও দেখি নিচতলায় আলো জ্বলছে। অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করেন মিস্টার হবার। মাঝে মাঝে জানালার পর্দা টানা থাকে না। ওই সময় দেখেছি টেবিলের সামনে বসে কি যেন করছেন। কাল রাতে রেডিও চালানো ছিল তার। শব্দ শুনেছি।

সাড়ে বারোটার পর আর কোন পেঁচা ডাকতে শোননি? সারারাতই তো শোনার কথা। চাঁদের আলো ছিল। নিশ্চয় ইঁদুর ধরেছে।

শুনেছি। পেঁচারা জ্যোৎস্না খুব ভালবাসে। অনেক রাতে আরেকবার ঘুম ভেঙে গেল আরেকটা শব্দে। কিসের শব্দ বুঝলাম না। আলো জ্বেলে ঘড়ি দেখলাম। সোয়া তিনটে বাজে। কয়েকটা বাদামী পেঁচা আর কয়েকটা ছোট পেঁচা ডাকাডাকি শুরু করল। ঝগড়া বাধিয়েছে মনে হলো।

Page 5 of 22
Prev1...456...22Next
Previous Post

৩০০১ : দ্য ফাইনাল ওডিসি – আর্থার সি ক্লার্ক

Next Post

দি আউটসাইডার – আলবেয়ার কাম্যু

Next Post

দি আউটসাইডার - আলবেয়ার কাম্যু

প্রেতের অভিশাপ - রকিব হাসান

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In