বৃহস্পতিবার, মে 15, 2025
  • Login
BnBoi.Com
No Result
View All Result
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

মাছির সার্কাস – রকিব হাসান

Machir Circus by Rakib Hasan

লাল হয়ে গেল এলিজা। কথা জোগাল না মুখে।

সবচেয়ে বেশি মজা পাচ্ছেন মিস্টার গ্রেগ। হুপলা খেললেন। লজেন্স কিনে চুষতে লাগলেন। এলিজাকে সঙ্গে নিয়ে দোলনায় চড়াও রাদ দিলেন না।

কিছুতেই তো ওকে সরানো যাচ্ছে না, কি করি? জোরে নিঃশ্বাস ফেলল কিশোর। সন্দেহজনক কাউকে চোখে পড়েছে তোমাদের?

নাহ্, মাথা নাড়ল রবিন। চলো তো, ওই ভাঁড়ের তাবুটাতে গিয়ে দেখে আসি।

তেমন কিছু দেখার নেই ওখানে। তবে ভাঁড়কে দেখতে দেখতে হঠাৎ সচকিত হয়ে উঠল কিশোর। সেটা লক্ষ করল রবিন। জিজ্ঞেস করল, কি হলো?

ভাল করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখো, রবিনের কানে কানে বলল কিশোর। নাক আর ঠোঁটের মাঝে এত গাঢ় করে লাল রঙ দিয়েছে কেন? দাগ ঢাকার জন্যে?

হতে পারে! লোকটার হাতের দিকে তাকাল রবিন। দস্তানা পরা। রগ ফোলা কিনা তা-ও বোঝা যাচ্ছে না।

লোকটার দিকে তাকিয়ে আছে কিশোর। ছবির লোকটার মতই ভাডের চোখ দুটোও তীক্ষ্ণ। চুলের রঙ বা ধরন বোঝা যাচ্ছে না, টুপির নিচে ঢাকা থাকায়। উচ্চতাটাও মিলে যায়। মাঝারি উচ্চতার লোক সে।

আমাদের সন্দেহের তালিকায় রাখতে হবে একে, রবিন বলল। এটাই শেষ? নাকি আরও দুতিনজনকে দেখবে?

দেখব। ভাঁড়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আরেকবার দাগটা খুঁজল কিশোর। রঙের জন্যে বোঝা যাচ্ছে না। রবিনের হাত ধরে টেনে নিয়ে এল পাশের চায়ের স্টলটায়।

চা খাবে? জিজ্ঞেস করল স্টলওয়ালা।

দিন, মাথা কাত করল কিশোর। তাকিয়ে রইল লোকটার মুখের দিকে। দাগ নেই। পাশের ভাড়ের তাবুটার দিকে হাত তুলে জিজ্ঞেস করল, ওর নাম কি জানেন?

পুরো নাম জানি না। ডাকনাম ডক, কিশোরের হাতে চায়ের কাপ ধরিয়ে দিল চা-ওয়ালা। ওকে আগে কখনও দেখিনি।

মেলায় মেলায়ই ঘোরে নিশ্চয়?

কি করে জানব? তবে মেলা ছাড়া ভাঁড়ের খেলা আর কোথায় দেখাবে? আরেকজন খদ্দের দেখে তার দিকে এগিয়ে গেল চা-ওয়ালা। ফিরে তাকিয়ে কিশোরকে বলল, ওকেই গিয়ে জিজ্ঞেস করো না।

কথাটা মন্দ বলেনি চা-ওয়ালা। কিন্তু এখন কথা বলার সময় নেই ওদের কারোরই। ব্যস্ত। আগামী দিন সকালে এসে ভাড়ের সঙ্গে কথা বলবে, ঠিক করল কিশোর। তখন হয়তো ভাড়ের পোশাকেও থাকবে না লোকটা, মুখে রঙ থাকবে না, কাটা দাগ থাকলে চোখে পড়বে।

চা খেতে ভাল লাগল না। দুজনেই ঢেলে ফেলে দিয়ে শূটিং রেঞ্জের দিকে চল।

চেয়ারে বসে টিকিট বিক্রি করছে এক বুড়ি। মাঝে মাঝে ঘাড় ফিরিয়ে তাকাচ্ছে শূটারদের দিকে। ওদের গুলি আর এয়ারগান সরবরাহ করছে একটা ছেলে। দুই গোয়েন্দা তাকিয়ে থাকতে থাকতেই ওর পাশে এসে দাঁড়াল যুবক বয়েসী একটা লোক। ছেলেটাকে সাহায্য করতে লাগল।

রবিনের গায়ে কনুইয়ের গুঁতো দিল কিশোর। ছবির সঙ্গে অনেক মিল লোকটার। তীক্ষ্ণ চোখ, মোটা ভুরু, ঘন চুল। তবে নাকের নিচে দাগ দেখা গেল না।

নিচু স্বরে কিশোর বলল, না, এ আমাদের লোক নয়।

মাথা ঝাঁকাল রবিন, দাগ নেই। হাতের রগও ফোলা নয়।

সরে আসার সময় চেয়ারে বসা বুড়ি টিকিট বাড়িয়ে ধরল ওদের দিকে, ফ্যাঁসফেঁসে শ্লেষ্মাজড়িত কণ্ঠে বলল, শূটিং করবে? দেখোনা ভাগ্য পরীক্ষা করে।

মাথা নেড়ে মানা করল কিশোর।

বুড়ির দিকে তাকিয়ে দুঃখ লাগল রবিনের। নিশ্চয় কমিশনে কাজ করছে। এতই অসহায় মনে হতে লাগল বুড়িটাকে, একবার মনে হলো শুধু ওর হাতে দুটো পয়সা তুলে দেয়ার জন্যেই একটা টিকেট কাটে। বয়েসের ভারে কুঁচকানো মুখের চামড়া, অসংখ্য ভাঁজ পড়েছে। গায়ে-মাথায় জড়ানো শালটাও যেন তারই মত পুরানো।

দোলনাগুলোর কাছে লালমুখো এক লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল ওরা। লাল গোঁফ, লাল দাড়ি। গলায় জড়ানো ময়লা নীল একটা মাফলার। মাথার নীল টুপিটা কপালের ওপর টেনে দেয়া। গায়ের কোটটা অতিরিক্ত টাইট। প্যান্টটাও খাটো। অন্য কারও পোশাক পরে এসেছে যেন। কেমন হাস্যকর লাগছে ওকে। লোকে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে।

থমকে দাঁড়াল কিশোর। ফিসফিস করে রবিনকে বলল, চিনতে পারছ?

মাথা নাড়ল রবিন।

নাহ, ভাল গোয়েন্দা কোনদিনই হতে পারবে না! ঝামেলাকে চিনতে পারছ না?

ফগ!

চুপ! আস্তে! মুসাদের ডেকে নিয়ে এসোগে।

একটা তাঁবুর পাশে দাঁড়িয়ে ফগের অলক্ষে তাকে দেখতে লাগল ওরা।

দোলনার সামনে দাঁড়িয়ে গভীর মনোযোগে কি যেন দেখছে ফগ। দুষ্টবুদ্ধি খেলে গেল মুসার মাথায়। ফগের কাছে গিয়ে দাঁড়াল। বিনয়ের সঙ্গে জিজ্ঞেস করল, কটা বাজে, স্যার?

ভুরু কুঁচকে মুসার দিকে তাকাল ফগ। ঘড়ি দেখল। চারটে। যাও, ভাগো! এমন জোরে ধমকে উঠল সে, চমকে গেল মুসা।

থ্যাংক ইউ, স্যার, বলে হাসতে হাসতে সরে এল অন্যদের কাছে।

মনে মনে সন্তুষ্ট হলো ফগ। ভাবল, বিচ্ছ ছেলেটা ওকে চিনতে পারেনি। তারমানে ওর ছদ্মবেশ সফল হয়েছে। মনের আনন্দে গোঁফে চাড়া দিতে গিয়ে মনে পড়ল, নকল গোঁফ, টান লাগলে খুলে যাবে। হাত সরিয়ে আনল তাড়াতাড়ি।

মুসার পর গেল জিনা। সঙ্গে রাফি। ফাঁকে দেখেই ঘাউ ঘাউ করে উঠল কুকরটা। চেন ধরে তাকে আটকাল জিনা। চুপ থাকতে বলল। মেলার মধ্যে গোলমাল করলে বের করে দেবে দারোয়ান।

আড়চোখে ওদের দিকে তাকাল ফগ। ঠেলে বেরোনো গোলআলুর মত গোল চোখে ভয় আর বিরক্তি। কিন্তু ছদ্মবেশ ফাস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কিছু বলতেও পারছে না।

Page 10 of 19
Prev1...91011...19Next
Previous Post

মঞ্চভীতি – রকিব হাসান

Next Post

নতুন দশ রহস্য – আর্থার কোনান ডয়েল

Next Post

নতুন দশ রহস্য - আর্থার কোনান ডয়েল

রক্ত সমীক্ষা - আর্থার কোনান ডয়েল

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In