হ্যাঁ, স্যার, রবিন মাথা ঝাঁকাল। তার ভয় ছিল, প্রফেসরকেই শুধু বিশ্বাস করব আমরা। তাই আমাদের অনুসরণই করেছে, সামনে এসে কিছু বলেনি। প্রফেসরের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা করেছে।
অযথা হয়রানীর শিকার হয়েছে বেচারা, কিশোর বলল। ইয়ান ফ্লেচার বলেছেন, ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে তাকে। সোসাইটি আবার তাকে চাকরিতে বহাল করেছে।
ভাল। খুব ভাল, খুশি হলেন পরিচালক। দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকালেন তিনি, ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন ইন্টারভিউর সময় শেষ। আর বেশিক্ষণ আটকাব না তোমাদের। কিশোর, একটা ব্যাপারে খটকা লাগছে। ডিনোকে দেখে চমকে উঠে হাত থেকে টর্চ পড়ে যাবে, এত দুর্বল স্নায়ু তো তোমার নয়। অভিনয় করেছিলে, না?
ঠিকই ধরেছেন, স্যার, হাসল কিশোর। চমকে যাওয়াটা ভান। গাড়ির হুডে ভর দিয়েছি ইঞ্জিন গরম না ঠাণ্ডা বোঝার জন্যে। টর্চ ফেলেছি তোলার সময় নিচটা দেখে নিতে।
ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হওয়াটা কোন ব্যাপার নয়, পরিচালক বললেন। বৃষ্টিতে খুব অল্প সময়েই ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে।
তা পারে, স্বীকার করল কিশোর। বলেছি প্রফেসরকে ভড়কে দেয়ার জন্যে। গাড়ির নিচে দেখার আগেই বুঝে ফেলেছি, মিথ্যে কথা বলছেন তিনি। উল্টোপাল্টা কথা বলে মস্ত ভুল করেছেন।
ভ্রূকুটি করলেন পরিচালক। কথাটা কি?
ডিনো তত আগুন লাগাল ছাউনিতে। এসে আমাদেরকে বলল, টিক বানাউকে দেখেছে। আর পরে প্রফেসর বললেন নোেবলকে ছুটে যেতে দেখেছেন। আসলে কাউকে দেখেননি তিনি। তর্ক শুরু করলেন ডিনোর সঙ্গে। এমন তর্ক জুড়ে দিলেন, মনে হল তিনি শিওর, টিক বানাউ হতেই পারে না…।
নিশ্চয় পারে না, প্রফেসর ভুলটা কোথায় করেছেন, বুঝে ফেললেন পরিচালক। প্রফেসর জানে, টিক বানাউকে ডিনো দেখতেই পারে না। কারণ প্রফেসর নিজেই টিক বানাউ। কিশোর, তোমাকে ফাঁকি দেয়া বড় কঠিন।
তখন বুঝতে পারিনি, স্যার। বুঝেছি পরে, বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রফেসরের সঙ্গে কথা বলছিলাম যখন। সে-সময়ও জোর করে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, নোবলকেই দেখেছেন।
সূক্ষ্ম এক চিলতে হাসি ফুটল পরিচালকের মুখে। তো, আমাদের রোমান্টিক নায়কের খবর কি? ডিনাম্যান হাংবার?
হাসল কিশোর। স্বীকার করেছে, মিসেস ডাইকে বিয়ে করতে চায়। ধনী হয়ে গেলে তাকে আর বিয়ে করতে চাইবেন না মহিলা, সে-ভয়েই আমাদের পিছে লেগেছে, ঠেকাতে চেয়েছে। গুপ্তধনের লোভ বিন্দুমাত্র ছিল না।
মহিলা নিশ্চয় খুব সুন্দরী। তার কি মত?
ঝিলিক দিয়ে উঠল মুসার ঝকঝকে সাদা দাঁত। ভেবে দেখবেন বলেছেন।