অ। আর উকিল রয় হ্যামার? তার কী লাভ ছিল?
চিঠির কপিটা কিনেছি তার কাছ থেকে, ব্যস, এ-ই।
হ্যারিসন?
ওকে স্রেফ ভয় দেখিয়ে খবর জোগাড় করতে চেয়েছিল রাইস, আর কিছু না। আমি কিছু টাকা দিয়ে দেব ভাবছি ওকে।
আচ্ছা, মিস্টার রামানাথ, জিজ্ঞেস করার জন্যে অনেকক্ষণ থেকেই উসখুস করছে মুসা, সেদিন বললেন জিকোকে মেরে ফেলেছেন, ও আবার জ্যান্ত হলো কী করে?
হাসল রামানাথ। মারিনি। তোমাদেরকে ভয় দেখানোর জন্যে ছুরিতে রঙ মাখিয়ে এনেছিলাম।
উফফ, সত্যি যা ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন না! রবিনও হাসল।
একটা কথা, হাত তুলল কিশোর। ওরা তো আর টাকা পেল না, রাইসের দলের কথা বলছি। যদি এখন পাথরটা ছিনিয়ে নিতে চায়। আপনার কাছ থেকে?
শীতল হাসি ফুটল রামানাথের ঠোঁটে, বুকের ভেতর কাঁপন তোলে সে ভয়ানক হাসি। খোকা, ভুলে যাচ্ছ কেন আমি ন্যায়-বিচারের মন্দিরের পুরোহিত? পাহাড়ি যোদ্ধার রক্ত বইছে আমার শরীরে। বড়াই করছি না, জানেনা, মানুষখেকো বাঘ পথ ছেড়ে দেয় আমাদের দেখলে? আমার কাছ থেকে রক্তচক্ষু ছিনিয়ে নেবে কয়েকটা ছিঁচকে চোর, এতই সহজ? মেঝেতে ছড়ি ঠুকল সে। তারপর উঠে দাঁড়াল। আচ্ছা, আজ তা হলে আসি। কিশোর, এসো না একবার কাটিরঙ্গায়, তোমরা সবাই? অনেক কিছু দেখার আছে।
যাব, নিশ্চয়ই যাব! হাসি ছড়িয়ে পড়েছে মুসার মুখে। ইনডিয়া দেখার শখ আমার অনেক দিনের।
সুযোগ করতে পারলে আমিও যাব, কিশোর বলল। স্বপ্নিল হয়ে উঠেছে তার চোখ। আমার নিজের দেশকে দেখব না! এই বিদেশ বিভুইয়ে পড়ে আছি বটে, কিন্তু দেশ তো আমার ওই উপমহাদেশেই-বাংলাদেশে!
যেয়ো। হ্যাঁ, ঠিকানা তো তোমার কাছে আছেই। শুধু একটা চিঠি লিখে দিয়ে আমার কাছে। ব্যস, আর কোন চিন্তা করতে হবে না, তোমাদেরকে। তোমাদের জন্যেই, দেবতাকে আবার ফিরে পেয়েছি। অনেক, অনেক ধন্যবাদ। চলি।
অরে, আরে, যাচ্ছেন কোথায়? বসুন, লাফিয়ে উঠল কিশোর। একেবারেই ভুলে গিয়েছিলাম! আমাদের বাড়িতে এসে খালিমুখে ফিরে যাবেন? সকালে চাচী শুনলে আমাকে আস্ত রাখবে? অন্তত এক কাপ চা তো খেয়ে যান।
হেসে আবার বসে পড়ল পুরোহিত। দাও। বুড়ো মানুষ তো, চা-ই বেশি খাই।