ব্রোজাস! রবিনের মুখে হাত রাখল দিমিত্রি। রবিন, তোমার তুলনা হয় না! বুঝতে পারছি, অলক্ষে থেকে সেদিন প্রিন্স পলই তোমাদের সঙ্গে দেখা করিয়ে দিয়েছিলেন আমার।
মরিডো, বলল কিশোর। মনে আছে, কি বলেছিল জিপসি আলবার্তো? বলেছিল, বিজয়ের ঘণ্টা শুনছি আমি! ঠিকই বলেছে! আরও একটা কথা বলেছে সে: রূপালী মাকড়সার সঙ্গে সাধারণ মাকড়সার তফাৎ নেই! কথাটা তখন রহস্যময় ঠেকেছিল আমার কাছে। কিন্তু ঘণ্টা বাজানর পর যখন প্রিন্স দিমিত্রির বিজয় হল, বুড়ো জাদুকরের কথা মনে পড়ে গেল আমার। তার রহস্যময় কথা আর রহস্য থাকল না। অনুমান করে ফেললাম, কোথায় আছে রূপালী মাকড়সা।
কিন্তু কি করে জানলা সে ভুরু কুঁচকে গেছে মুসার। জিনটিন বশ নেই তো তার
মোটেই না, বলল কিশোর। আসলে, মস্তবড় থট রীডার সে। ওই যে নীল ধোয়া, ওটা এক ধরনের কেমিক্যাল। ওটা শুকিয়েছে আমাদেরকে। তারপর সম্মোহন করেছে। তোমার অবচেতন মনে গাঁথা রয়েছে রূপালী মাকড়সার কথা, সেখান থেকে মুছে যায়নি। ঠিক ওখানে পাঠিয়ে দিয়েছিল বুড়ো আলবার্তো তার ব্রেনওয়েভ বা ওই জাতীয় কিছু। বের করে এনেছিল মনের যত কথা। খুব ভাল ভবিষ্যৎ-বক্তাও সে। আশ্চর্য ক্ষমতা,রোজারকে অপছন্দ করে সে, তাই বলেনি কোথায় আছে রূপালী মাকড়সা। দিমিত্রির দিকে চেয়ে হাসল। কাজেই, বুঝতেই পারছ, রূপালী মাকড়সাটার খোঁজ আসলে আলবার্তোই দিয়েছে…
দিয়েছে, কিন্তু আর কেউ তো সে কথার মানে বের করতে পারেনি, কিশোরের হাত থেকে রূপালী মাকড়সাটা নিল দিমিত্রি। রুমালে পেঁচিয়ে সাবধানে ব্রাখিল পকেটে। সে যাই হোক, তোমাদের ঋণ শোধ করতে পারব না আমি। আরেক পকেট থেকে তিনটে রূপালী মাকড়সা বের করল সে। তিনটাতেই রূপার চেন আটকানো। এক এক করে তিন গোয়েন্দার গলায় তিনটে মাকড়সা ঝুলিয়ে দিল সে।
হাত তালি দিয়ে উঠল মরিডো।
ভ্যারানিয়ার সবচেয়ে সম্মানিত পদক, হেসে বলল দিমিত্রি। অর্ডার অভ দ্য সিলভার স্পাইডার। তোমাদেরকে ভ্যারানিয়ার লাগরিকের সম্মান দিয়েছি আমি। এর চেয়ে বেশি সম্মান দেবার ক্ষমতা আমার নেই। তোমাদের কারও কোন ইচ্ছে থাকলে বল, পূরণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব আমি।
না না, আর বলতে গিয়ে বাধা পেয়ে থেমে গেল কিশোর।
আছে, কথার মাঝখানেই কথা বলে উঠেছে মুসা। আমার একটা। ইচ্ছে আছে। সামান্য কিছু খাবার হবে? বেশি না, এই ডজনখানেক স্যাণ্ডউইচ, একটা মুরগি, ডিম, কিছু আঙুর আর এক জগ দুধ হলেই চলবে আপাতত।
হো হো করে হেসে উঠল সবাই।