- বইয়ের নামঃ পৃথিবীর সেরা থ্রিলার গল্প
- লেখকের নামঃ অনীশ দাস অপু
- বিভাগসমূহঃ রোমাঞ্চকর গল্প
পৃথিবীর সেরা থ্রিলার গল্প
ভূমিকা
বইয়ের নামটি দিয়েছেন প্রকাশক। এর আগে তিনি পৃথিবীর সেরা রূপকথা নামে আমার একটি বই করেছিলেন। বইটি দারুণ চলেছিল। এখনো সমান। তালে চলছে। প্রকাশকের ইচ্ছা পৃথিবীর সেরা শিরোনামে আরও বেশ কিছু বই করবেন।
তবে আমি পাঠকদের নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি এ বইটিতে আমি দারুণ সব থ্রিলার গল্প দিয়েছি যা তাঁদের অবশ্যই ভালো লাগবে। থ্রিলারের আভিধানিক অর্থ রোমাঞ্চ। তো রোমাঞ্চিত হওয়ার মতো চমৎকার সব গল্প আছে বইটিতে। বলা বাহুল্য একেকটি একেক স্বাদের। আর থ্রিলার গল্পে। যেসব টুইস্ট থাকা দরকার তার কোনো কার্পণ্যই নেই। কোনো কোনো গল্পের শেষে এমন চমক আছে যা পড়ে পাঠক স্তম্ভিত হয়ে যাবেন।
বইটিতে জেফরি আর্চার, ফ্রেডরিক ফোরসাইথ, জেমস হেডলি চেজ, হেনরি স্লেসার এর মতো বিশ্বখ্যাত থ্রিলার লেখকদের দারুণ সব গল্প দেয়া হয়েছে। রয়েছেন এডগার অ্যালান পো, এমব্রোস বিয়ার্স বা রাডিয়ার্ড কীপলিং এর মতো ভিন্টেজ লেখকরাও।
কিছু অপরিচিত লেখকের গল্প আছে বইটিতে। তবে বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে তারা অচেনা হলেও বিদেশে রোমাঞ্চ গল্প লেখক হিসেবে যথেষ্টই সমাদৃত। আর আমি চেষ্টা করেছি এসব লেখকের সবচেয়ে চমকপ্রদ গল্পগুলো দিতে।
থ্রিলারের নানারকম প্রকারভেদ রয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার-থ্রিলার, হরর থ্রিলার, মিস্ট্রি-থ্রিলার, ফ্যান্টাসি-থ্রিলার ইত্যাদি। এ বইতে সবরকম থ্রিলার গল্পের সন্নিবেশ ঘটেছে।
জেফরি আর্চারের অ্যান আই ফর অ্যান আই মিস্ট্রি থ্রিলার, রাডিয়ার্ড কীপলিং এর গল্পটি পুরোপুরি অ্যাডভেঞ্চার থ্রিলার, আবার এমব্রোস বিয়ার্সের গল্পটিকে হরর থ্রিলারের কাতারে ফেলা যায়। বোভার ড্রাগন খুবই মজাদার ফ্যান্টাসি থ্রিলার। পাঠক এ গল্পটি পড়ে খুবই মজা পাবেন, সন্দেহ নেই।
পৃথিবীর সেরা থ্রিলার গল্পতে যে ১৬টি গল্প দেয়া হয়েছে সেগুলো বিভিন্ন বই থেকে অনুবাদ করা। তবে এখানে কিন্তু বাই কাইন্ডনেস, ওয়েটি প্রবলেম এবং ট্র্যাপ নামে যে তিনটি ভিন্টেজ থ্রিলার দিয়েছি তা বহু আগে লেখা। গল্পগুলো পুরানো-নতুন সব পাঠকের কাছেই চমৎকার লাগবে। তিনটে গল্পই আমার এত প্রিয় যে এ সংকলনে না দিয়ে পারলাম না।
আমাদের দেশে গত কয়েক বছর ধরে থ্রিলার পাঠকদের সংখ্যা বৃদ্ধি। পাচ্ছে। এটি শুভ লক্ষণ। জিনিয়াস এর কর্ণধার ইতিমধ্যেই আমার সঙ্গে কয়েকটি থ্রিলার বই প্রকাশের বিষয়ে চুক্তি করেছেন। বইমেলার পরে সেই বইগুলোতে হাত দেয়ার ইচ্ছে আছে। বিশ্বখ্যাত সব থ্রিলার লেখকের দুর্দান্ত সব থ্রিলার কাহিনি। আমার বিশ্বাস প্রতিটি বই-ই পাঠকদের মন জয় করতে সক্ষম হবে। অপেক্ষা করুন। আসছি আমি নিত্য নতুন থ্রিলার অনুবাদ নিয়ে!
অনীশ দাস অপু
অ্যান আই ফর অ্যান আই – জেফরি আর্চার
স্যার ম্যাথিউ রবার্টস কিউ সি (কুইনস কাউন্সেল বা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) ফাইলটি বন্ধ করে তার সামনের ডেস্কের ওপর রাখলেন। তিনি খুব অসন্তুষ্ট। মেরি ব্যাঙ্কসকে তিনি রক্ষা করতে চান তবে ভদ্রমহিলা যে নট গিল্টি বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করছে সেই ব্যাপারে খুব একটা ভরসা পাচ্ছেন না।
নরম চামড়ার গদিতে হেলান দিলেন স্যার ম্যাথিউ। মামলাটি নিয়ে ভাবছেন। অপেক্ষা করছেন সলিসিটরের জন্য। তিনি স্যার ম্যাথিউকে ব্রিফ করেছেন। তাঁর জুনিয়র কাউন্সেলও আসবে। তাকে এ কেসের জন্য নির্বাচন করেছেন ম্যাথিউ। মিডল টেম্পল কোর্ট ইয়ার্ডের দিকে তাকিয়ে তিনি ভাবছিলেন আশা করি সঠিক সিদ্ধান্তটিই নেয়া হয়েছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় রেজিনা বনাম ব্যাঙ্কসের এ মামলাটি মামুলি একটি মার্ডার কেস। তবে ব্রুস ব্যাঙ্কস তাদের এগারো বছরের বিবাহিত জীবনে যেভাবে তার স্ত্রীকে দমন করে রাখত, নির্যাতন চালাত, তাতে স্যার ম্যাথিউ নিশ্চিত তিনি এ হত্যা মামলার শাস্তি শুধু কমিয়ে আনতেই পারবেন না, জুরি বোর্ডের অধিকাংশ সদস্য যদি থাকেন নারী, তাহলে বিবাদীকে খালাস করে আনাও সম্ভব হতে পারে। তবে এখানে একটি জটিলতা রয়েছে।
তিনি একটি সিগারেট ধরিয়ে জোরে টান দিলেন, যদিও ধূমপান তাঁর স্ত্রী মোটেই পছন্দ করতেন না। এ জন্য বকাও দিতেন। স্যার ম্যাথিউ ডেস্কে, তাঁর সামনে রাখা ভিক্টোরিয়ার ছবিটির দিকে তাকালেন। ছবিটি তাকে তার যৌবনকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে ভিক্টোরিয়া সবসময় তরুণীই থাকবেন মৃত্যু তাঁর জন্য ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে।
অনিচ্ছাসত্ত্বেও তিনি মনোযোগ ফেরালেন তার ক্লায়েন্ট এবং মিটিগেশনের জন্য তার আবেদনের প্রতি। তিনি ফাইলটি আবার খুললেন। মেরি ব্যাঙ্কসের দাবি সে তার স্বামীকে কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে শূকরের খোঁয়াড়ের নিচে কবর দেয়নি। কারণ স্বামীর মৃত্যুর সময় সে স্থানীয় হাসপাতালে রোগী হিসেবেই শুধু ছিল না, তখন সে চোখেও দেখত না। স্যার ম্যাথিউ আবারও বুক ভরে ধোঁয়া টানলেন। এমন সময় দরজায় কেউ নক করল।
ভেতরে আসুন, তিনি গাঁক গাঁক করে উঠলেন– শুধু এ কারণে নয় যে নিজের কণ্ঠটি তার পছন্দ, আসলে হুঙ্কার না ছাড়লে ভীষণ পুরু দরজার ওপাশে তাঁর গলা শোনা যাবে না।