রায়সাহেব হান্টারটা সোঁ করে ঘুরিয়ে মেঝের ওপর আছড়ে মারলেন। তুমি সাত্ত্বিক—তুমি সন্ন্যাসী! তুমি জোচ্চোর, ধাপ্পাবাজ, লম্পট—। আমি তোমায় পুলিসে দেব।
আমি হাত জোড় করে বললুম, আপনি বৃথা উত্তেজিত হচ্ছেন।
তোমায় আমার খুন করতে ইচ্ছা করছে।
আমি কিন্তু নির্দোষ। আমার কোনো অপরাধ নেই।
তুমি নলিনীর ঘরে কেমন করে গেলে?
আজ্ঞে আমি জানি না।
জানো না? বদমাশ?
সত্যিই জানি না। বোধ হয় ঘুমের ঘোরে চলে গিয়েছি। আপনি তো জানেন আমার স্লিপ ওয়াকিং রোগ আছে। ঘুমের ঘোরে কি করি জানি না।
রায়সাহেব হান্টার তুলে আছড়াতে গিয়েও থেমে গেলেন। রায়গিন্নি বললেন, ঝি-চাকর—সবাই তো দেখল জানল। তোমার কি রোগ আছে বাছা আমি জানি না। কিন্তু এ-কথা যদি বাইরে রটে তবে যে কেলেঙ্কারি হবে। লজ্জায় আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে। কাল মধুপুর থেকে তার বন্ধুর আসার কথা।
রায়সাহেব কী ভেবে আমায় আদেশ দিলেন, এখন নীচে যাও। পরে আমি যা করার করব।
আমি নীচে নেমে আসার সময় দেখি নলিনী পাশের ঘরে কাঁদছে।
ঘণ্টাখানেক পরে রায়সাহেবের কাছ থেকে স্লিপ এল। পঙিক্ষ নিয়ে এসে দিল আমায়। রায়সাহেব নিজে আর রাগে লজ্জায় ক্ষোভে নীচে আসেননি। স্লিপে ছিল, তুমি আমার মানমর্যাদা সম্মান ডুবিয়েছ। নলিনীকে তোমায় বিয়ে করতে হবে। সন্ন্যাসীগিরি চলবে না। বিয়ে না করলে পুলিশে দেব।”
বটকৃষ্ণ তাঁর গল্প শেষ করে হা হা করে হাসতে লাগলেন। বললেন “শ্বশুরমশাই পরে অবশ্য বুঝেছিলেন—তিনি একটি রত্ন পেয়েছেন। আমিও অবশ্য বড় রত্ন পেয়েছি, ভাই,” বলে বটকৃষ্ণ চোখের ইশারায় নলিনীকে দেখালেন।