ভবনের নীচতলার দিকে তাকালো মুশকান। সম্প্রতি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এখানে একটি লাইব্রেরি করা হয়েছে-আর এর পুরো কৃতিত্ব তার। যদিও বিষয়টা দুয়েকজন ছাড়া বাইরের মানুষজন জানে না। এই লাইব্রেরি করার কারণে কপ্লেক্সে তার কিছুটা প্রভাবও তৈরি হয়েছে। রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের একজন শুভাকাঙ্খি হিসেবে তাকে এখানকার কর্মচারীরা বেশ সমীহ করে। ওরা জানে, এই মহিলা কবির জ্ঞাতিগুষ্টি হয়।
“নমস্কার, সুস্মিতাদি,” এক হ্যাংলা-পাতলা গড়নের মাঝবয়েসী লোক তাদের পাশ দিয়ে যাবার সময় হাসিমুখে বললো।
অবাক হয়ে তাকালো সুস্মিতা। এই লোক তার নাম জানে?! কিন্তু পরক্ষণেই তার ভুলটা ভাঙলো। দু-হাত জড়ো করে নমস্কারের জবাব নিলো মুশকান। লোকটা চলে যেতেই বিস্ময়ে তাকালো সে।
“সুস্মিতা!? তুমি?!”
মুচকি হাসলো মুশকান। “ওরা আমাকে এ নামেই চেনে এখানে।”
কথাটা শুনে মেয়েটার মুখ হা হয়ে গেলো।
মুশকান কিছু বললো না।
সুস্মিতা মুখ টিপে হেসে আবারো প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইলো। আবারো গান ধরলো সে :
“পাগলিনী, তোর লাগি কী আমি করিব বল্।
কোথায় রাখিব তোরে খুঁজে না পাই ভূমণ্ডল…”
এবার আর পারলো না। বড্ড বেশি ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করছে মেয়েটি। তাই গানের মাঝখানেই বলে উঠলো সে, “জানো, একদিক থেকে সুন্দরপুরের সাথে এ জায়গাটার অদ্ভুত মিল রয়েছে।”
“সেটা কি রকম?” গান থামিয়ে অবাক হয়ে জানতে চাইলো সুস্মিতা।
ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো মুশকান, কিন্তু সত্যিটাই বললো সে, “রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি!”
***