এটা কীসের মাংস? সার্জনের! ভাবনাটা আসতেই তার গা শিউরে ওঠে। নাকি অন্য কিছু?! তড়িঘড়ি বয়ামটার মুখ লাগিয়ে জায়গামতো রেখে দেয় সে। যদিও তার লোভ জেগেছিলো আরেকটু চেখে দেখার, কিন্তু নিজেকে বিরত রাখে বহু কষ্টে, নইলে মুশকান টের পেয়ে যাবে।
এক বিকেলে অটো থেকে নেমে বাসায় ঢোকার সময় সুস্মিতাকে তার। নাম ধরে কেউ ডেকে ওঠে। অবাক হয়ে দেখে, তার শান্তিনিকেতনের এক বন্ধুর বন্ধু সুকুমার রঞ্জনকে। বেশ কবছর আগে তাদের বন্ধুদের সার্কেলটি যখন দলবেধে দার্জিলিং বেড়াতে গিয়েছিলো তখন এই ছেলেটার সাথে পরিচয় হয়। সুকুমার জানায়, সে কয়েক দিন আগে কলকাতার এক ডেটা অ্যানালিসিস ফার্মে জয়েন করেছে। কী একটা কাজে এসেছিলো সল্টলেকে। সৌজন্যতার খাতিরে সুস্মিতা তাকে সমাদ্দার ভিলায় নিয়ে এসে কফি দিয়ে আপ্যায়ন করে। এই ঘটনার পর ছুটির দিনে প্রায়ই সুকুমার আসতে শুরু করে তাদের বাড়িতে। সুস্মিতার সাথে তার বন্ধুত্বটাও গাঢ় হতে শুরু করে।
এমনই এক রবিবার সন্ধ্যায় সুকুমার আসে সমাদ্দার ভিলায়। সুস্মিতার যে ভালো হুইস্কির প্রতি আসক্তি ছিলো সুকুমার সেটা জানতো, তাই সঙ্গে করে প্রিয় ব্র্যান্ডের হুইস্কি নিয়ে এসেছিলো সে। ঐ দিন কী একটা কাজে বাড়ির বাইরে গেছিলো মুশকান। বাড়িতে দারোয়ান ছাড়া আর কেউ ছিলো না। দোতলার বিশাল ড্রইংরুমে বসে সুস্মিতা আর সুকুমার হুইস্কি পান করতে শুরু করে। মদ্যপানের এক পর্যায়ে সুকুমার আবেগাক্রান্ত হয়ে জানায়, সুস্মিতার প্রেমে পড়ে গেছে সে।
সুকুমার রঞ্জন দেখতে স্মার্ট আর শিক্ষিত একটি ছেলে, যথেষ্ট ভালো চাকরি করে-সুস্মিতাও বেশ পছন্দ করে তাকে, কিন্তু তারপরও সুকুমারকে ফিরিয়ে দেয় সে। ছোটোবেলা থেকেই টমবয়, ছেলেদের সাথে পাল্লা দিয়ে সাইকেল-বাইক চালাতো। মাউন্টেনিং করা, মার্শাল আর্ট শেখা, খেলাধূলা, সবই করেছে। তার ছেলেবন্ধুদের কেউ যে তার দিকে অন্যদৃষ্টিতে তাকায়নি তা নয়, তবে সুস্মিতা এ ধরণের ব্যাপারগুলো পাত্তাই দিতো না কখনও।
প্রত্যাখ্যাত হয়ে সুকুমার হতাশ হয়ে জানতে চায়, সে কোনদিক থেকে তার অযোগ্য?-অনেক চাপাচাপির পর সুস্মিতা অবশেষে নিজের সেই গোপন কথাটা জানায়, যা আর কাউকে এর আগে কখনও বলেনি।
আমি সম্ভবত লেসবিয়ান!
কথাটা শুনে হতভম্ব হয়ে পড়ে সুকুমার।
পনেরো-ষোলো বছর বয়স থেকেই সুস্মিতা টের পেয়েছিলো, ছেলেদের প্রতি উঠতি বয়সী মেয়েদের যে স্বাভাবিক আকর্ষণ থাকে সেটা তার মধ্যে নেই। কিন্তু সময় গড়ালে বুঝতে শুরু করে, কিছু কিছু মেয়ের প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করছে! তবে নিজের সেক্সয়াল অরিয়েন্টেশন নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিতও ছিলো না।
এ কথা শুনে কিছুক্ষণ ভেবে নেয় সুকুমার। “তুমি তাহলে পুরোপুরি শিওর নও?”
এমন প্রশ্নে দ্বিধায় পড়ে গেলেও মাথা নেড়ে সায় দেয় সুস্মিতা, আর তখনই সুকুমার অদ্ভুত একটি প্রস্তাব দেয় তাকে : তার সাথে কিছুক্ষণ ফোরপ্লে করবে, সুস্মিতা যদি জেগে না ওঠে তাহলে ধরে নেবে সে আসলেই লেসবিয়ান। আর জেগে উঠলে বুঝবে, ওটা আসলে দীর্ঘদিন টমবয়গিরি করার ফলে সৃষ্ট এক ধরণের আচরণগত সমস্যা-সমকামীতা নয় মোটেও।
সুস্মিতা ধন্দে পড়ে যায়, হুইস্কির প্রভাবে তখন কিছুটা বেসামালও, তার এই সিদ্ধান্তহীনতার সুযোগ নিয়ে তাকে আদর করতে শুরু করে। সুকুমার, ধীরে ধীরে খুলে ফেলে শরীর থেকে সব পোশাক। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই সুস্মিতা বুঝতে পারে, সুকুমারের এমন স্পর্শেও তার শরীর সাড়া দিচ্ছে না। কেমন গা ঘিনঘিন করা অনুভূতি তৈরি হচ্ছে বরং! সঙ্গে সঙ্গে বাধা দিয়ে বসে সে।
“না, সুকুমার…না! থামো!”
আকুতিভরা কণ্ঠে বলেছিলো সে, কিন্তু মাঝপথে এভাবে বাধা পেয়ে ক্ষেপে যায় সুকুমার, জোরাজুরি করতে শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে সুস্মিতা চিৎকার দিতে চাইলে তার মুখ চেপে ধরে। একটু আগের বন্ধু মুহূর্তে ধর্ষকে পরিণত হয়। কিন্তু সুস্মিতার চিৎকার নীচের গেটের কাছে থাকা দারোয়ানের কানে পৌঁছায় না।
ড্রইংরুমে বন্ধুবান্ধব নিয়ে মাঝেমধ্যেই গানবাজনা করতো সুস্মিতা, আশেপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের কাছে এটা উৎপাত মনে হতে পারে বলে ওর এক মিউজিশিয়ান বন্ধু ঘরটা পুরোপুরি সাউন্ডপ্রুফ করে দিয়েছিলো কিছু দিন আগে। সুতরাং, সে বুঝতে পারে, তার চিৎকার কিংবা ধস্তাধস্তির আওয়াজ নীচে যাচ্ছে না, দারোয়ানের কানে সেটা পৌঁছাবেও না, তখন প্রবলভাবে বাধা দেবার চেষ্টা করে, কিন্তু শক্তিতে পেরে ওঠে না। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই মার্শাল আর্টের দক্ষতা প্রয়োগ করে সুকুমারের কুঁচকিতে হাটু দিয়ে আঘাত করে বসে। তীব্র ব্যথায় ঝাঁকিয়ে ওঠে ছেলেটা, রেগেমেগে সুস্মিতার গালে চড়থাপ্পড় মারতে শুরু করে দেয়, সেই সঙ্গে উগলে দেয় জঘন্য সব খিস্তি। পাশবিক শক্তি নিয়ে আবারো ঝাঁপিয়ে পড়ে সে।
অনেক চেষ্টা করেও সুকুমারকে পরাস্ত করতে পারেনি সুস্মিতা, তীব্র ভীতিতে আক্রান্ত হয় সে। শৈশব থেকে যে আতঙ্ক নিয়ে প্রতিটি মেয়ে বেড়ে ওঠে, সেই ধর্ষণ যখন অনিবার্য, তখনই দেখতে পায়, হাতের কাছে হুইস্কির বোতলটা পড়ে আছে। সুকুমার তখন এক হাত দিয়ে তার মুখটা চেপে ধরে রেখেছে, অন্য হাত দিয়ে নিজের উদ্যত অঙ্গটি প্রবেশ করাতে ব্যস্ত। আর কোনো উপায় না পেয়ে, হুইস্কির বোতলটা হাতে তুলে নেয়, সুকুমারের মাথার পেছনে সজোরে আঘাত করে বসে। পর পর বেশ কয়েকটি। কতোগুলো, সে নিজেও জানে না!