ফুটলো হাসি
হাঁটতে গিয়ে আমরা ক’জন
বিকেল বেলা
দিঘির পথে দেখি হঠাৎ
পাখির মেলা।
হলদে, কালো, লালচে, সাদা
হরেক পাখি।
আমরা ওদের আদর করে,
কাছে ডাকি।
মনে হলো, হঠাৎ ওরা
মাতলো নাচে।
ছড়ার ঢঙে দুলে দুলে
আসছে কাছে।
খুশিতে মন উঠলো বেজে,
যেন বাঁশি।
সবার মুখে ফুলের মতো
ফুটলো হাসি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা
পশ্চিমা যত লুটেরা সবাই
বাংলাদেশের সোনা রূপা সব
লুট করে নিয়ে গেছে বার বার
বাঙালির ভাই সেজে রাত-দিন
কাঁধে কাঁধ রোজ মিলিয়ে আখেরে
ভরা ভাণ্ডার করেছে উজাড়।
হায়! বেশ কিছু বাজে, মতলবি
বাঙালি ওদের খুশি করবার
জন্য দেশের ক্ষতিতে নামলো।
পাকিস্তানীরা যা-ই বলে ওরা
তাই করে ঠোঁট হাসিতে সাজিয়ে।
অবশ্য পরে সে কাজ থামলো।
শেষে হারমাদ পশ্চিমা সব
শক্ররা সব মানলো, বিজয়ী
মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের কাছে
কিন্তু এখনো স্বাধীনতাময় জ্বল জ্বলে পথে
সবকিছু ঠিক নয় মসৃণ
আজো পথে কিছু কালো কাঁটা আছে।
বোবা ওঝা
আমায় দেখে হঠাৎ বলো
হাসছো কেন কেমন করে?
মাথায় আমার শিং ফুটেছে?
চোখ দুটো কি তৈরি খড়ে?
সত্যি করে বলো শুনি-
গজালো কি লেজুড় কোনও?
মুখ কি আমার প্যাঁচার মতো-
বলতে হবে, বন্ধু শোনো।
এই যে আমি বলছি কথা,
সে কথা কি যাচ্ছে বোঝা?
না কি শুধুই কিচির মিচির
করছে শুধু বোবা ওঝা।
মেঘনা নদীর তীরে
মেঘনা নদীর তীরে যদি
একটুখানি যাও,
তখন তুমি দেখতে পাবে
নানা রূপের নাও।
ঢেউয়ের মাথায় ডিঙি চলে
নাচের তালে তালে,
মেশিন-অলা নৌকা যেন
ওড়ে নদীর গালে।
মেঘনা নদীর তীরে আছে
পাড়াতলী গাঁও,
তোমায় নেবে বুকে টেনে
দেখতে যদি চাও।
দেখবে তুমি সর্ষে ক্ষেতে
প্রজাপতির মেলা;
সূর্য ডোবার পরেই চলে
জোনাক পোকার খেলা।
ময়নামতীর ঘাটে
সানাই বাজে মধুর সুরে
তেপান্তরের মাঠে,
কঙ্কাবতী সাঁতার কাটে
ময়নামতীর ঘাটে।
সাঁঝের বেলা দেখেন কবি
জলের পরী একা-
তাকে নিয়ে রাতের বেলা
পদ্য যাবে লেখা।
খানিক পরেই হঠাৎ পরী
হয়ে গেলো হাওয়া;
ভাবেন কবি, কোথায় গেলে
তাকে যাবে পাওয়া?
এক নিমেষে সূয্যি মামা
গেলেন চলে পাটে;
একলা বসে থাকেন কবি
ময়নামতীর ঘাটে।
সূর্যি মামা গেল এখন
সূর্যি মামা গেল এখন কদ্দূর?
কতটা আর ঢালবে সোনা-রোদ্দুর?
আকাশ জুড়ে সূর্যি মামা থাকে,
যায় সে বটে যেতে পারে যদ্দূর।
কালো মেঘে ঢাকা পড়ে সূর্য,
দেয় না দেখা বাজালেও তূর্য।
যখন আবার দেয় সে উঁকি আস্তে,
আকাশে ফের আলো থাকে ভাস্তে।
খোকা খুকি বেরিয়ে আসে বাইরে,
এসো সবাই রোদেলা গীত গাইরে।
আমরা যাবো পরীর দেশে বেড়াতে,
পরীর গায়ে সাজাবো ফুল সে-রাতে।
এই ভ্রমণে কারা হবে সঙ্গী?
যাদের আছে প্রাণ-জুড়ানো ভঙ্গি।
সেই পাখিটা
যখন আমি আমার ঘরে
একলা বসে থাকি,
হঠাৎ ঘরে এসে পড়ে
রাঙা ঠোঁটের পাখি।
সেই পাখিটা সারা ঘরে
ছড়ায় নানা আলো,
বিশেষ ক’রে টেবিলটিকে
দেখায় আরও ভালো।
পাখিটা সুর ঢালে আমার
লেখার কলম জুড়ে-
কলম হেসে গেয়ে ওঠে
প্রাণ-জুড়ানো সুরে।
পাখিটা ফের চলে গেলে
যায় যে কলম থেমে;
লিখতে গিয়ে পারি না আর,
শুধুই উঠি ঘেমে।
লেখার পাখি না এলে মন
আঁধার ক’রে থাকি,
খেয়ালী সেই পাখিটিকে
বুকটা চিরে ডাকি!
যখন পাখি ফিরে আসে
দুলিয়ে তার পাখা,
লেখার খাতা নেচে ওঠে,
সফল হয় ডাকা।
হীরার পাখির গান
একলা বঁসে ছোট্র ঘরে
শব্দ দিয়ে মালা গাঁথি।
সেই মালারই ঘ্রাণে পরী
হয় যে এসে আমার সাথী।
যখন আমি সতেজ ভোরে
ঘুরে বেড়াই ফুল-বাগানে,
ভ্রমর এসে গান গেয়ে যায়
মধুর সুরে আমার কানে।
আচ্ছা যদি হাওয়ায় ভেসে
হীরার পাখি এসে পড়ে,
তার জন্য ঘর বানাবো
সোনা দিয়ে আমার ঘরে।
সেই পাখিটা গান শোনাবে
ভোরে কিংবা সন্ধ্যা বাতে।
আমরা সবাই সুর মেলাবো
হীরার পাখির গানের সাথে।