কিচেনে ঢুকেছিল ও। পানি খাওয়ার জন্য গেলাস ধরেছিল সিঙ্কের ট্যাপের নিচে। ভালব ঘোরাতেই ফোঁস করে রাগী শ্বাস ফেলল যেন কলটা।
একটা মুহূর্ত। তারপর ওকে চমকে দিয়ে পানির বদলে রক্ত পড়তে লাগল গেলাসে!
ছিটকে সরে এসেছিল ও বেসিন থেকে। হাত থেকে পড়ে শত টুকরো হলো গেলাস।
খনখনে হাসির শব্দে দ্বিতীয়বার চমকে ওঠে ও। গেলাস ভাঙার শব্দে ছুটে এসেছে তামারা। মেঝেতে লাল পানি দেখে এক সেকেণ্ডে বুঝে নিয়েছে ব্যাপারখানা। হাসি থামাতে পারছে না সেজন্য।
পানি পড়ছে কল থেকে। সাধারণ পানি। লামিয়ার কাছে পরিষ্কার হলো বিষয়টা। রিজার্ভ ট্যাঙ্ক থেকে তোলা হয়েছে পানি। কল ছাড়তেই লালচে তলানি চলে এসেছে পানির সঙ্গে। আর ও ভেবেছে রক্ত।
পুরানো কথা মনে পড়ায় হাসল লামিয়া। বাষ্পে আচ্ছন্ন হয়ে গেছে বাথরুমের ভিতরটা। চোখ বুজল ও। আবেশে তন্দ্রা এসে গেল চোখে।
.
ঘুমটা ভেঙে গেল লামিয়ার। কিন্তু খুলতে ইচ্ছে করছে না চোখ দুটো এত ক্লান্তি! যেন কেউ আঠা লাগিয়ে দিয়েছে চোখের পাতায়।
শীত লাগছে। গাঢ় আচ্ছন্নতার মাঝে চেতনার মৃদু আলো জ্বলছে টিমটিম করে। বুঝতে পারল, জ্বর এসেছে। এজন্যই গা-টা ম্যাজম্যাজ করছিল সকালে।
কত হলো রাত?
শব্দ হলো না একটা? নাকি ভুল শুনেছে জ্বরের ঘোরে?
অল্প একটু ফাঁক করল চোখ দুটো।
কামরার দরজা খুলছে কেউ। সন্তর্পণে।
সামান্য আলো ছড়িয়ে পড়ল ঘরে।
দরজাটার বাইরে ঝুলছে ড্রিমক্যাচার। তার নিচে দাঁড়ানো কালো অবয়বটা অতি পরিচিত লামিয়ার।
তামারা।
এগিয়ে এল খাটের কাছে।
চোখ বুজে স্থির রইল লামিয়া।
ঝুঁকে ওর মুখটা জরিপ করার চেষ্টা করল মেয়েটা।
ঠাণ্ডা শ্বাস মুখের উপরে। শিউরে উঠল লামিয়া।
.
জ্বর নেই গায়ে।
বাসি মুখে বোটকা গন্ধ।
টুথব্রাশে পেস্ট লাগাল লামিয়া। ভেজাল পানি দিয়ে। ঠোঁট ফাঁক করতেই বেরিয়ে পড়ল লালচে দাঁত, চোখা গজদন্ত।
বেচারি তামারা!
সামলাতে পারলেই হয় চার পাইন্ট রক্তের ঘাটতি!
(শেষ)