তাদের গায়ে হেলান দিয়ে মিশকা বসেছিল, সেও তাদের হাসিতে যোগ দিল সে কী বুঝেছে কে জানে!
.
শেষ কথা
লিডিয়াকে জীবন্ত এরেস্ট করা যায়নি। কীভাবে কীভাবে জানি সে তার হাতের বাঁধন খুলে তার ডেস্কের ড্রয়ার খুলে একটা রিভলবার বের করে নিজের মাথায় গুলি করেছে। ক্র্যাগনন সুপার কম্পিউটারের ভবিষ্যত্বাণী সঠিক ছিল, যে মানুষটি লিডিয়ার মাথায় গুলি করেছে তার পরিচয়টি জানা ছিল না, শেষ পর্যন্ত দেখা গেল মানুষটি সে নিজে।
এনিম্যান তৈরী বন্ধ হয়ে গেল। যে এনিম্যান শিশুগুলি পাওয়া গিয়েছিল তাদেরকে বিভিন্ন পরিবারের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া হয়েছিল। সবাই তাদেরকে আদর যত্ন করে রেখেছে। এরা আসলে মানব শিশু, তাই চেষ্টা করা হয়েছে মানব শিশু হিসেবে বড় করার।
এনিম্যান নিয়ে যেরকম আলোড়ন হওয়ার কথা ছিল সেরকম আলোড়ন হল না, পুরো বিষয়টি কেমন যেন চাপা দিয়ে দেওয়া হল। কারা এটি করেছে কীভাবে করেছে পুরো বিষয়টিই সাধারণ মানুষের কাছে অজ্ঞাত থেকে গেল। সঠিকভাবে জানাজানি হলে এশিয়া আফ্রিকার অসংখ্য দরিদ্র মহিলাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হতো, সম্ভব সে জন্যেই বিষয়টা নিয়ে কোনো হই চই হল না। উইলিয়াম ম্যাকেঞ্জী হই চই হতে দেয়নি। সরকারের উচ্চ মহলে তার অনেক বন্ধু।
মিশকা এর পর আট বছর বেঁচেছিল। এই আট বছরে মিশকা একটু একটু লিখতে পড়তে শিখেছিল। আম্মুর রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে সে খুব পছন্দ করত। তিষার হেভি মেটাল একেবারে সহ্য করতে পারত না।
মিশকা মৃত্যুর ঠিক আগে আগে খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিল। একরাতে তিষা মিশকাকে কোলে নিয়ে বাসার ছাদে বসে আছে। মিশকা দুর্বল হাতে সাইন ল্যাংগুয়েজে তিষাকে জিজ্ঞেস করল, “কেউ যখন মারা যায় তখন কী হয়?”
তিষা বলল, “তখন সে আকাশের তারা হয়ে যায়।
“আমি যখন মারা যাব আমিও কি আকাশের একটা তারা হব?”
“হ্যাঁ সোনা। তুমিও নিশ্চয়ই একটা তারা হবে।”
“আমি কোথায় তারা হব তিষা?”
“সেটা তুমি ঠিক কর।”
মিশকা খুব মনোযোগ দিয়ে আকাশের নক্ষত্রগুলো পরীক্ষা করে কালপুরুষকে দেখিয়ে বলল, “আমি ওখানে একটা তারা হতে চাই।”
“ঠিক আছে মিশকা।”
এর দুদিন পর তিষা ঘুম থেকে উঠে দেখে মিশকা তার ছোট বিছানায় গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে। হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখে তার শরীর শীতল, জীবনের স্পন্দন নেই।
রাত্রি বেলা যখন সবাই ঘুমিয়ে গেছে তখন বাসায় ছাদে উঠে তিষা কালপুরুষের কাছে তাকিয়ে থাকল। অনেক তারা জ্বল জ্বল করছে, তার মাঝে একটা নিশ্চয়ই মিশকা। তিষা ফিস ফিস করে বলল, “ভালো থেকো মিশকা।”